ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিয়ায় আইএসের মূল ঘাঁটির পতন

রাকায় বিমান হামলা ও মাইনের মধ্যে আটকা বাসিন্দারা

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রাকায় বিমান হামলা ও মাইনের মধ্যে আটকা বাসিন্দারা

সিরিয়ার রাকা শহরের বাসিন্দারা বিমান হামলা ও মাইনের মধ্যে আটকা পড়েছে। শহরটি এক সময় জঙ্গী গ্রুপ আইএসের অন্যতম ঘাঁটি থাকলেও তারা এখন পতনের মুখে। নিউইয়র্ক টাইমস। প্রতি নিয়ত সেখানে বোমার শব্দ। মাঝে মাঝে সামরিক বাহিনীর সাঁজোয়া বহর শহরের ঢুকে লড়াই শুরু করে। এটি ছিল সিরিয়ায় আইএসের রাজধানী হিসেবে পরিচিত রাকা শহরের পশ্চিমাঞ্চলের অবস্থা। গত মাসের শেষের দিকের ঘটনা। হাশিম রামাদান নামে এক ব্যক্তি বলছিলেন তিনি আইএসের হাতে তিনবার প্রহৃত হয়েছেন। তাদের ছোঁড়া শার্পনেলের আঘাতে তার ভাই মারা গেছেন। গত কিছু দিন যাবত তিনি বহু আহত লোককে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। এদের মধ্যে যারা মারা গেছেন তাদের দাফনের কাজেও তিনি অংশ নিয়েছেন। তিনি এবং তার মতো অনেক তরুণ বলছিলেন আইএসের পতনের শেষের দিনগুলোতে সেখানে প্রচুর লড়াই হয়েছে। মার্কিন বাহিনী ও তাদের মিত্ররা আইএস নিয়ন্ত্রিত শহরটি চতুর্দিক থেকে ঘিরে ধরেছিল। তারা ক্রমেই সঙ্কুচিত করে ফেলেছিল আইএসের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা। শেষ পর্যন্ত জনবসতিপূর্ণ কিছু এলাকার ওপর আইএস নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পেরেছিল।সংঘাতের জন্য ৩ লাখ জন অধ্যুষিত শহরটির লোকসংখ্যা ২৫ হাজারে নেমে এসেছিল। যারা পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন তারা জানিয়েছেন শহরটিতে ওপর দিকে বিমান হামলা ও নিচে ভূমি মাইন তাদের জীবন সঙ্কটাপন্ন করে তুলেছিল। এছাড়া ছিল তীব্র খাদ্য ও পানীয় জলের অভাব। অসহনীয় পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে বহু লোক শহর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। আইএস অবশ্য রাকা থেকে উৎখাত হয়েছে। তবে শহরের বাসিন্দাদের এর জন্য অনেক মূল্য গুনতে হয়েছে। তাদের অবস্থা দেখার জন্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক ইরাকের কুর্দি অধ্যুষিত এলাকা থেকে রাকার পশ্চিমাঞ্চল সফর করেছেন। ফাউজা হামেদ নামে একজন নারী জানাচ্ছিলেন লড়াই থেকে বাঁচতে তিনিও শহর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু চোখের সামনে আরেকজন নারীকে মাইন বিস্ফোরণে আক্রান্ত মারা যেতে দেখে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পাল্টান। কিন্তু তিনিও পুরোপুরি আত্মরক্ষা করতে পারেননি। আইএসের স্নাইপার তার পায়ে গুলি করে এবং তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে একটি অস্থায়ী কারাগারে আটক রাখে। অন্যদিকে মাইন বিস্ফোরণে নিহত নারীকে দ্রুত টেনে নিয়ে সমাহিত করে। আইএসের পতনে তিনি অবশ্য নিজ বাসায় ফিরে যেতে পেরেছেন। সেখানে তার সঙ্গে আরও দুজন নারী ছিলেন। তাদের একজন জানান আইএস তার স্বামীকে হত্যা করেছে। অপর জঙ্গীরা তাকে প্রচ- মারধর করেছে। তার ঘরের বাইরে একজন যুবককে পাওয়া যায় তিনি জানান বিরোধী মিলিশিয়া গ্রুপে যোগ দেয়ার জন্য তার পিতাকে আইএস হত্যা করেছে। রাকা শহরের পশ্চিমাঞ্চল এখন কার্যত ফাঁকা। এখানে সেখানে বিধ্বস্ত বাড়িঘর। স্থানীয় একটি স্কুলকে সামরিক ঘাঁটি বানিয়েছে মার্কিন বাহিনী।
×