ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

ইলেকট্রিক গাড়িতে সাফল্য দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৪ নভেম্বর ২০১৭

ইলেকট্রিক গাড়িতে সাফল্য দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

আইটি ডটকম ডেস্ক \ বড় আকারে ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাণের সাহস যারা দেখাচ্ছে, তাদের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মার্কিন সংস্থা ‘টেসলা’। বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে এই গাড়ির ডিজাইনেও প্রায় সবদিক ভাবা হয়েছে। টেসলা মডেল এস পারফর্মেন্স গাড়িটির এ্যাক্সিলারেশন দুর্দান্ত। রেয়ার এ্যাক্সলে বসানো ইলেকট্রিক মোটরটি হলো ৩১০ কিলোওয়াটের, সর্বোচ্চ টর্ক ৬০০ নিউটনমিটার, যা কিনা প্রথম রেভুলিউশন থেকেই পাওয়া যায়। জার্মান অটোমোবাইল ক্লাবের মার্টিন রুডফার বলেন, ‘আমরা আপনাদের জন্য টেসলা মডেল এস পারফর্মেন্স গাড়িটি ভালভাবে পরীক্ষা করেছি। হাল ফ্যাশনের এই লিমুজিন-টি নাকি এক ব্যাটারি চার্জে ৫০০ কিলোমিটার অবধি যেতে পারে। পুরোপুরি ইলেকট্রিক।’ থামা অবস্থা থেকে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে পৌঁছতে টেসলা মডেল এস পারফর্মেন্স গাড়ির সময় লাগে চার দশমিক চার সেকেন্ড। ওভারটেক করার সময় ঘণ্টায় ষাট কিলোমিটার থেকে ঘণ্টায় এক শ’ কিলোমিটার গতিতে যেতে লাগে দুই দশমিক এক সেকেন্ড। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার। গাড়ির রিচার্জেবল ব্যাটারিগুলো গাড়ির মেঝেতে বসানো, কাজেই অভিকর্ষ বিন্দু নিচের দিকে। অর্থাৎ আচমকা ডানদিক-বাঁদিক কাটালে গাড়ি উল্টে যাওয়ার ভয় কম। এডিএসির ব্রেক টেস্টে মডেল এস ৩৪ মিটার পরেই দাঁড়িয়ে পড়ে। তবে নতুন টেসলা গাড়ির জন্য কোন কলিশন অ্যাভয়ডেন্স সিস্টেম নেই। ডিজাইনের বিশেষত্ব চোখে পড়ার মতো গাড়ি। টেসলা মডেল এস গাড়িটিতে ইতালীয় এবং ব্রিটিশ কার ডিজাইনকে একত্রিত করা হয়েছে, যদিও গাড়িটি বানানো হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। তার হাল্কা-পাতলা আকার দেখে জাগুয়ারের আভিজাত্যের কথা মনে পড়াটাই স্বাভাবিক। মার্টিন রুডফার বলেন, ‘ইলেকট্রিক গাড়িটি চলার সময় এত কম শব্দ করে যে, ফিস ফিস করে কথা বললেও শোনা যায়। যদি না সাউন্ড স্টুডিও সিস্টেমে জোরে গান শোনা হয়। নিউম্যাটিক সাসপেনশনের ফলে টেসলা মডেল এস চড়া খুবই আরামের, যদিও সুবিশাল চাকাগুলো তাতে কিছুটা বাদসাধে। স্টিয়ারিংও সুন্দর ও সরাসরিভাবে কাজ করে। সব মিলিয়ে টেসলার প্রথম নিজস্ব মডেল হিসেবে গাড়িটি উতরেছে বৈকি।’ আরও গুণাগুণ গাড়ির ভেতরে প্রথমেই চোখে পড়ে ১৭ ইঞ্চি টাচস্ক্রিনের একটি সুবিশাল মনিটর, যাতে সব রকম তথ্য দেখানো হয়। হেডলাইট থেকে সানরুফ, সব কিছু নড়ানো-চড়ানো যায় এই টাচস্ক্রিন দিয়ে। তবে ছোটখাটো সব কাজও এই টাচস্ক্রিনের মেন্যু থেকে করতে হয়। গাড়ি চালানোর সময় যেটা বিড়ম্বনা হয়ে উঠতে পারে। গাড়ির দুটি টাঙ্কির আয়তন হলো ৪৩৫ থেকে ৮৪৫ লিটার। কম দূরত্বে টেসলা এস গাড়ি থেকে কোন কার্বন নির্গত হয় না। ডায়নোমিটারে বসালে এই গাড়ি ৮৫ কিলোওয়াটের ব্যাটারিতে চলে ৪১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। অর্থাৎ ব্যাটারি কনজাম্পশন দাঁড়ায় প্রতি এক শ’ কিলোমিটারে ঘণ্টায় ২৩ দশমিক ৫ কিলোওয়াট এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড খাতে প্রতি কিলোমিটারে ১৩৬ গ্রাম কার্বন ডাই-অক্সাইড। মার্টিন রুডফার বলেন, ‘এডিএসির পরীক্ষায় টেসলা মডেল এস বাস্তবে ভাল ইলেকট্রিক গাড়ি বলে প্রমাণিত হয়েছে। অন্যান্য ইলেকট্রিক গাড়ির তুলনায় তার রেঞ্জও ভাল। তবে বাড়িতে ইলেকট্রিকের সকেট থেকে এই গাড়ির ব্যাটারি চার্জ করতে ৫০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে, কাজেই হাই ভোল্টেজ কনেকশন থাকলে সুবিধা। গাড়ির দাম যখন এক লাখ নয় হাজার ইউরো, তখন ওই বাড়তি খরচটুকু গায়ে না লাগারই কথা।’
×