স্টাফ রিপোর্টার ॥ অধস্তন (নিম্ন) আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট জারি করা নিয়ে যখন নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে সৃষ্ট টানাপোড়েন চলছে ঠিক সেই সময় প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে আওয়ামী লীগের তিন শীর্ষ আইনজীবীর প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হলেও বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি এবং মানুষের আস্থা যাতে ক্ষুণœ না হয় সে বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। রবিবার দুপুরের পর প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে অংশ নেয়া তিন আইনজীবী হলেন- আওয়ামী লীগের সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, সাবেক আইনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল মতিন খসরু এবং সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন।
বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, ‘দুপুরে বৈঠক হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনকে ডেকেছিলেন। তিনি আবার আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন। বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে ভূমিকা রাখার জন্য আমাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। কোন অবস্থাতেই বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে দূরত্ব থাকা উচিত নয় উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শফিক বলেন, আইন ও সংবিধান অনুযায়ী নিজ নিজ বিভাগের দায়িত্ব পালন করা উচিত। যাতে বার ও বেঞ্চের মধ্যে সম্পর্ক ভাল থাকে সে বিষয়ের দিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অন্যদিকে সাবেক আইনমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু জনকণ্ঠকে বলেন, এটা সৌজন্য সাক্ষাত ছিল। আমাদের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি এবং মানুষের আস্থা যাতে ক্ষুণœ না হয় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা যাতে ঘাটতি না হয় সে বিষয়ে ও আলোচনা হয়েছে।
অধস্তন বিচারকদের চাকরি ও শৃঙ্খলা বিধিমালার গেজেট প্রকাশ নিয়ে নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের আলোকে সুপ্রীমকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ করতে বারবার সময় নিচ্ছে সরকার। সুপীমকোর্টের বহু তাগাদার পর গত ২৭ জুলাই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রধান বিচারপতিকে গেজেটের খসড়া দেন। তবে ওই খসড়া আদালতের নির্দেশনার আলোকে হয়নি বলে তা গ্রহণ না করে আপীল বিভাগ আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার আহ্বান জানান। গত বৃহস্পতিবার সেই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইনমন্ত্রী সেদিন অসুস্থ হওয়ায় বৈঠকটি আর হয়নি। মাসদার হোসেন মামলাটি রবিবার আবার শুনানির জন্য এক নম্বর কার্যতালিকায় ছিল। তবে এ্যাটর্নি জেনারেল এক মাসের সময় আবেদন প্রার্থনা করলে আদালত শুনানি নিয়ে দুই সপ্তাহের সময় দেন। আগামী ২০ আগস্ট মামলাটি আবার শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।