ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাচ্চারা পরীক্ষা দেবে কিনা তা নিয়েও মামলা ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৭:৩২, ২২ নভেম্বর ২০১৭

বাচ্চারা পরীক্ষা দেবে কিনা তা নিয়েও মামলা ॥ প্রধানমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা বলেছেন, লাখ লাখ মামলা পড়ে আছে, আদালতে তার কোন খবর নাই। আর বাচ্চারা পরীক্ষা দেবে কি দেবে না সেটা নিয়েও মামলা করে বসে থাকে। সেটা নিয়েও রিট। সেটা নিয়ে কোর্ট সময় কাটায়। অথচ অনেক জরুরী মামলা আছে, এতোগুলো সন্ত্রাসী গ্রেফতার হয়েছে, জেএমবি গ্রেফতার হয়েছে, অনেক ফাঁসির শুনানি বাকি- সেগুলোর ব্যাপারে সময় নেই। এই সমস্ত খুচরা জিনিস নিয়ে সময় কাটায় কেন? আমি জানি না কোর্ট কি রায় দেবে। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার যদি রায় দেয় এর থেকে দুঃখের আর কিছু থাকবে না। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার রাতে সংসদ অধিবেশনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের পয়েন্ট অব অর্ডারে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তার জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও বক্তব্য রাখেন। উল্লেখ্য, পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষার বৈধতা নিয়ে আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ হাইকোর্টে রিট করলে গত বছরের ৩১ আগস্ট আদালত এই পরীক্ষা পদ্ধতিকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- এই মর্মে রুলনিশি জারি করে। এ রিটের কথা উল্লেখ করেই জাতীয় পার্টির কাজ ফিরোজ রশীদ বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ছেলে-মেয়েদের কল্যাণের জন্য এটা করছি। আমরা উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিচ্ছি। হয়তো দেখা যাবে কোন একদিন কেউ রিট করে বসে থাকবে যে, কেন আমরা শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছি। এ ব্যাপারে কোন কিছুই বলা যায় না। বাংলাদেশে কিছু লোক যেন আছেনই অনবরত রিট করা আর এটার ওপরে আলোচনা করা। এই ব্যাখা বহুবার দিয়েছি। তারপরেও যখন প্রশ্ন তুললেন কেন পরীক্ষা হবে আমি অবাক হয়ে গেলাম। প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, আমি প্রশ্নকর্তাকে জিজ্ঞাস করি- ছেলেমেয়েরা কি মনোযোগী হচ্ছে না? কোচিং আলাদা জিনিস। যখন কয়েকটা ছেলেমেয়ে বেছে নিয়ে পড়ানো হয়, সেটাও এক ধরনের কোচিং। শিক্ষকরা আলাদা করে পড়াচ্ছেন সেটা কি কোচিং না? আমি জানি না আদালত কি রায় দেবে। পড়াশোনা বন্ধ করার যদি রায় দেয় এর থেকে দুঃখের আর কিছু থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা পদ্ধতি আমিই চালু করেছি। দায় যদি কিছু হয় সেটা আমার। এতে সমস্যাটা কী হয়েছে? আগে ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য হাতেগোনা কয়েকটি ছেলেমেয়েকে বাছাই করে তাদের আলাদাভাবে শিক্ষকরা পড়াত। শিক্ষকরাই ঠিক করে দিত কোন ছেলেমেয়ে বৃত্তি পরীক্ষা দেবে। অন্য শিক্ষার্থীদের দিকে শিক্ষকরা নজর দেয় না। যাদের বাদ দেয়া হলো তাদের মধ্যে কী কেউ মেধাবী নেই? কেন তারা বঞ্চিত হবে? তিনি বলেন, এসব দিক বিবেচনা করেই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম হাতেগোনা কয়েকজন নয়, ৫ম ও ৮ম শ্রেণীতে সবাই পরীক্ষা দেবে। মেধাবী ও গরিব ছাত্রছাত্রীরা বৃত্তি পাবে। পরীক্ষা শেষে তারা একটি সার্টিফিকেট পাবে, এতে এসব ছাত্রছাত্রীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তিনি বলেন, আগে ছাত্রছাত্রীদের এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সময় তাদের ভয়-ভীতি থাকত। কিন্তু এই পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা ব্যবস্থা থাকায় এবং এ দুটি পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট পাওয়া আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠা শিক্ষার্থীদের আর এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার সময় তাদের মধ্যে ভয়-ভীতি থাকে না। এতে করে পরীক্ষার ফলাফল প্রতিবছরই ভাল হচ্ছে আর শিক্ষার্থীদের স্কুলে ধরে রাখারও আমাদের উদ্দেশে।
×