ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লন্ডন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপসের ২০০ মিটারে সাফল্য ধরে রাখলেন ডাচ্ স্প্রিন্টার

অলিম্পিক দুঃখ ঘুচিয়ে শিপার্সের স্বর্ণ

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১৩ আগস্ট ২০১৭

অলিম্পিক দুঃখ ঘুচিয়ে শিপার্সের স্বর্ণ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বেজিং বিশ্ব আসরে সবাইকে চমক উপহার দিয়েছিলেন ড্যাফনে শিপার্স। হেপ্টাথলন থেকে স্প্রিন্টে দীক্ষা নিয়েই হয়েছিলেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। কিন্তু অন্যতম সেরাদের কাতারে নিজেকে নিয়ে যেতে পারেননি মাঝের দুই বছরে আহামরি কোন সাফল্য না পেয়ে। এককভাবে আধিপত্য করেছেন এ সময়টাতে জ্যামাইকার তরুণী এ্যালেইন টমসন। এমনকি গত অলিম্পিকেও শিপার্সকে দুঃখ উপহার দিয়েছিলেন এলেইন। এবার তিনি ছিলেন না, দুঃখটা ঘুচে গেছে শিপার্সের। টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপসের ২০০ মিটারে স্বর্ণপদক জিতে নিজেকেও সেরাদের কাতারে নিয়ে গেছেন হল্যান্ডের এ তরুণী। মৌসুম সেরা টাইমিং ২২.০৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। মহিলাদের ২০০ মিটারে গত দুই বছর ধরেই অন্যতম ফেবারিট ২৫ বছর বয়সী শিপার্স। কারণ বেজিং বিশ্ব আসরের অভাবনীয় সাফল্য। কিন্তু এরপর থেকেই ছক পাল্টে যেতে শুরু করেছে। ডায়মন্ড লীগ মিটগুলোতে তার চরম শত্রু হয়ে ওঠেন যুক্তরাষ্ট্রের টোরি বাউয়ি। আর জ্যামাইকান গতি সম্রাজ্ঞী এলেইন হয়ে ওঠেন দুর্ধর্ষ। তার সঙ্গে কোনভাবেই পেরে উঠছিলেন না শিপার্স। এমনকি রিও অলিম্পিকে ডাবল জিতে শিপার্সকে হতাশ করেন এলেইন। কিন্তু হাল ছাড়েননি শিপার্স। চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। এবার বাউয়ি কিংবা এলেইন দু’জনের কেউ ২০০ মিটারে নামেননি। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে এলেইনকে চমকে দিয়ে বাউয়ি গতির রাণী হয়ে ওঠেন, আর শিপার্সের কপালে জোটে ব্রোঞ্জ। তাদের উপস্থিতি থাকলেও অন্যতম ফেবারিট হিসেবে গণ্য শিপার্স। আর তারা দুজনের অনুপস্থিতিতে প্রায় নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিল ২০০ মিটারের স্বর্ণপদক জিতবেন এ ডাচ তরুণী। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে। মৌসুমের সেরা টাইমিং গড়েছেন তিনি, হয়েছেন টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। অবশ্য বেজিংয়ে চ্যাম্পিয়নশিপস রেকর্ড গড়ে তাক লাগিয়েছিলেন তিনি ২১.৬৩ সেকেন্ড টাইমিংয়ে। এবার সময় অনেকখানি বেশি নিয়েছেন। এবার শেষ করতে লেগেছে তার ২২.০৫ সেকেন্ড। দ্বিতীয় স্থানে থাকলেন আইভোরি কোস্টের ম্যারি জোসি টা লুই। তার টাইমিং ২২.০৮ সেকেন্ড। রৌপ্য জয়ের সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি গর্বেরও কারণ হয়েছে তার এ টাইমিং। এটি জাতীয় রেকর্ড আইভোরি কোস্টের। বাহামার বিস্ময় তরুণী শন মিলার উইবো ২২.১৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে ব্রোঞ্জ জয় করেন। এবার শিপার্সের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ ছিল, সেটা হচ্ছে নিজেকে সেরাদের একজন হিসেবে প্রমাণ করা। কারণ বেজিংয়ে হুট করে এসেই চ্যাম্পিয়নশিপস রেকর্ড গড়ে স্বর্ণপদক জয়টাকে অনেকে আচমকা ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা হিসেবে মনে করছিলেন। টানা দুই বছর ডায়মন্ড লীগ মিট ও গত অলিম্পিকের ব্যর্থতা যেন সেই কথাটিকেই প্রতিষ্ঠিত করছিল। কোচ পরিবর্তন করে অবশেষে সাফল্য পেলেন এবং প্রমাণ দিলেন তিনিও সেরাদের কাতারে। জয়ের পর উচ্ছ্বাস নিয়ে শিপার্স বলেন, ‘জেতাটা খুবই জরুরী ছিল। গত দুই বছর ধরেই আমি কঠোর পরিশ্রম করছি। তবু গত বছরটা আমার জন্য বিন্দুমাত্র সহজ ছিল না। আমি সবকিছুতেই পরিবর্তন এনেছি এবং নতুন কোচ নিয়েছি। সুতরাং এখন আমি অনেক খুশি। আজকের এ অর্জনের জন্য আমি অনেক সংগ্রাম করেছি।’ এই আত্মশক্তিটা সব স্প্রিন্টারের মধ্যেই বেশ ভালভাবে থাকতে হয়। সেটা আছে বলেই হেপ্টাথলন ছেড়ে স্প্রিন্টে এসেছেন শিপার্স। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি মনে করি স্প্রিন্টাররা গ্ল্যাডিয়েটরদের মতো। কিন্তু আমি হেপ্টাথলনকে আর সেভাবে মিস করি না। আমি কঠোর মেয়েদের পরাজিত করতে পছন্দ করি। হেপ্টাথলনের মেয়েরা অনেকটাই সহজ এবং বন্ধুভাবাপন্ন।’
×