ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পরমাণু বোমাটি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোন বড় শহর নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব

প্রকাশিত: ০৩:১২, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

পরমাণু বোমাটি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোন বড় শহর নিশ্চিহ্ন করা সম্ভব

উত্তর কোরিয়া বলছে তারা রবিবার যে পারমাণবিক বোমাটি পরীক্ষা করেছে সেটি হাইড্রোজেন বোমা অর্থাৎ যেটি ধ্বংসক্ষমতার বিচারে সাধারণ পারমাণবিক বোমার চেয়ে কয়েকগুণ শক্তিধর। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে রাজি হচ্ছেন না যে বোমাটি হাইড্রোজেন বোমা। তবে তারা একযোগে স্বীকার করছেন, এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া যত পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালিয়াছে, এটি ছিল তার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিধর। খবর বিবিসির। মাটির নিচে দশ কিমি. গভীরে এই বিস্ফোরণের পর রিক্টার স্কেলে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে, যা পার্শ্ববর্তী চীনের বেশ কিছু এলাকাতেও ভূকম্পনের সৃষ্টি করে। বিস্ফোরণের পর ভূকম্পনের মাত্রা বিবেচনা করে অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, উত্তর কোরিয়ার পরীক্ষা করা বোমাটির শক্তি ছিল ১০০ কিলোটনের মতো। অর্থাৎ ১৯৪৫ সালে জাপানের নাগাসাকি শহরে যুক্তরাষ্ট্রের যে পারমাণবিক বোমা তাৎক্ষণিক ৭০,০০০ মানুষের জীবন নিয়েছিল, উত্তর কোরিয়ার এই বোমটির শক্তি তার চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক ভিপিন নারাং ব্লুমবার্গ সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, বোমাটি হাইড্রোজেন বোমা হোক আর না হোক, এটি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোন বড় একটি শহর পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে ফেলা সম্ভব। এখন পর্যন্ত ভয়াবহতম পারমাণবিক পরীক্ষা ছিল রাশিয়ার। ১৯৬১ সালে, ব্যারেন্ট সাগরে। উত্তর কোরিয়ার পরীক্ষা করা বোমাটি যদি হাইড্রোজেন বোমা হয়ও, তার পরেও এখন পর্যন্ত বিশ্বে ভয়াবহ যেসব পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলোর সঙ্গে এটির তুলনা কতটা করা যায়? এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে মানুষের সৃষ্ট সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ হয়েছিল ১৯৬১ সালে যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ‘জার বোম্ব’ বা ‘বোমার রাজা’ নামে একটি পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা করে। ওই হাইড্রোজেন বোমার শক্তি ছিল ৫০,০০০ কিলোটন। আর্কটিক অঞ্চলে নোভায়া জেময়িা নামে দ্বীপপুঞ্জের যে জায়গায় ওই দানবীয় বোমাটি পরীক্ষা করা হয়েছিল, তার ৩৫ মাইলের মধ্যে সব ভবন, স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এমনকী শত শত কিলোমিটার দূরেও ভবনে ক্ষতি হয়েছিল। ফিনল্যান্ড, নরওয়ের মতো অনেক দূরের দেশগুলোতেও বহু বাড়ির জানালার কাচ ভেঙ্গে পড়েছিল।
×