যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে যুক্তরাষ্ট্র নিজেই পদক্ষেপ নেবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হেদার ন্যুআর্ট শুক্রবার একথা জানান। ডন নিউজ।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সদ্যই আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং ভারত সফর সেরে দেশে ফিরেছেন। আর সেই সফরেই পাকিস্তানকে এ যাবৎকালের কঠোর বার্তা তিনি শুনিয়েছেন বলে পিটিআইকে জানান ন্যুআর্ট।
তিনি বলেন, পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর স্বর্গরাজ্য নির্মূল করতেই হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন টিলারসন। ন্যুআর্ট আরও বলেন, আমরা অসংখ্যবার পাকিস্তানকে জানিয়েছি যে, আমরা চাই তাদের সীমানার মধ্যে যে জঙ্গী গোষ্ঠীগুলো সক্রিয়, সেগুলোর বিরুদ্ধে তাদেরকে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। পাকিস্তান তা না করলে যুক্তরাষ্ট্রই সে লক্ষ্য পূরণে অন্য পথ খুঁজবে। পাকিস্তানকে টিলারসন ঠিক যে কথাগুলো বলেছেন তা হচ্ছে, আমরা পাকিস্তানের কাছ থেকে কী চাই জানিয়ে দিয়েছি। আমরা আপনাদেরকে এটি করার অনুরোধ করছি, কোন দাবি জানাচ্ছি না। এটি কোন হুমকিও নয়। আপনারা একটি সার্বভৌম দেশ। আপনারাই স্থির করবেন, আপনারা কী করতে চান। কিন্তু জেনে রাখুন, আমরা মনে করি সন্ত্রাস নির্মূলের পদক্ষেপ নেয়া জরুরী। যদি আপনারা তা করতে না চান, যদি মনে করেন তা করা সম্ভব হবে না, তাহলে আমরা অন্য উপায়ে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য নিজস্ব কৌশল এবং নীতি নেব। উপমহাদেশ সফর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার পথে টিলারসন শেষবার থেমেছিলেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে টিলারসন জানান, খোলাখুলি এবং আন্তরিক পরিবেশেই পাক নেতাদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। তিনি বলেন, পাকিস্তানের নেতাদেরকে নিজের ভাষণ শোনাতে তিনি সেখানে যাননি। বরং পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক চলাকালে ৮০ শতাংশ সময়ই তিনি ব্যয় করেছেন তাদেন কথা শোনার জন্য। আর ২০ শতাংশ সময়ে তিনি পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য জানিয়েছেন।
টিলারসন আরও বলেন, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধন খুব সম্মানজনক অবস্থায় আছে। একই সঙ্গে তাদের সহায়তায় আমাদের কিছু বৈধ কাজ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে টিলারসনকে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে যে ৭৫ সন্ত্রাসীর তালিকা দিয়েছে এরমধ্যে লস্কর ই তৈয়্যবার প্রধান হাফিজ সাঈদের নাম নেই। একই সাংবাদিক পাকিস্তানী গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ৭৫ সন্ত্রাসীর তালিকার মধ্যে কোন পাকিস্তানীর নাম নেই। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকের এ দুটি প্রশ্ন কৌশলে এড়িয়ে যান, বলেন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান একে অপরের সঙ্গে চমৎকার পরিবেশে সন্ত্রাসীদের সম্পর্কে খুবই প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময় করেছে। আমরা তাদেরকে সন্ত্রাসীদের নাম এবং বিবরণ ছাড়াও বিস্তারিত তথ্য দিয়েছি, এর বিপরীতে তাদের কাছ থেকেও এ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আশা করছি যা কাজে লাগবে। টিলারসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তালিকা অনুযায়ী সন্ত্রাসীদের চলাফেরা এবং অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাকিস্তানের কাছ থেকে আশা করে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আব্বাসি, সেনাপ্রধানসহ দেশটির নেতৃত্বের কাছে আমার মূল বক্তব্য ছিল, আফগানিস্তান স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ থাকলে এই দেশটি থেকে অনেক বেশি কিছু পাবে পাকিস্তানের জনগণ।