ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোহলির মুখে কেবলই পান্ডিয়া

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ১৬ আগস্ট ২০১৭

কোহলির মুখে কেবলই পান্ডিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হারদিক পান্ডিয়ায় মুগ্ধ বিরাট কোহলি। অনেকে পান্ডিয়ার মাঝে ইংলিশ তারকা বেন স্টোকসের ছাঁয়া দেখেন। এ নিয়ে অবশ্য নিন্দুকেরা কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না। কারণ স্টোকস প্রতিষ্ঠিত, হারদিক সেখানে একেবারে নবীন। ওইসব নিন্দুকদেরই বরং একহাত নিয়েছেন ভারত অধিনায়ক। কোহলি বলেন, ‘আমি চাইব, ওর মাঠের বাইরের হাবভাব নিয়ে কথা না বলে ক্রিকেটীয় পারফর্মেন্সটাই লোকে বিচার করুক। বাইরে থেকে অনেকের ওকে নিয়ে সমস্যা থাকতে পারে। কিন্তু টিমের মধ্যে আমরা জানি ও কি করতে পারে। কখনও তাই টিমের মধ্যে ওর দক্ষতা নিয়ে সংশয় ছিল না। নেই।’ বাহুতে ট্যাটু, কানে দুল, গলায় মোটা চেইনÑ পান্ডিয়ার বেশভূষা নিয়ে তোলা প্রশ্নে পারফর্মেন্সকেই সামনে টেনে আনেন অধিনায়ক। রঙিন পোশাকে আলো ছড়িয়ে সদ্যই সাদা পোশাকে ডাক পেয়েছেন। পাল্লেকেলে টেস্টে আট নম্বরে নেমে দুরন্ত এক সেঞ্চুরি (৯৬ বলে ১০৮) হাঁকিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ২৩ বছরের গুজরাটি। বেশভূষা-স্টাইল নয়, মাঠে পান্ডিয়া এনার্জি এবং তার অলরাউন্ড দক্ষতার ওপর প্রবল আস্থা কোহলির, ‘আমরা ওর ওপর কিছু চাপিয়ে দিই না। ওকে পাল্টাতে বলি না। ওকে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে দেই। নিজের প্রথম টেস্ট সিরিজ খেলতে এসে যে ছেলে প্রথম টেস্টে হাফ সেঞ্চুরি আর তৃতীয় টেস্টেই এভাবে সেঞ্চুরি পেতে পারে এবং সেটাও কি না আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে, সে অবশ্যই বিশেষ প্রতিভাবানদের মধ্যে পড়ে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘এক পর্যায়ে ৩২০-৬ হয়ে গিয়েছিলাম আমরা। সেখান থেকে ছেলেটা ইনিংস টেনে নিয়ে গেল। আর মোটেও উল্টোপাল্টা শট খেলে নয়। মস্তিষ্ক কাজে লাগিয়ে টেল-এন্ডারদের সঙ্গে নিয়ে খেলে গেল। এটা আমাদের জন্য দারুণ সঙ্কেত।’ তার পরেই আবার বলে ওঠেন, ‘বাইরে থেকে যারাই সংশয় প্রকাশ করুক না কেন, টিমের মধ্যে আমাদের ১২০ শতাংশ আস্থা রয়েছে পান্ডিয়ার ওপর।’ কোহলি বলেন, ‘টিমের সংস্কৃতি তখনই গড়ে তোলা যাবে যখন সকলে সেটাতে অবদান রাখতে চাইবে। ছোটখাটো বিষয়গুলো থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।’ কোহলি বলেন, ‘আমরা একটা তরুণ দল। অনেকে একই এজ-গ্রুপের বলে একসঙ্গে চার-পাঁচ বছর খেলে যেতে পারি। আমরা নির্মম ক্রিকেট খেলতে চাই। বয়স আমাদের পক্ষে আছে।’ যখন বলছিলেন কোহলি, অস্ট্রেলীয় গ্রেট স্টিভ ওহার মতো শোনাচ্ছিল। স্টিভের নেতৃত্বে যারা এক সময় অজেয় হয়ে উঠেছিল। ধোনি টানা ৬টি টেস্ট জিতেছিলেন সেখানে পাল্লেকেলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ছাপিয়ে গেছেন কোহালি। টানা ৭টি টেস্ট জিতে নিলেন তিনি। সৌরভের দখলে রয়েছে ১১টি জয়। ধোনি ভারতীয় দলকে টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছেন ৬০টি ম্যাচে। সৌরভ সেখানে ৪৯টিতে। কোহলি এখানে পৌঁছেছেন মাত্র ২৯ টেস্টে। স্বাভাবিকভাবেই সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে যেতে বিরাটের বেশি সময় লাগবে না। হার্দিক পান্ডিয়ার ম্যাচসেরা হয়েও খুব স্বাভাবিক। তার মতো তরুণ ক্রিকেটারের গলাতেও উচ্ছ্বাসের থেকে প্রতিজ্ঞার সুর বেশি, ‘টিমের প্রয়োজনে যে কোন জায়গায় ব্যাট করতে রাজি আমি। টেস্ট ক্রিকেটে ভাল করাটা আমার স্বপ্ন। সাদায় ভাল করতে চাই।’ শপথবাক্যের মতো শোনায় প্রেজেন্টেশনে তার ইন্টারভিউ। ম্যান অব দ্য সিরিজের পুরস্কার নিতে এসে তবু বলে গেলেন, ‘কোন কিছুই স্থায়ী নয়। এখানে আমি রান পেয়েছি ঠিকই, কিন্তু পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে এই ফর্ম ধরে রাখতে হলে। টিমের মধ্যে সব কটি জায়গার জন্য খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে।’ ওদিকে শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দীনেশ চান্দিমাল এটিকে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে আর কঠিনতম সিরিজ বলে অভিহিত করে ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন। মাত্র আড়াইদিনেই পাল্লেকেলের শেষ হাসিতে দ্বীপদেশে প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ (৩-০) করে ভারত। ৩০৪ রান, ইনিংস ও ৫৩ রানের পর সফরকারীদের জয়টা এবার ইনিংস ও ১৭১ রানে। ডাম্বুলায় পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে রবিবার। পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করেছে ফেবারিট ভারত। ফিটনেস ও ফর্মহীনতার কারণে বাদ পড়েছেন ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক যুবরাজ সিং। তবে কোহলির দলে টিকে গেছেন আরেক বর্ষীয়ান তারকা মহেন্দ্র সিং ধোনি।
×