ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্স উদ্বোধনকালে শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করুন

রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করে তাদেরকে ফিরিয়ে নিতে হবে ॥ মিয়ানমারকে চাপ দিন

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৬ নভেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করে তাদেরকে ফিরিয়ে নিতে হবে ॥ মিয়ানমারকে চাপ দিন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করে তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাময়িকভাবে আমরা এই বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছি। আপনাদের প্রতি অনুরোধ, রোহিঙ্গা ইস্যুটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করুন। মিয়ানমারকে তার নাগরিকদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে এবং বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করুন। রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের (সিপিসি) উদ্বোধনকালে সিপিএ ভাইস প্যাট্রন প্রধানমন্ত্রী ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গীবাদ মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র্য নিরসনের সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাস এবং জঙ্গীবাদ মোকাবেলার নতুন সংগ্রাম। কিছু মানুষের অপরিণামদর্শী কর্মকা-ের ফলে নিরীহ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে। জঙ্গীবাদ আজ আর কোন নির্দিষ্ট দেশের সমস্যা নয়, এটি বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। কয়েকদিন আগেই নিউইয়র্কের রাস্তায় গাড়ি উঠিয়ে ৮ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তাই আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গীবাদ সমস্যার মোকাবেলা করতে হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের দক্ষিণ প্লাজায় পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সংসদীয় ফোরামের এই কনফারেন্সের জমকালো ও মনোলোভা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন সারাবিশ্ব থেকে আসা জনপ্রতিনিধিরা। রবিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও এবারের সিপিসির কার্যক্রম শুরু হয়েছে গত ১ নবেম্বর। ঢাকার হোটেল রেডিসনে ২ থেকে ৪ নবেম্বর সিপিএ’র বিভিন্ন অঞ্চল, কমনওয়েলথ উইমেন পার্লামেন্টারিয়ান্স এবং নির্বাহী কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটির বৈঠক হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী ও সিপিএ ভাইস প্যাট্রন শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে ঘণ্টা বাজিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। ‘আলোকের এই ঝর্ণা ধারায় ধুইয়ে দাও’ এবং ‘আমার মুক্তির আলোয়’ গান দুটির সঙ্গে উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করেন শিবলী মোহাম্মদ ও শামীম আরা নীপার নেতৃত্বে নৃত্যাঞ্চলের শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিএ চেয়ারপার্সন এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে তিনি সিপিএ’র প্যাট্রন ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের পাঠানো লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। শিরীন শারমিন চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন এবং সিপিএ’র কার্যক্রম নিয়ে দুটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। দুই তথ্যচিত্রের মাঝে নাচের দল নৃত্যাঞ্চল দলগত নৃত্য পরিবেশন করে। শিল্পকলা একাডেমি এবং নৃত্যাঞ্চল শিল্পীগোষ্ঠীর সৌজন্যে বাংলাদেশের ইতিহাস ও কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, পরিবেশ এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশকে তুলে ধরে বেশ কিছু বর্ণাঢ্য প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সিপিএ মহাসচিব আকবর খান তাদের মেয়াদে সিপিএ’র কার্যক্রম সারাবিশ্ব থেকে আসা জনপ্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরেন। এছাড়া কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রেশিয়াকে স্কটল্যান্ডের একটি ভিডিও বার্তা দেখানো হয়। অষ্টম কমনওয়েলথ ইয়ুথ পার্লামেন্টের যুব প্রতিনিধি আয়মান সাদিকও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সিপিএ’র কোষাধ্যক্ষ ও অস্ট্রেলিয়ার ক্যাপিটাল টেরিটরির লেজিসলেটিভ এ্যাসেমব্লির ডেপুটি স্পীকার ভিকি ডান। পরে ‘বাংলাদেশ দ্য গোল্ডেন ডেল্টা’ শীর্ষক নৃত্যনাট্য পরিবেশিত হয়। এছাড়া ‘সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্রও দেখানো হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। সিপিএ ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সংসদীয় ফোরাম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশনের ৫২টি দেশের মধ্যে ৪৪টি দেশ, ১৮০টি শাখার মধ্যে ১১৪টি শাখা এবারের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে। এসব দেশের জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের ৫৬ জন স্পীকার, ২৩ জন ডেপুটি স্পীকার এবং সংসদ সদস্যসহ সাড়ে পাঁচশ’র মতো প্রতিনিধি এ সম্মেলন উপলক্ষে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে- ‘কনটিনিউনিং টু এনহ্যান্স হাই স্টান্ডার্ডস অব পারফরমেন্স অব পার্লামেন্টারিয়ান্স’। আগামী ৮ নবেম্বর সম্মেলনটি শেষ হবে। সিপিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’- এই নীতির ভিত্তিতে প্রতিবেশী দেশসমূহের সঙ্গে সব সময়ই সুসম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর ফলে আমরা ভারতের সঙ্গে গঙ্গা নদীর পানি-চুক্তি এবং স্থল সীমানা চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তি করতে পেরেছি। একইভাবে মিয়ানমার এবং ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করে দেয়া শুধু এ অঞ্চলে নয়, এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করছে। সম্প্রতি মিয়ানমার সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে সেখান থেকে ৬ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি সে দেশের নাগরিক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ১৯৭৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে আরও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে। তাই মিয়ানমারকে তার নাগরিকদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে এবং বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করুন। