ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা উত্তর কোরিয়া সঙ্কট নিরসনে মডেল হতে পারে’

কূটনৈতিক সমাধান চান মেরকেল

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

কূটনৈতিক সমাধান চান মেরকেল

জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু পরীক্ষা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসনে তিনি কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু করতে প্রস্তুত। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার উত্তর কোরিয়া ফের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সম্ভাবনা মাথায় রেখে মেরকেল এ কথা বলেন। এদিকে উত্তর কোরিয়া সঙ্কটকে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এএফপি ও ওয়েবসাইট। মেরকেল বলেছেন, তিনি উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু সঙ্কট নিয়ে কাজ করতে চান। এ ক্ষেত্রে ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা একটি মডেল হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। ফ্রাঙ্কফুর্টার আলজিমেইনে সনাটসজেইটুং পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিন বলেছেন, ‘এই আলোচনায় আমাদের অংশগ্রহণ কাক্সিক্ষত হলে আমরা খুব শীঘ্রই এটি শুরু করতে চাই।’ সাক্ষাতকারটি রবিবার প্রকাশিত হয়। ইরান এবং ছয়টি পশ্চিমা দেশের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পরিণতিতেই ২০১৫ সালে দেশটির একটি ঐতিহাসিক পরমাণু সমঝোতা চুক্তি করা সম্ভব হয়েছিল। ওই আলোচনায় ইরান ও নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য অংশ নিয়েছিল। পরমাণু সমঝোতা চুক্তি হয়েছিল বলেই ইরান ওই কর্মসূচী বন্ধ রাখার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞাগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিল। তিনি বলছেন, সেটি ছিল একটি দীর্ঘ কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার ফসল। আমি মনে করি, এই উদাহরণটি উত্তর কোরিয়া সঙ্কটের ক্ষেত্রেও কাজে লাগানো যায়। এ ক্ষেত্রে ইউরোপ এবং বিশেষ করে জার্মানির প্রস্তুত থাকা দরকার। মেরকেল মনে করেন, কেবলমাত্র কূটনৈতিক উপায়ই উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু সঙ্কট সমাধান করা সম্ভব। কারণ ওই অঞ্চলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাওয়া কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না। কূটনৈতিক উপায়সহ নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর করতে ইউরোপের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করেন। চলতি মাসের ২৪ তারিখ জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচন। এতে চতুর্থবারের মতো চ্যান্সেলর হওয়ার আশা করছেন মেরকেল। জনমত সমীক্ষায় তার দল বিরোধী সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে দুই অঙ্কের ব্যবধানে এগিয়ে আছে। উত্তর কোরিয়া সঙ্কট, ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়া, সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অশ্চিয়তার মধ্যে মেরকেলের নেতৃত্বে জার্মানি একটি স্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে উত্তর কোরিয়া পরমাণু পরীক্ষা করার পর বিষয়টি নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে মেরকেলের কথা হয়েছে। এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ফ্রান্সের লে জার্নাল দু দিমাঞ্চে পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাতকারে উত্তর কোরিয়া সঙ্কটকে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত অনেকগুলো যুদ্ধ হয়েছে শুরু হয়েছে অনেক চিন্তাভাবনা করে। আবার অনেক যুদ্ধ শুরু হয়েছে আকস্মিক উত্তেজনা থেকে।’ তাই সঙ্কট জটিল হওয়ার আগেই আমাদের সতর্ক হতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়াকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা থেকে বিরত রাখাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সোমবার উত্তর কোরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আনা সর্বশেষ দফা নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাবের ওপর ভোটগ্রহণ হতে পারে।
×