ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পাবলিক পরীক্ষায় ভাল করলেও বিসিএসে পিছিয়ে মেয়েরা

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ১৮ জুলাই ২০১৭

পাবলিক পরীক্ষায় ভাল করলেও বিসিএসে পিছিয়ে মেয়েরা

বিভাষ বাড়ৈ ॥ ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা এখন বেশি প্রায় প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষাতেই। তুলনামূলকভাবে পুরুষের তুলনায় ভাল ফলও করছে নারীরা। তবে পারিবারিক, সামাজিক নানা সীমাবন্ধতার কারণে মেধাবী হওয়ার পরও বিসিএস পরীক্ষায় গিয়ে নারীরা পিছিয়ে পড়ছে। বিসিএস পরীক্ষায় গত এক দশকের ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নিয়োগে ১০ শতাংশ কোটা বহাল রাখার পরও উত্তীর্ণদের ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশই পুরুষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেধাবী হওয়ার পরও বিসিএস পরীক্ষায় মেয়েরা ভাল ফল করতে পারছে না। বিয়ের পর পারিবারিক কাজে জড়িয়ে পড়া, পরিবার সামলে ভাল প্রস্তুতি নিতে না পারাসহ নানা কারণে মেয়েরা পিছিয়ে পড়ছে। অনেকে পরীক্ষায় অংশই নিতে পারে না, আবার নিলেও পারছে না পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক সময় মেয়েদের সাফল্য অনেক কম ছিল। এখন সামাজিক শত বাধা কাটিয়েও মেয়েরা ক্রমেই ভাল করছেন। মনে রাখা জরুরী যে, যেসব কারণে মেয়েরা পিছিয়ে পড়ছেন সেই কারণগুলোর মুখোমুখি হতে হয় না ছেলেদের। তারা নিজেদের মতো ২৪ ঘণ্টাই নিতে পারেন পরীক্ষার প্রস্তুতি। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সর্বশেষ ১০ বিসিএসের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, সর্বশেষ তিন বিসিএস অর্থাৎ ৩৩, ৩৪ ও ৩৫তম বিসিএসে সর্বোচ্চ সংখ্যক নারী উত্তীর্ণ হয়। তবে সেই হারও ৩৮ শতাংশের বেশি নয়। সরকারী কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহম্মদ সাদিক বলছিলেন, পবলিক পরীক্ষায় মেয়েরা ভাল করলেও বিসিএস পরীক্ষায় সংখ্যার দিক থেকে হয়ত কিছুটা তারা পিছিয়ে আছে। তবে দিন দিন মেয়েরা খুবই ভাল করছে। সামাজিক, পারিবারিক সকল বাধা কাটিয়েও তারা ক্রমেই ভাল করছে। এক সময় দেখা যেত পরীক্ষার পর ক্যাডার হিসাবে মেয়েদের সংখ্যা ছিল খুবই কম। এখন তার পরিবর্তন হচ্ছে। তবে এটা তো বাস্তবতা যে মেয়েরা সকল পাবলিক পরীক্ষায় ছেলেদের থেকেও ভাল করছে। আসলে পাবলিক পরীক্ষার সময়টাতে মেয়েদের যতটা পারিবার সামলাতে হয় বিসিএস পরীক্ষা পর্যায়ে এসে তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু করতে হচ্ছে। যা ছেলেদের করতে হয় না। তারা মেয়েদের থেকে পরীক্ষার ভাল প্রস্তুতি নিতে পারেন ছেলেরা। কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. আবদুল জব্বার খান বলছিলেন, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার সময়ে বিয়েসহ পারিবারিক কাজে মেয়েদের তেমন জড়াতে হয় না। কিন্তু অনার্স, মাস্টার্সের পর এসে বেশিরভাগ মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সন্তান লালন পালনসহ নানা পারিবরিক কাজে জড়িয়ে পড়ায় পরীক্ষায় আসার সুযোগ হারিয়ে ফেলছে মেয়েরা। পরীক্ষায় অংশ নেয়ার আগেই মেয়েরা মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে। অন্যদিকে বিয়ের পর পরীক্ষায় যারা আসতে পারছে তারাও পরিবার গুছিয়ে রাখার পর ভালভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছে না। ফলে মেয়েরা মেধাবী হলেও বিসিএস পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়ছে। তরে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য এ পরীক্ষায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন পিএসসির এ সদস্য। বিশেষজ্ঞরা অনেকেই বলছেন, পারিবারিক যেসব কারণে মেয়েরা পিছিয়ে পড়ছে সেই কারণগুলোর মুখোমুখি হতে হয় না ছেলেদের। পরীক্ষার সময় মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশি স্বাধীনভাবে প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ পায় বলে তাদের ফলও ভাল হয়। মৌখিক পরীক্ষার জন্য তদ্বিরসহ নানামুখী প্রভাব বিস্তারেও ছেলেদের ফল ভাল হয় বলে অভিমত অনেকের। দীর্ঘদিন নারীদের অধিকার, নারীর ক্ষমতায়নসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে কাজ করছেন মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের মহাপরিচালক ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব শাহীন আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলছিলেন, এটা ঠিক যে এসএসসি, এইচএসসি বা যে কোন পাবলিক পরীক্ষায় মেয়েদের সাফল্য যতটা বিসিএসে ততটা নয়। তবে এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে, দ্রুত অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। আমাদের সময়েই দেখা যেত বিসিএসে ভাল যারা করছেন তার মাঝে মেয়েরা ছিলেন একদম হাতেগোনা। কিন্তু এখন তো অনেক ভাল হচ্ছে দিন দিন। মেয়েদের প্রস্তুতির বিষয়ে শাহীন আহমেদ চৌধুরী বলেন, আসলে আমাদের সমাজ, এই উপমহাদেশের কথাই যদি ধরেন দেখা যাবে ছেলেরা একটা পরীক্ষা বা কাজের জন্য যতটা সময় দিতে পারেন মেয়েদের সেই সুযোগ নেই। মেয়েকে ঘর সামলাতে হচ্ছে, সন্তান সামলাতে হচ্ছে। রান্নাবান্না করতে হচ্ছে। সব কিছু গুছিয়েই কেবল তাকে বিসিএস পরীক্ষায় প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সরকারের এ কর্মকর্তা সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া একটি বক্তব্য সামনে আনলেন। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসারের কাজ স্বামী-স্ত্রী দুজনকে ভাগ করে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এতে সময় যেমন সাশ্রয় হবে, তেমনি পরস্পরের সান্নিধ্যে পাওয়া যাবে। প্রধানমন্ত্রী কর্মজীবী নারী-পুরুষ সবাইকে কাজ ভাগ করে করার আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের পুরুষরা এমনই অদ্ভুত ধরনের, দেখা গেল, একই সঙ্গে দুজন চাকরি থেকে এলেন। পুরুষ সদস্য বলেন উফ! আমি ভীষণ ক্লান্ত, এক কাপ চা বানিয়ে দাও তো। আর মেয়েদের কাজটা কী? ছেলেমেয়ে কোথায় কী করছে, রান্নাবান্না কী হলো। খাবার দিতে হবে, সবকিছু পরিষ্কার করতে হবে। তাঁকে একাই করতে হয়। এ ক্ষেত্রে পুরুষরা যদি একটু সচেতন হন, তাহলে কিন্তু তার (নারীর) কষ্টটা একটু লাঘব হয়। যদি একজন রান্না করেন, খাবার পরিবেশন করেন, এরপর আরেকজন সাফ করার দায়িত্বটা নিতে পারেন। এতে লজ্জার কিছু নেই। শাহীন আহমেদ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে বলছিলেন, এত কাজ, পারিবারিক বাধা ডিঙ্গিয়েও মেয়েরা এখন বিসিএসসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সামনে চলে আসছে। জানা গেছে, সর্বশেষ ৩৫তমসহ বিগত ৩৪, ৩৩, ৩২, ৩১, ৩০, ২৯, ২৮, ২৭, ২৬, ২৫ ও ২৪তম বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগের জন্য পিএসসির সুপারিশকৃতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল পুরুষ। