ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিমানবন্দরে রকেট হামলা

ম্যাটিসের অঘোষিত কাবুল সফর

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ম্যাটিসের অঘোষিত কাবুল সফর

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস বুধবার অঘোষিত সফরে আফগানিস্তান পৌঁছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম তার মন্ত্রিসভার কোন সদস্য যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি সফরে গেলেন। আফগানিস্তানে আমেরিকা ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধে জড়িয়েছে। সম্প্রতি ম্যাটিস যুক্তরাষ্ট্রের নয়া আফগান নীতি ঘোষণা করেছেন। দেশটিতে মার্কিন উপস্থিতি দীর্ঘায়িত হবে বলে এতে বলা হয়েছে। এএফপি ও সিএনএন। ম্যাটিস আফগানিস্তানে পৌঁছার কয়েক ঘণ্টা পর কাবুল বিমানবন্দরের কাছে ছয়টি রকেট নিক্ষিপ্ত হয় বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জনিয়েছে। এতে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পাওয়া যায়নি বা কোন পক্ষ থেকে হামলার দায় স্বীকার করা হয়নি। কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ম্যাটিস আফগানিস্তান সফরে যান। তিনি এমন এক সময় দেশটি সফর করেন যখন নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকার হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষ করে তালেবানকে প্রতিহত করার কাজটি আফগান নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর জন্য এখনও এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। ২০১৪ সালে মার্কিন সৈন্যদের বেশিরভাগ ফিরিয়ে নেয়ার পর তালেবান নতুন করে শক্তি সঞ্চয় করেছে। ম্যাটিসের সঙ্গে তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে আছেন ন্যাটো বাহিনীর প্রধান জেনারেল জেনস স্টোলটেনবার্গ। তারা উভয় আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রের ‘ ট্রেইন এ্যান্ড এ্যাসিস্ট’ কর্মসূচী নিয়ে আলোচনা করেন। আফগান নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের উপযোগী করে গড়ে তোলাই এ কর্মসূচীর লক্ষ্য। এ ছাড়া তাদের আলোচনায় ন্যাটো-আফগান অংশীদারিত্ব বিষয়টি প্রাধান্য পায় । আফগানিস্তানে নিরাপত্তা বিষয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, মার্কিন জেনারেলরা অনেকদিন ধরেই এমন কথা বলছিলেন। যদিও মার্কিন নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক মিত্ররা বহুদিন ধরে এ বিষয়ে আফগান সরকারকে সহায়তা করেছে। যুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন কর্মসূচীতে যুক্তরাষ্ট্র এ পর্যন্ত দেশটিতে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করেছে। আগামী মাসে এ যুদ্ধ শুরুর ১৬ বছর পূর্ণ হবে। আফগান বাহিনীর সহায়তায় ন্যাটোকে আরও বেশি সৈন্য পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্র এখন চাপ দিচ্ছে। তবে তালেবান হুমকি দিয়েছে তারা বিদেশী সৈন্যদের জন্য আফগানিস্তানকে সমাধি বানিয়ে ছাড়বে। দেশটিতে ইতোমধ্যেই ১১ হাজার মার্কিন সৈন্য অবস্থান করছে। ট্রাম্প আরও অতিরিক্ত ৩ হাজার সৈন্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে ন্যাটোর রয়েছে ৫ হাজার সৈন্য। সমালোচকরা বলছেন, অতিরিক্ত সৈন্য পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কি উদ্দেশ্য পূরণ করতে পারবে। দেশটিতে একসময় সর্বোচ্চ ১ লাখ বিদেশী সৈন্য ছিল। তারাও আফগানিস্তানে তাদের মিশনে পুরোপুরি সফল হতে পারেনি। দেশটিতে মার্কিন উদ্যোগে পুনর্গঠন তত্তা¡বধানকারী মার্কিন স্পেশাল ইনস্পেক্টর জেনারেল জন সপকো বলেছেন, আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও দেশটি পুনর্গঠন কাজে যুক্তরাষ্ট্র খুব অপ্রস্তুত অবস্থায় হাত দিয়েছে। কোন স্পষ্ট ধারণা ছাড়াই নিরাপত্তা চাহিদা এবং আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর আকার নির্ধারণ করা হয়েছে। ম্যাটিস এর আগে ভারত সফর করেন। সেখানে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সিতারামানের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। সেখানে ম্যাটিস আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠানোর আহবান জানালেও তিনি ভারতের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাননি।
×