ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাপক ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছেন শি জিনপিং

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস আজ শুরু

প্রকাশিত: ০৪:২১, ১৮ অক্টোবর ২০১৭

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস আজ শুরু

চীনের রাজধানী বেজিংয়ে বুধবার ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টির ১৯তম কংগ্রেস শুরু হচ্ছে। সে দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং-এর সময়কালে এটি গত এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয় পার্টি কংগ্রেস। অনেকেই এটিকে প্রেসিডেন্ট শি’র ক্ষমতা সুসংহত করার অভিষেক অনুষ্ঠান হিসেবে বর্ণনা করছেন। খবর এবিসি নিউজের। প্রেসিডেন্ট শি বিগত পাঁচ বছর কমিউনিস্ট পার্টিতে তার বিরুদ্ধবাদীদের সরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে তিনি পার্টির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটিতে নিজের অনুগতদের জন্য পথ সুগম করেছেন, যাতে করে তার একচ্ছত্র আধিপত্য ও প্রশ্নাতীত ক্ষমতা নিরঙ্কুশ হয়। চীনের সর্বত্র এই ধারণা জোরদার হচ্ছে যেÑদলীয় সংবিধানে শি জিন পিং এর নাম চেয়ারম্যান পদে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব উঠতে পারে এবং মাও সেতুং-এর মতো কিংবদন্তিীসম ব্যক্তিত্বের পর তিনিই হবেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির দ্বিতীয় চেয়ারম্যান। এ প্রসঙ্গে সিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক উ কিয়াংয়ের অভিমত হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট শি দলভিত্তিক যৌথ নেতৃত্বের পরিবর্তে এক ব্যক্তির কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করছেন। এই লক্ষ্যে তিনি নিরাপত্তা বাহিনী, সামরিক বাহিনী ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সংস্কার সাধন করেন। সব ধরনের কর্মকা-ের জন্য তার কাছে জবাবদিহী করতে হয়। অধ্যাপক উ’কে সিনহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানজনক পদ থেকে অপসারণ করা হয় তার স্বাধীনচেতা মনোভাব ও সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য। উ কিয়াংকে প্রেসিডেন্ট শির ব্যক্তিত্ব ও নেতৃত্বের গুণাবলী এবং তার নীতি ও আদর্শের সারবত্তা তুলে ধরে প্রচার করার কথা বলা হলে তিনি তাতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি চীনের মুষ্টিমেয় সাহসী লোকদের একজন- যিনি জোর গলায় এক নায়কতন্ত্রের বিপদ সম্পর্কে কথা বলে যাচ্ছেন এবং এখন পর্যন্ত গ্রেফতার এড়াতে পেরেছেন। কারণ ইতোমধ্যেই চীনের অনেক ভিন্ন মতাবলম্বী, মানবাধিকার আইনজীবী ও কর্মীকে কারাগারে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। পূর্ব এশিয়া বিষয়ক মানবাধিকার কর্মকর্তা নিকোলাস বেকুক্লিন বলেন, শি প্রশাসনের অধীনে চীনের মানবাধিকার পরিস্থিতি বহুদূর পশ্চাৎগামী হয়েছে। এতে সমাজের প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিকে দাবিয়ে রাখার লক্ষ্যে নির্যাতন-নিপীড়ন বেড়ে গিয়ে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা চালু রাখাই পার্টির প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেবে। নিকোলাস বলেন, কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, শি প্রশাসনের গৃহীত এই নীতি দীর্ঘদিনের জন্য টেকসই হবে না। শি জিন পিং তার ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার স্বার্থে তার প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি পাইকারি হারে দুর্নীতি নির্মূল অভিযানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছেন, যার দরুণ দশ লাখেরও বেশি মানুষকে শৃঙ্খলাবিধির আওতায় আটকে অথবা কারগারে পাঠানো হয়েছে। প্রেসিডেন্ট শির সমর্থকরা বলেন, বর্তমানে চীনের জন্য প্রেসিডেন্ট শি’র মতো শক্তিশালী নেতার প্রয়োজন আছে।
×