ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

একনেকে ৯ প্রকল্প অনুমোদন

চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারী চালকল চালু হবে

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১২ জুলাই ২০১৭

চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারী চালকল চালু হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালকল (অটো রাইস মিল) প্রতিষ্ঠার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। গুদামে মজুদ রাখার পাশাপাশি চালের উৎপাদন বেশি হয় এমন জেলাগুলোতে সরকারী চালকল চালু করা হবে। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অসাধু ব্যবসায়ীদের চালের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির প্রবণতা বন্ধ হবে। এছাড়া চালের বিদ্যমান ব্যবস্থাপনা সঙ্কটও অনেকটা কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে মনে করছে সরকার। আবার বর্ষাকালসহ বিভিন্ন সময় ইটের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রভাব পড়ে। তাই সরকারী ব্যবস্থাপনায় ইটভাটা স্থাপনের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। সভা শেষে প্রেসব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, সভায় চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার হতে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণসহ ৯ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৬ হাজার ৩৯৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারী তহবিল থেকে ৫ হাজার ৯০৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৫৭ কোটি ৩ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য পাওয়া যাবে ৪৩০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হলে চট্টগ্রাম শহর এলাকা এবং এর দক্ষিণ অংশের সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার সৃষ্টি হবে। এতে যানজট হ্রাস পাবে এবং বিমানবন্দরে যাতায়াতের পথ সুগম হবে। তিনি জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এর পুরোটাই বাংলাদেশ সরকার বহন করবে। প্রকল্প বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে জুলাই ২০১৭ থেকে জুন ২০২০ পর্যন্ত। মুস্তাফা কামাল বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হলে সেটি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কেরানীগঞ্জ ও ঢাকায় বিচ্ছিন্নভাবে নানা জায়গায় প্রকল্প না করে সমন্বিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির উন্নয়ন করতে হবে। এ জন্য আগামী ৭ দিনের মধ্যে জমি খুঁজে বের করতে বলেছেন তিনি। এ জন্য যত টাকা লাগে তা দেয়া হবে। এছাড়া সীমান্তবর্তী নদী ড্রেজিংয়ের জন্য ভারতকে সম্পৃক্ত করার জন্য যৌথ নদী কমিশনে বিষয়টি আলোচনা করা হবে। সে ক্ষেত্রে ড্রেজিংয়ের খরচের বড় একটি অংশ ভারত সরকার বহন করবে বলে জানান মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, এখন থেকে যেসব জেলায় এক্সপ্রেসওয়ে করা হবে, সেগুলো টোলভিত্তিক করা হবে। সদ্যবিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (্এডিপি) বাস্তবায়ন হার অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি ছিল বলে তিনি জানান। একনেকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পসমূহ হলোÑ পাঁচদোনা-ডাঙ্গা-ঘোড়াশাল সড়ক উন্নয়ন ইসলামপুর খেয়াঘাট প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। জামালপুর জেলার তিনটি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও এনভায়রমেন্টাল স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নীতকরণ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম রিয়ায়েবিলিটি এ্যান্ড ইফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। নরসিংদী জেলার অন্তর্ভুক্ত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রক্ষপুত্র নদ, পাহাড়ীয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হযেছে ৫০০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এছাড়া সীমান্ত নদীতীর সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ৪৬৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। কৃষি শুমারি ২০১৮ প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। খুলনার পাইকগাছা কৃষি কলেজ স্থাপন প্রকল্প, এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১০১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এ্যান্ড এ্যালায়েড সায়েন্সেস ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, দিনাজপুর ও রংপুর এর সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্প, এতে ব্যয় হবে ২১২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
×