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার জন্য উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে যেসব সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে সেগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের ফলে আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। এ বছর অতিবৃষ্টিসহ কয়েক দফা বন্যার ফলে আমাদের বিশাল জনপদ ভেসে গেছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার জন্য যেসব সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে বলেন, এই ঐতিহাসিক নগরী ঢাকায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এ্যাসোসিয়েশনের ৬৩তম সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং তার নিজের পক্ষ থেকে সকল অতিথিকে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও চর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের প্রথম ও প্রধান নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্র এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করা এবং এসব রীতিনীতি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের পূর্ণ আস্থা তৈরি করা। শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচক্ষণ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ১৯৭৩ সালে সিপিএ-এর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সিপিএ’র নির্বাহী কমিটির চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন। বিশ^ব্যাপী কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সংসদ সদস্যগণের প্রদত্ত এই স্বীকৃতি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চা ও মূল্যবোধের স্বীকৃতির একটি প্রামাণিক দলিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কায়েমের যে আকাক্সক্ষা এ ভূখ-ের জনগণ লালন করেছিল, বহু ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে তা বাস্তবায়িত হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অগ্রভাগে থেকে এই সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এজন্য তাকে পাকিস্তান শাসনামলের ২৪ বছরের মধ্যে প্রায় অর্ধেকটা সময় কারাগারে অন্তরীণ থাকতে হয়েছে। তিনি বলেন, যুদ্ধবিধস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের কাজে যখন বঙ্গবন্ধু নিমগ্ন ছিলেন, ঠিক তখনই পরাজিত শক্তির দোসররা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। তিনি এবং তার ছোটবোন শেখ রেহানা বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। তাদের দেশে ফিরে আসার পথ রুদ্ধ করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সঙ্গে সঙ্গে হত্যা করা হয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। শুরু হয় সামরিক স্বৈরশাসনের যুগ। প্রবাসে থাকাবস্থাতেই তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে লিপ্ত হন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৬ বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসি। জনগণের শাসন ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে আমাকেও কম নির্যাতন সহ্য করতে হয়নি। গৃহবন্দী, জেলখানায় আটক থেকে শুরু করে জীবননাশের প্রচেষ্টা করা হয় বার বার। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে তার দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে বিচ্যুত হননি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মনে করি একমাত্র গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থাই মানুষের মৌলিক অধিকারসমূহ ভালভাবে পূরণ করে উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আমরা শাসক নই, জনগণের সেবক হিসেবে সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে আত্মনিয়োগ করি। মাঝখানে ৮ বছর বিরতির পর আমার দল আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে আবারও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়। তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ভিত শক্তিশালী করার মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সে লক্ষ্যে আমরা রূপকল্প-২০২১ প্রণয়ন করি। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে আমরা আমাদের কর্মসূচীকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে তার সরকার একটি দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় সংসদ, বিভিন্নস্তরের স্থানীয় সরকারসহ আমরা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করেছি। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পরিষদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ দায়িত্ব পালন করছেন। নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ বৈষম্য নিরসনে আমাদের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে। শেখ হাসিনা বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার অতন্দ্র প্রহরী স্বাধীন এবং শক্তিশালী গণমাধ্যম। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম ব্যাপকভাবে বিকশিত হয়েছে। নিশ্চিত করা হয়েছে তাদের অবাধ স্বাধীনতা। মানুষের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এমডিজি বাস্তবায়নের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় আমরা এসডিজি বাস্তবায়ন করছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের চলমান সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এসডিজি’র বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন. বাংলাদেশ শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথ ধরে এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে আমরা নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করেছি। আমাদের প্রত্যাশা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশ ‘মধ্যম আয়ের দেশ’ এবং ২০৪১ সালে ‘উন্নত সমৃদ্ধ দেশ’ হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তিনি কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর প্রতি পৃথিবীকে বিশ্ববাসীর জন্য সুখময়, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ বাসভূমিতে পরিণত করার উদাত্ত আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশে আগত অতিথিদের অবস্থান আনন্দময় এবং এ সম্মেলনের সাফল্য কামনা করেন।
×