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে গড়ে প্রায় ৭০ শতাংশই ছিল পুরুষ প্রার্থী। পর্যক্ষেকদের মতে, দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, বিরোধী দলীয় নেতা, কৃষিমন্ত্রী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মতো রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতেই এখন আছেন নারীরা। কিন্তু বিসিএসের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এখনও নিজেদের অবস্থান মেলে ধরতে পারছে না তারা। এ পরীক্ষায় পিএসসির পক্ষ থেকে ১০ শতাংশ কোটা বহাল রাখার পরও তারা পিছিয়ে পড়ছেন। বর্তমান বিধান অনুযায়ী বিসিএস পরীক্ষায় মেধা কোটা ৪৪ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা ৫, প্রতিবন্ধী কোটা এক শতাংশ কার্যকর রয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ও জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শিক্ষাবিদ অধ্যাপক শেখ একরামূল কবীর বলছিলেন, প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি থেকে শুরু করে সকল পবলিক পরীক্ষাতেই এখন মেয়েরা তুলনমূলকভাবে ভাল করছে। তারপরও বিসিএস পরীক্ষায় তারা পিছিয়ে পড়ছে এটা একটা ভাবনার বিষয়। কারণ হিসেবে এ শিক্ষাবিদ বলছিলেন, সমাপনী, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার সময়ে বিয়েসহ পারিবারিক কাজে মেয়েদের তেমন জড়াতে হয় না। কিন্তু এরপর বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সন্তান লালন পালননহ নানা পারিবরিক কাজে জড়িয়ে পড়তে হয় তাদের। বিয়ের পর পরীক্ষায় যে মেয়েরা আসতে পারছে তারাও পরিবার গুছিয়ে রাখার পর ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে পারছে না। আবার অনেকে পরীক্ষাতেই আসতে পারে না। এছাড়াও আরেক সীমাবদ্ধতা আছে। যার অধিকাংশই ছেলেদের মুখোমুখি হতে হয় না। তাই তাদের পরীক্ষার প্রস্তুতিও ভাল হয়। পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ৩৫তম বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে পুরুষ প্রার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৫৬৫ জন। যা মোট নিয়োগের ৭২ দশমিক ৫ শতাংশ। নারী নিয়োগ পেয়েছে ৬০৭ জন, যা মোট সংখ্যার ২৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ৩৪তম বিসিএসে যে দুই হাজার ১৫৯ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় তার ৩৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ হচ্ছে নারী। বাকি ৬৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ পুরুষ। ৩৩তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলে বিভিন্ন ক্যাডারে যে আট হাজার ৩৭৮ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয় মধ্যে ৬১ দশমিক ৭৪ শতাংশই পুরুষ। নারী ৩৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। ৩২তম নারী ও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগে বিশেষ বিসিএস হওয়ায় স্বাভাবিকভাকেই নারীরা ছিল বেশি। ওই বিসিএসে নারী ছিল ৫৫ দশমিক ১০ শতাংশ আর পুরুষ ৪৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। ৩১তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ হয় দুই হাজার ৬৯ জন। এর মধ্যে ৭০ দশমিক ৩৭ শতাংশ পুরুষ আর ২৯ দশমিক ৬২ শতাংশ নারী। ৩০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলে বিভিন্ন ক্যাডারে যে দুই হাজার ৩৬৭ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয় তারও প্রায় ৬৮ দশমিক ৫৭ শতাংশই পুরুষ, নারী ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। একই অবস্থা দেখা যায় ২৯তম বিসিএস পরীক্ষাতেও। ওই বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে