ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পদত্যাগ করুন, জনগণ অনির্দিষ্টকাল ধৈর্য ধরবে না

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ২৩ আগস্ট ২০১৭

পদত্যাগ করুন, জনগণ  অনির্দিষ্টকাল ধৈর্য ধরবে না

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সংবিধান লঙ্ঘন করায় প্রধান বিচারপতি পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন এস কে সিনহা । তিনি ওই পদকে কলঙ্কিত করেছেন। তার পদত্যাগ করা উচিত। আওয়ামী লীগও অনেক ধৈর্য ধরেছে। তবে দেশের জনগণ অনির্দিষ্টকালের জন্য ধৈর্য ধরবে না। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কথাগুলো বলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ এবং বঙ্গবন্ধুর সৈনিক লীগের ব্যানারে এ কর্মসূচী পালিত হয়। এতে ড. হাছান মাহমুদ ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে আনা কিছু বক্তব্যকে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘন ও শপথ ভঙ্গের অভিযোগ আনেন। তিনি বলেন, রায়ে বঙ্গবন্ধুর একক নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে লেখা আছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করায় সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, আপনি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন, সুতরাং পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতা ড. হাছান মাহমুদ প্রধান বিচারপতির অতীত ভূমিকা টেনে এনে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আপনি রাজাকার আল বদরের সহায়ক শক্তি শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। এ স্বীকারোক্তি আপনি নিজেই দিয়েছেন। অর্থাৎ স্বাধীনতার জন্য যখন এ দেশের মানুষ অকাতরে প্রাণ দিচ্ছিলেন তখন আপনি পাকিস্তানী বাহিনীর সহযোগী শান্তি কমিটিতে ছিলেন। ড. হাছান মাহমুদ তার বক্তব্যে প্রধান বিচারপতির যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী না হলে আপনার মতো মৌলভীবাজার কোর্টের আইনজীবী কোন দিন হাইকোর্টের বিচারপতি হতে পারতেন না। আপনাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছে অনগ্রসর সম্প্রদায় থেকেও যে বিচারপতি হতে পারেন, সে উদাহরণ সৃষ্টি করার জন্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও আপনি প্রধান বিচারপতির পদকে কলঙ্কিত এবং প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার মুখ থেকে পাকিস্তানের উদাহরণ টেনে আনার তীব্র সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, পাকিস্তানকে তাড়িয়ে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে। এটা পাকিস্তান নয়। দেশের বিরুদ্ধে কেউ ষড়যন্ত্র করলে তা কিভাবে মোকাবেলা করতে হয় তা আওয়ামী লীগ জানে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি হলেন রাষ্ট্রের প্রতীক। কেউ যদি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাষ্ট্রপতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেন সেটি দেশদ্রোহিতা কিনা চিন্তার বিষয় রয়েছে। অবিলম্বে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দয়া করে সরে যান। এর আগে প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মারার ঘটনাও ঘটেছিল। সে ঘটনা এখনও ঘটেনি, এর পুনরাবৃত্তি ঘটুক তা আমরা চাই না। তবে দেশের জনগণ অনির্দিষ্টকাল ধৈর্য ধরে বসে থাকবে না। চট্টগ্রামে আয়োজিত এ মানববন্ধনে যোগ দেন আওয়ামী লীগ, আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ এবং বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা প্রধান বিচারপতির সংবিধান লঙ্ঘনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং পদত্যাগের দাবি জানান।
×