ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চার বছর আগে অতিরিক্ত কাজের চাপে নারী সাংবাদিকের মৃত্যু

অবশেষে দুঃখ প্রকাশ করল জাপানী গণমাধ্যম এনএইচকে

প্রকাশিত: ০৩:৩৩, ৭ অক্টোবর ২০১৭

অবশেষে দুঃখ প্রকাশ করল জাপানী গণমাধ্যম এনএইচকে

জাপানের সরকারী গণমাধ্যম এনএইচকের এক নারী সংবাদকর্মীর অতিরিক্ত কাজের (ওভার টাইম) চাপে মৃত্যুর চার বছর পর প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ এবং এর কর্ম পরিবেশ আরও উন্নত ও সংস্কার করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। মিওয়া সাদো নামের ৩১ বছর বয়স্কা এই সাংবাদিক রাজধানী টোকিওর রাজনৈতিক খবরাখবর সংগ্রহে ব্যস্ত থাকতেন। তার কাজের চাপ এত বেশি ছিল যে, একমাসে তিনি ১৫৯ ঘণ্টা ওভারটাইম ডিউটি করেছেন। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে তার মৃত্যু হয়। এই মাসে মাত্র দু’দিন তিনি ছুটি কাটান। অতিরিক্ত কাজের জন্য হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান। তার নিথর দেহ বিছানায় শায়িত অবস্থায় পাওয়া যায়, তখনও তার হাতে মোবাইল ফোনটি ধরা ছিল। এর এক বছর পর জাপানী কর্তৃপক্ষ জানায় যে, অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা ও পরিশ্রমের দরুণ তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এনএইচকে কর্তৃপক্ষ তখনও সাদোর মৃত্যু নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য করেনি। পরে তার পিতামাতার চাপে চার বছর পর প্রতিষ্ঠানটি সাদোর মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করে এর কর্ম পরিবেশ সংস্কারের আশ্বাস দেয়। মিওয়া সাদোর অকাল মৃত্যু সে দেশের ‘কারোশি’ (অতিরিক্ত কাজের দরুণ মৃত্যু) সমস্যাকে আবার নতুন করে সামনে নিয়ে আসল। জাপানে স্বাভাবিক কর্ম ঘণ্টা ৯ ঘণ্টা করে নির্ধারিত। এরপরও অতিরিক্ত কাজ অনেক সময়ই বিপত্তি ডেকে আনে। এতে অনেক পারিবারিক ও সামাজিক সমস্যার উদ্ভব হয়। তাই জাপানের এই দীর্ঘ কর্ম ঘণ্টার বিরুদ্ধে অনিকদিন ধরেই সমালোচনা ও প্রতিকারের দাবি উঠছিল। এমন কি এনএইচকেতেও এই দীর্ঘ কর্ম সংস্কৃতির কুফল নিয়ে নানাভাবে প্রচার চালানো হয়েছিল। এখন সেই এনএইচকের এক তরতাজা প্রাণ ‘কারোশি’র যাতাকলের নিচে পড়ে প্রাণ হারাল। এ ঘটনা প্রতিষ্ঠানটিকে এক বিব্রতকর অবস্থার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এর আগে এনএইচকে বিভিন্ন কোম্পানি বা সংস্থায় কর্মরর্তদের ‘কারোশি’র দরুণ মৃত্যুকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে প্রচার করেছে। ২০১৫ সালে ডেন্টসু নামে একটি খ্যাতনামা বিজ্ঞাপনী সংস্থার এক নারী কর্মী এক শ’ ঘণ্টার বেশি ওভারটাইম করে আত্মহত্যা করে। সে ঘটনাও এনএইচকে বিস্তারিতভাবে প্রচার করেছিল। এখন মিওয়া সাদোর মৃত্যুর পর প্রতিষ্ঠানটির মুখ দেখানো দায় হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার এনইচকের প্রেসিডেন্ট রিওচি উয়েদা বলেন, সাদোর মতো দক্ষ সাংবাদিককে হারিয়ে আমরা গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং তার অতিরিক্ত কর্মজনিত মৃত্যুকে আমরা তাৎপর্যের সঙ্গে গ্রহণ করছি। তার পিতামাতার সঙ্গে বসে কর্ম পরিবেশের সংস্কার সাধনে আমরা কাজ করে যাব। -এএফপি
×