ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাননকে তোয়াক্কা করে না রিপাবলিকানরা

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ৪ অক্টোবর ২০১৭

ব্যাননকে তোয়াক্কা করে না রিপাবলিকানরা

ব্যারন স্টিফেন ব্যানন মঞ্চের আড়ালে থাকতেই সর্বদা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারাভিযানের প্রধান হিসেবে এবং তাঁর হোয়াইট হাউসের প্রধান স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসাবে তিনি ছায়ার মধ্যে কাজ করতে চেয়েছেন তাঁর অস্তিত্ব সর্বদা অনুভূত হয়েছে তবে তাঁর কথা কদাচিৎ শোনা গেছে। ব্যানন নিজেকে ট্রাম্প এজেন্ডা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রণাঙ্গনের জেনারেল হিসেবে ভাবতে পছন্দ করেন। দক্ষিণপন্থী বাহিনীর এই নির্মম কমান্ডারের সামনে উদারপন্থীরা গুটিয়ে যায় এবং রিপাবলিকানরা কম্পমান হয়। তাঁকে যখন ব্যঙ্গ করে বলা হয়েছিল হোয়াইট হাউসের সর্বশক্তিমান অশুভ শক্তি তিনি তাতে খুব একটা আপত্তি করেননি। সম্প্রতি তিনি নিজের পদে ইস্তফা দিয়ে হোয়াইট হাউস ছেড়েছেন। ফিরে গেছেন তার ব্রেইটবার্ট নিউজের নির্বাহী চেয়ারম্যানের পদে। কিন্তু হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর থেকে ব্যানন নতুন পন্থায় পাদপ্রদীপের আলোয় আসার চেষ্টা করেছেন। এক টেলিভিশন সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন যে, ট্রাম্পের শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়তে তিনি আগ্রহী। তিনি বলেন, ‘আমি একজন স্ট্রিট ফাইটার। আমি বাইরে তাঁর ডানপাখা হতে চাই।’ হোয়াইট হাউসের বিধিনিষেধের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে ব্যানন এলোপাতাড়ি ঘুষি চালাচ্ছেন। মিডিয়া হিলারি ক্লিনটন, ট্রাম্পের অননুগত উপদেষ্টা কাউকে বাদ দেননি। শেষোক্তদের তিনি বলেছেন, ‘ট্রাম্প যা করছেন তা’ পছন্দ না হলে পদত্যাগ করুন।’ তবে কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যদের প্রতি তার হুমকিগুলোই অধিকতর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ব্যানন বলেন, ‘আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে সমর্থন না দিলে তাদের জবাবহিদি হতে হবে।’ শোনা যাচ্ছে যে, বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান সিনেটরের বিরুদ্ধে তিনি প্রাথমিক প্রার্থী দাঁড় করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদের মধ্যে আছেন এরিজোনার জেফ ফ্লেক, নেভাদার ডিন হেলার ও সিনেট পররাষ্ট্র সম্পর্ক কমিটির চেয়ারম্যান টেনিসির বব কোরকারের মতো ট্রাম্পের সমালোচক। ব্রেইটবার্টের মতো প্রচারমাধ্যম ও রবার্ট মার্সারের অর্থবিত্তের জোরে ব্যাননের রিপাবলিকান পার্টির মাথাব্যথার কারণ ঘটানোর ক্ষমতা রয়েছে। যে বছর রিপাবলিকানদের সিনেট নির্বাচনে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় থাকার কথা সে বছর তারা মাত্র ৮টি আসন রক্ষার জন্য লড়ছে এবং সেগুলোর বেশিরভাগই রিপালিকান প্রভাবিত রাজ্য। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটরা লড়ছে ২৫টি আসন রক্ষার জন্য। প্রাইমারিতে বর্তমান সিনেটরদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে বেশ ক’জন লোকরঞ্জনবাদী প্রার্থী দাঁড়ালে দলের কোষাগারে টান ধরবে এবং সিনেটে রিপাবলিকান দলের প্রধান মিচ ম্যাককনেল ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে লড়াই করার পরিবর্তে তাঁর সহকর্মীদের অর্থাৎ বর্তমান দলীয় সিনেটরদের সমর্থন করতে বাধ্য হবেন। ইতোমধ্যে তিনি তেমন অঙ্গীকার ব্যক্তও করেছেন। এরজন্য যদি মূল্যবান অর্থ ব্যয় করতে হয় তার জন্যও তিনি পিছপা নন। বর্তমান আসন রক্ষার জন্য অর্থ ব্যয় করা হলে ওথাইও, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনের মতো রাজ্যগুলোয় রিপাবলিকানরা এখন সিনেটের আসন দখল করতে চায় সে সব আসনের লড়াইয়ে তাদের অর্থ ব্যয়ের ক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়বে। আর প্রাইমারিগুলোতে দলীয় মনোবল দুর্বল হতে পারে। ভোটাররা নিরুৎসাহিত বোধ করতে পারে। তথাপি ব্যাননের দম্ভ ও অহঙ্কার অন্তঃসারশূন্য মনে হওয়ার কারণ আছে। নবীনদের কাছে ব্রেইটবার্ট মিডিয়া আগে যে সাড়া জাগাতে পারত এখন পারছে না। ট্রাফিক কম বিজ্ঞানদাতারা সংঘটিত বয়কটের মধ্যে ভেগে পড়েছে। ব্যাননকেও আর অত বিপজ্জনক মনে হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় কথা রিপাবলিকান নেতারা প্রমাণ দিয়েছেন যে ব্যাননও তার মতো ব্যক্তিদের পরাস্ত করা যায়। বিগত তিনটি নির্বাচনে মূলধারার রিপাবলিকানরা প্রাইমারিগুলোতে টি-পার্টি ধরনের বিদ্রোহীদের নিয়মিত পর্যুদস্ত করেছে। ২০১৪ ও ২০১৬ সালে ম্যাককনেল ও তার মিত্ররা ব্যাননদের সঙ্গে প্রায়শই যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল এবং প্রায় প্রতিবারই জয়ী হয়েছিল। চলমান ডেস্ক সূত্র : টাইম
×