ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের ফুটবলের দুর্বল জায়গা দেখালেন কোচ অর্ড

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ২৯ জুলাই ২০১৭

বাংলাদেশের ফুটবলের দুর্বল জায়গা দেখালেন কোচ অর্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ যে কথাগুলো বা বিষয়গুলো স্বীকার করতে চান না বা বুঝেও না বোঝার ভান করেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্তাব্যক্তিরা, সেগুলোই গড়গড় করে বলে দিলেন এ্যান্ড্রু অর্ড। বাংলাদেশ অনুর্ধ ২৩ জাতীয় ফুটবল দল ফিলিস্তিনে গিয়ে হ্যাটট্রিক হারে বিদায় নিয়েছে ‘এএফসি অ-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপ’-এর বাছাইপর্ব থেকে। তিন ম্যাচে ১৩ গোল হজমের বিপরীতে তারা মোটে করেছে এক গোল। সোমবার বাফুফের একটি ই-মেইল পাঠানো হয় ক্রীড়া সাংবাদিকদের কাছে। সেখানে বাংলাদেশ দলের অস্ট্রেলিয়ান কোচ অর্ডের একটি সাক্ষাতকার আছে। সেখানে অর্ড খোলামোলা আলাপনে বাংলাদেশ দলের দুর্বলতা-সমস্যাগুলো যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে এর প্রতিকারও বাতলে দিয়েছেন। এই টুর্নামেন্টে কোচ হিসেবে বাংলাদেশের পারফর্মেন্স বিশ্লেষণ করতে বললে অর্ড জানান, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই মুহুর্তে বাংলাদেশ দল আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলার মতো অবস্থানে নেই। খেলোয়াড়দের মৌলিক শিক্ষায় বেশ ঘাটতি আছে। প্রথম ম্যাচে জর্ডানের বিপক্ষে খেলা শুরুর আগেই আমরা মানসিকভাবে হেরে বসেছিলাম। দ্বিতীয় ম্যাচে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে আমরা সত্যিই ভাল খেলেছিলাম। কিন্তু শতভাগ ফিটনেস না থাকায় এগিয়ে গিয়েও দুর্ভাগ্যজনকভাবে হেরে যাই। শেষ ম্যাচেও মোটামুটি ভাল খেলি। কিন্তু পার্থক্য গড়ে দেয় ফিলিস্তিনের সেটপিস থেকে দুই গোল। অথচ আমি ছেলেদের এই সেটপিস নিয়ে অনেক অনুশীলন করিয়েছিলাম। কিন্তু মাঠে নেমে তারা তা প্রয়োগ করতে পারেনি। সর্বোপরি ছেলেদের দায়িত্ববোধ এবং মনোসংযোগের ঘাটতি ছিল।’ খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অর্ড, ‘ক্যাম্পের শুরুতেই খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে বিস্মিত হয়েছিলাম। খেলোয়াড়দের ফিট রাখা ফেডারেশনের কাজ নয়। জাতীয় দলের কোচ হিসেবে স্বল্প সময়ে কেবল ট্যাকটিক্স নিয়ে কাজ করাই মুখ্য। তাদের ৯০ মিনিট খেলার জন্য তৈরি করা তো কোচের কাজ নয়। যেমন এক ম্যাচে আমাদের গোলক্ষকের পায়ের পেশিতে টান পড়েছে, যা এর আগে কখনও দেখিনি। এসব আমাকে দারুণ বিস্মিত করেছে।’ সোহেল-হেমন্তদের পেশাদারিত্ব নিয়েও কথা বলেছেন অর্ড, ‘বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা যেভাবে তৈরি হয় এবং তারা তাদের পেশাদারিত্ব যেভাবে তৈরি করে, সেটা বিশ্বে আজ অচল। এগুলো না পাল্টালে শক্তিশালী দলের বিপক্ষে কখনও ন্যূনতম লড়াইও করা যাবে না। আমি খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলে যা বুঝলাম, তারা মাঠে নামার আগেই হেরে যায়। এই মানসিকতা ক্ষতিকারক এবং এটা বদল করা খুবই জরুরী। ভীতিকর অতীত কাটিয়ে নিজেদের বিশ্বাস ফিরে পেতে তাদের সময় দরকার। মানসিকতা নিয়ে কাজ করার পরও তিন ম্যাচে দেখা গেছে ঘুরে-ফিরে তা এসেছে।’ ফুটবলের উন্নয়নে করণীয় কি? ‘সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে হলে তৃণমূল ও যুব ফুটবল উন্নয়নে নজর দিতে হবে। এজন্য সময় লাগবে। কাজটা এখন থেকেই আরম্ভ করা উচিত। খেলোয়াড়ের সঙ্কট আছে। বাংলাদেশ দলে কোন ম্যাচ উইনার নেই। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে ফুটবলকে সম্ভাবনাময় জায়গায় পৌঁছানোর জন্য।’
×