ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

টুইটার ব্যবহার নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন

মূলধারার গণমাধ্যমকে ফের ভর্ৎসনা ট্রাম্পের

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩ জুলাই ২০১৭

মূলধারার গণমাধ্যমকে ফের ভর্ৎসনা ট্রাম্পের

এনবিসি টিভির দুই উপস্থাপককে ব্যক্তিগত আক্রমণের জেরে বিতর্ক তৈরি হওয়ার পর খুদে ব্লগ টুইটারে কয়েক দফা পোস্ট দিয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমি একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করি না, কিন্তু মনে রাখতে হবে, আমি আধুনিক যুগের প্রেসিডেন্ট।’ খবর বিবিসি অনলাইনের। চলতি সপ্তাহের শুরুতে দুই উপস্থাপক মিকা ব্রেজেজিনস্কি ও জো স্কারবরোকে কড়া ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানরা সমান তালে তার টুইটার ব্যবহারের নিন্দা জানিয়েছেন। যদিও হোয়াইট হাউস প্রেসিডেন্টের সমর্থনে পুরোদমে এগিয়ে এসেছে। এর আগে ট্রাম্পের সহযোগীরা তার ঘন ঘন টুইটের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শনিবার বলেন, ‘মূলধারার গণমাধ্যমকে এড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির বিশাল সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।’ তিনি সবসময় মূলধারার গণমাধ্যমের সংবাদ পরিবেশনকে ভুয়া বলে আখ্যায়িত করে আসছেন। এক টুইটার পোস্টে তিনি বলেন, ‘রিপাবলিকান সমর্থক ও সাধারণ মানুষকে বোঝাতে ভুয়া-অসৎ গণমাধ্যম কঠোর সাধনা করে যাচ্ছে। তারা চাচ্ছে, আমি যাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার না করি।’ তিনি বলেন, কিন্তু সবাইকে মনে রাখতে হবে, ‘আমি ২০১৬ সালের নির্বাচনে মূলধারার বাইরের গণমাধ্যমে সাক্ষাতকার ও বক্তব্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছি।’ এছাড়া সিএনএন ‘প্রেসিডেন্টের এক সহযোগী কংগ্রেসের তদন্তধীন’ বলে অভিযোগ করে প্রকাশিত একটি লেখা প্রত্যাহার করে নিলে ট্রাম্প সংবাদমাধ্যমটি বিরুদ্ধে নতুন করে কথার হামলা শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত ভুয়া খবর ও নোংরা সাংবাদিকতার হাড়ি ভেঙ্গে গেছে। আমি খুবই খুশি যে সিএনএন তার সংবাদটি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।’ ট্রাম্পকে বিচলিত করে দেয়া প্রতিবেদনটি সিএনএনের একটি ঘরোয়া তদন্তের পর প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এ প্রতিবেদনের জেরে গণমাধ্যমটির অনুসন্ধান বিষয়ক ইউনিটের প্রধান থমাস ফ্রাঙ্ক, পুলিৎজার জয়ী এরিক লিক্টব্লাও ও লেক্স হ্যারিস চাকরি হারিয়েছেন। ট্রাম্প বারবার সিএনএনকে ‘ভুয়া সংবাদমাধ্যম’ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে। এর আগে তিনি বাজফিডকেও ভুয়া খবরের স্তূপ বলে টুইট করেছিলেন। গত ফেব্রুয়ারির এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বিবিসি’র উত্তর আমেরিকার সম্পাদককে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এখানে আমরা আরেক সৌন্দর্য দেখতে পাচ্ছি।’ শনিবার ওয়াশিংটনে প্রবীণ সামারিক সদস্যদের এক সম্মেলনে তিনি অঙ্গিকার করেন, আমেরিকা আরেকবার জয়ী হবে। দর্শকদের উল্লাসধ্বনির মধ্যে তিনি গণমাধ্যকে আক্রমণ করে যান। স্বাধীনতা উৎসব শোভাযাত্রায় তিনি বলেন, ‘ভুয়া গণমাধ্যম আমাদের থামিয়ে দিতে চাইছে। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। তারা চায়নি আমরা হোয়াইট হাউসে যাই। কিন্তু আমি প্রেসিডেন্ট। কাজেই তারা আর কোনদিন পারবে না।’ তিন কোটি ত্রিশ লাখ লোক টুইটারে ট্রাম্পকে অনুসরণ করছেন। এত দর্শককে আঘাত দেয়া ট্রাম্পের জন্য ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে পড়ছে। মাত্র ১৪০ শব্দের টুইটকে উভয় শিবিরের রাজনীতিবিদ ও ভাষ্যকাররা নিন্দা জানিয়েছে। অনেকের মতে, দেশের সর্বোচ্চ পদে বসে ট্রাম্প টুইটারে যে ভাষা ব্যবহার করেন, তা একেবার অনুচিত। ট্রাম্পের টুইট করা নিয়ে শুক্রবার নিউ ইয়র্ক পোস্ট মাত্র তিনটি শব্দে তাদের সম্পাদকীয় লিখেছে : ‘থামুন, এখন থামুন।’ বৃহস্পতিবার এনবিসি টিভির নারী উপস্থাপিক মাইকা জিজিন্সকি গালি দিতে গিয়ে তিনি টুইট করেন, তার সুন্দর চেহারার মধ্যে লুকিয়ে থাকা নোংরামি বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। তার সহকারী জো স্কারবারোকে ‘একজন বিকারগ্রস্ত’ বলে উল্লেখ করেন।
×