পুরুষ ছিল ৭১ দশমিক ৫৪ শতাংশ আর নারী ২৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ২৮তম বিসিএস পরীক্ষায় দুই হাজার ১৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছিল পিএসসি। এর মধ্যে পুরুষ ছিল ৬৯ দশমিক ৪১ শতাংশ আর নারী ৩০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। ২৭তম বিসিএস পরীক্ষায় তিন হাজার ২৩৯ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে দুই হাজার ৪১৭ জনই ছিল পুরুষ, যা শতকরা ৭৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। ৮২২ জন নারী নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত হয়েছিলেন, যা মোট নিয়োগের ২৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। একইভাবে ২৬তম বিশেষ বিসিএসে সুপারিশকৃত এক হাজার ৬৩ জনের মধ্যে ৭০৩ জনই ছিল পুরুষ, যা মোট নিয়োগের শতকরা ৬৬ দশমিক ১৩ শতাংশ। অন্যদিকে নারী ছিল মাত্র ৩৬০ জন, শতকরা হিসাবে এই সংখ্যা ৩৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২৫তম বিসিএসে নিয়োগের জন্য পিএসসি দুই হাজার ৭২২ জনকে সুপারিশ করেছিল। এর মধ্যে দুই হাজার ২৯ জন পুরুষ আর ৬৯৩ জন নারী। এ সংখ্যা ছিল যথাক্রমে শতকরা হিসেবে ৭৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ পুরুষ ও ২৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ নারী। এছাড়া ২৪তম বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত পাঁচ হাজার ২২৫ জনের মধ্যে পুরুষ ছিল তিন হাজার ৮০৯ জন। আর নারীর সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪১৬ জন। পুরুষ ছিল ৭২ দশমিক ৮৯ শতাংশ আর নারী ছিল ২৭ দশমিক এক শতাংশ। বিসিএসে নারীদের পিছিয়ে থাকা প্রসঙ্গে পিএসসির কর্মকর্তারা বললেন, ১০ শতাংশ কোটা রাখার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তে বিসিএসে নারীদের পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহী করেছে। তবে এখনও আশানুরূপ ফল হচ্ছে না। নারী-পুরুষ সবাই মেধারভিত্তিতে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হন। এখানে বৈষম্যর কোন সুযোগ নেই। অনগ্রসর হিসাবে সরকার নারীদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা ব্যবস্থা চালু রেখেছে। ফলে নারীরা আগের চেয়ে অনেক এগিয়েছে। গত দুই বিসিএসে বেড়েছে নারীদের উত্তীর্ণের হার। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা ফারহানা হক বলছিলেন, আসলে পারিবারিক বাধা সামাজিক সীমাবদ্ধতার কারণে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় এসেই পিছিয়ে পড়তে বাধ্য হচ্ছে। বিসিএসের ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। মেধাক্রমের দিকে তাকালে দেখা যাবে মেয়েরা ভাল করছে, কিন্তু সংখ্যার দিক থেকে পিছিয়ে পড়ছে মেয়েরা। কারণ একটা মেয়ে দেখা যায় অনার্স মাস্টার্সের সময়েই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। কিংবা বিসিএসের আগেই বিয়ে হচ্ছে। ফলে তারা পারিবারিক নানা কাজ ও সামাজিক বাধার মুখে আর নিজের ক্যারিয়ারের দিকে তাকাতে পারে না। বিসিএস উত্তীর্ণ হয়ে এখন সফলতার সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন এমন অনেক নারী কর্মকর্তাই হতাশা প্রকাশ করছেন এই বলে যে, ‘অনেক বিসিএস ক্যাডার পুরুষকে দেখি যারা বাইরে খুব আধুনিক, প্রগতিশীল মনোভাবের। কিন্তু নিজের পরিবারের কথা আসলেই বলেন, নারীদের উচ্চ শিক্ষা, চাকরির কি প্রয়োজন? নারীরা থাকবে ঘরে, তারা রান্নাবান্না করবে। ছেলে মেয়ের দেখাশোনা করবে ইত্যাদি ইত্যাদি’।
×