ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সপ্তম নৌবহর কমান্ডার প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ২৪ আগস্ট ২০১৭

সপ্তম নৌবহর কমান্ডার প্রত্যাহার

মার্কিন নৌবাহিনীর জাপানে অবস্থিত সপ্তম নৌবহরের এ্যাডমিরাল ইনচার্জকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। চলতি বছর ওই বহরে চারটি দুর্ঘটনা নৌবাহিনীকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে মার্কিন নাবিকরাও আছেন। ওয়াশিংটন পোস্ট। সপ্তম নৌবহরের এ্যাডমিরাল ইনচার্জ জোসেফ পি অকোয়েনকে বুধবার তার দায়িত্ব থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সোমবার সিঙ্গাপুরের অদূরে ডেস্ট্রয়ায় ইউএসএস জন ম্যাককেইনের সঙ্গে একটি তেল ট্যাঙ্কারের সংঘর্ষের পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ দুর্ঘটনায় ১০ জন নাবিক এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এর আগে ১৭ জুন জাপানের একটি বন্দরে এক কন্টেনার শিপের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস ফিৎজেরাল্ড। এতে সাতজন নাবিক নিহত হন। মার্কিন প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরের কমান্ড এ্যাডমিরাল স্কট সুুইফট মঙ্গলবার এ কথা বলেছেন। অকোয়েন ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে সপ্তম নৌবহরের কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি এর আগে নৌবাহিনীর ওয়ারফেয়ার সিস্টেমের ডেপুটি চিফ ছিলেন। তিনি সবচেয়ে পদস্থ কর্মকর্তা নৌবহরটিতে একাধিক দুর্ঘটনার পর যাকে বরখাস্ত করা হলো। তাকে অব্যাহতি দেয়ার খবরটি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রথম প্রকাশিত হয়। এসব দুর্ঘটনা মার্কিন নৌবাহিনীর জন্য বিব্রতকর। নেভাল অপারেশন্সের চিফ জন রিচার্ডসন বলেছেন, দক্ষ নৌ চালনার অন্যতম পূর্ব শর্ত হলো কোন রকম সংঘর্ষ না বাধিয়ে নির্বিঘেœ নৌযান পরিচালনা করা। তিনি সোমবার নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন। বিশ্বব্যাপী মার্কিন নৌবাহিনীর সকল নৌযান এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়। একদিন বা দুদিনের বিরতিতে নাবিকরা তাদের নৌ চালনার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভেবে দেখতে পারে। তিনি সোমবারের ঘটনা তদন্তের জন্য ফ্লিট ফের্সেস কমান্ডারের চার তারকা কমান্ডার ফিল ডেভিডসনকে নির্দেশ দিয়েছেন। প্যাসিফিক ফ্লিট কমান্ডারের দায়িত্বের অংশ হিসেবে সুইফটকে সপ্তম নৌবহরের বিষয়টি দেখাশোনা করতে হতো। তিনি বলেন, প্রতিটি দুর্ঘটনাই অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ ধরনের চারটি দুর্ঘটনার ক্ষতির পরিমাণ যথেষ্ট বিশাল। এসব ঘটনা আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। নৌ পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও কারিগরি সবগুলো দিক দিয়েই নৌবহরগুলো ঢেলে সাজানো প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি বছর এ ধরনের মোট চারটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। উল্লিখিত দুটি ঘটনা ছাড়াও ৯ মে গাইডেড মিসাইল ক্রুজার লেক চ্যামপ্লেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে একটি দক্ষিণ কোরীয় মাছ ধরার বোটের। এর আগে ৩১ জানুয়ারি গাইডেড মিসাইল ক্রুজার এ্যান্টিটাম ভুলবশত টোকিও উপকূলে ঢুকে পড়ে। সপ্তম নৌবহরের দফতর জাপানের ইয়োকোসুকায় অবস্থিত। প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৪ কোটি ৮০ লাখ বর্গমাইল এলাকায় ৩৬টি দেশের আন্তর্জাতিক জলসীমা দেখাশোনা করে থাকে এ বহর। এ বহরে ৫০ থেকে ৭০টি নৌযান রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে সাড়া দেয়াসহ উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি মোকাবেলা মিত্র দেশগুলোর নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান করা এর দায়িত্ব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই সেখানে এ বহর দায়িত্ব পালন করছে। এ নৌবহর নিয়োগের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং যে কোন ধরনের সামরিক কার্যক্রমের জন্য এ নৌবহর নিযুক্ত আছে। ১৯৯৪ সাল থেকে কোরিয়া প্রণালীতে প্রতিরক্ষার কাজে এ নৌবহর ব্যবহৃত হচ্ছে। একইসঙ্গে এ নৌবহর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষার দিকেও লক্ষ্য রাখছে। ১৯৪৩ সালের ১৫ মার্চ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে প্রথম সপ্তম নৌবহর তৈরি করা হয়। সাম্প্রতিক সংঘর্ষগুলো মার্কিন নৌবাহিনীর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। নাবিকদের প্রশিক্ষণ বা সরঞ্জামাদির অভাব ছিল না এটি অপর কোন দেশের সাইবার হামলার ফল এ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
×