ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আসাদবিরোধী বিদ্রোহীদের সহায়তা করবে না যুক্তরাষ্ট্র

বন্ধ হচ্ছে অস্ত্র সহায়তা

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ২১ জুলাই ২০১৭

বন্ধ হচ্ছে অস্ত্র সহায়তা

সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র গোপন অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচী স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বুধবার ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথম এ বিষয়ে খবর ছাপে। তবে এ কর্মসূচী ঘনিষ্ঠ যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার আল জাজিরাকে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আসাদের মিত্র দেশ রাশিয়া বহুদিন থেকে এমন একটি উদ্যোগের অপেক্ষায় ছিল। আল জাজিরা ও নিউইয়র্ক টাইমস। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা। সিরীয় গৃহযুদ্ধে আসাদ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে ইরান সমর্থিত একটি গোষ্ঠীর পাশাপাশি রাশিয়াও ব্যাপকভাবে সফলতা পেয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই দুই কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্ট আসাদের পতন ঘটাতে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসন ২০১৩ সালে বিদ্রোহীদের শক্তিশালী করতে গোপন সহযোগিতার কর্মসূচী চালু করেছিল। যদিও তাতে সফলতা ছিল সামান্যই। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। সিআইএও কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে মাসখানেক আগে এ সিদ্ধান্ত পাকাপোক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ওই দুই কর্মকর্তা। ৭ জুলাই জার্মানির হ্যামবার্গে জি ২০ সম্মেলনের নৈশভোজে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আলাপচারিতার আগে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচ. আর. ম্যাকমাস্টার ও সিআইএ’র মহাপরিচালক মাইক পোম্পেই নিম্নসারির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে ওই দুই কর্মকর্তা এও বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিম সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতির ওপর যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার আলোচনার অংশ হিসেবে এ সিদ্বান্ত নেয়া হয়নি। তারা বলেন, আসাদকে ক্ষমতায় রাখতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বড় কোন ছাড় দিচ্ছে না। কেবল সম্পর্কোন্নয়নে রাশিয়াকে একটি আভাস দিতে চেয়েছে প্রশাসন। ২০১৫ সালে আসাদের সমর্থনে সিরিয়ায় রুশ হস্তক্ষেপের পর বিদ্রোহীদের মার্কিন সহায়তা কর্মসূচীর কার্যকারিতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। কিন্তু শুরুতে এই কর্মসূচী ছিল খুবই ছোট পরিসরে। প্রতি মাসে কয়েক শ’ সিরীয় বিদ্রোহীকে অস্ত্র সরবরাহ করত সিআইএ। এরপর সিআইএর কর্মসূচীর কার্যকারিতা এমনভাবে কমতে থাকে, যাতে কোন উল্লেখযোগ্য ফল আসেনি। কিন্তু এরপরেও যুক্তরাষ্ট্র তার কর্মসূচী পরিত্যাগ করেনি। আপাতত রাশিয়ার সঙ্গে ভবিষ্যত আলোচনায় দর কষাকাষির হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে এটি চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন কোল বলেন, ‘সিআইএ খুবই ছোট একটি গোষ্ঠীকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করত, যুদ্ধে যাদের ব্যাপকভাবে পরাজয় ঘটেছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের কর্মসূচী চালিয়ে যেতে চায়, তাতে লাভ হতো না। কারণ দর কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে এর কোন মূল্য অবশিষ্ট নেই।’ এদিকে কর্মসূচী বাতিল করায় ডোনাল্ড ট্রাম্প কংগ্রেস ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ তদন্তে গঠিত স্পেশাল কাউন্সিলের নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্যে চলে আসবেন। মস্কো আগে থেকেই যোগসাজশের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। ট্রাম্পও তার নির্বাচনী প্রচারশিবির ও রাশিয়ার মধ্যে আতাঁতের অভিযোগ প্রত্যাখান করেছেন। কিন্তু দিনে দিনে বড় পরিসরে পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিচ্ছে। কারণ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার রুশ সমকক্ষ ভøাদিমের পুতিনের আরও ঘনিষ্ঠ হতে চাচ্ছেন বলে এসব ঘটনা সাক্ষ্য বহন করছে।
×