ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মসুল ইরাকের নিয়ন্ত্রণে ইরাক কার নিয়ন্ত্রণে?

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ২ আগস্ট ২০১৭

মসুল ইরাকের নিয়ন্ত্রণে ইরাক কার নিয়ন্ত্রণে?

ইরাকের মসুল নগরী থেকে বিতাড়িত হয়েছে আইসিস। দীর্ঘদিন পর মুক্ত হয়েছে নগরী। মসুলের পতনের মধ্য দিয়ে আইসিস শুধু একটি নগরীকে হারায়নি। তার চেয়ে বেশি কিছু হারিয়েছে। মসুল জয় করার মধ্য দিয়ে ২০১৪ সালের জুন মাসে মানচিত্রে আইসিসের প্রথম আবির্ভাব ঘটেছিল। এখন মসুলকে হারানোর মধ্য দিয়ে সেই অবস্থাটাই একদম উল্টে গেছে। সিরিয়ার রাকা নগরী হচ্ছে আইসিসের রাজধানী। আর মসুলেই আইসিস ঘোষণা করেছিল ইসলামী রাষ্ট্র। এখন সেখান থেকে তারা সম্পূর্ণরূপে সরে গেছে অনেক রক্তপাতের মধ্য দিয়ে। ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই নগরীর আতঙ্কিত মানুষ অবশেষে নতুন করে জীবন গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছে। মসুল আইসিস দখলমুক্ত হলো ঠিকই। কিন্তু পরিস্থিতি এখন রক্তাক্ত অবস্থা থেকে জটিলতার দিকে ধাবিত হবে। আইসিসবিরোধী লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে শিয়া মিলিশিয়ারা এক সম্ভাবনাময় সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে প্রাধান্য লাভ করবে। এতে করে শক্তির ভারসাম্য প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল-আবাদী থেকে সরে আসবে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী নূরী আল-মালিকী উচ্চাভিলাষী সামরিক নেতাদের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক জোট গড়ে তোলার লক্ষ্যে গোটা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে চলবেন। কুর্দী বাহিনীও এখন কিছু কিছু ভূখ-ের উপর সামরিক নিয়ন্ত্রণ দাবি করছে যা নিয়ে বাগদাদের সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে। বিরাজমান পরিস্থিতির সুযোগে কুর্দী রাজনৈতিক নেতারা স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোটের দাবি জানিয়েছেন। গণভোট যদি হয় সেই ভোটের ফলাফল বাগদাদকে মানতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু এতে করে বাগদাদের শিয়া প্রাধান্যপুষ্ট সরকার এবং কুর্দীস্তান আঞ্চলিক সরকারের কর্মকর্তাদের মধ্যে সংঘাত নিঃসন্দেহে তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করবে। পরিশেষে আছে সুন্নিরা। আইসিস ও তার যুদ্ধ থেকে মুক্ত হয়ে সুন্নিরা আবার বাগদাদের কাছ থেকে বৃহত্তর প্রভাব, নতুন অধিকার ও অধিকতর সম্পদ দাবি করবে। এতে করে শুধু শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যেই নয় উপরন্তু সুন্নি উপদলগুলোর মধ্যেও উত্তেজনা ও টানাপোড়েন বৃদ্ধি পাবে। তেলের দাম কমে যাওয়ায় সরকারের পক্ষে দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল পুনর্নির্মাণ কাজে অর্থ দেয়া এবং যাদের ঘুষ দিয়ে কিনে দেয়া যায় তাদের ঘুষ দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। আইসিসের অধীনে তিন বছর জীবন কাটানোর পর সংঘাতে ক্লান্ত সব ধরনের ও সব শ্রেণীর ইরাকীরা একটা আপোস রফায় এসে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করবে এমনটাও সম্ভব। এতে দুর্ভাগ্যবশত ইরাকের ইতিহাস অন্য কথা বলে। চলমান ডেস্ক সূত্র : টাইম
×