ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

স্থলবন্দরে জায়গা সঙ্কট

বেনাপোলে পণ্য খালাসে বিলম্ব, গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত মাশুল

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৯ জুন ২০১৭

বেনাপোলে পণ্য খালাসে বিলম্ব, গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত মাশুল

স্টাফ রিপোর্টার, বেনাপোল ॥ স্থলপথে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ট্রানজিট বেনাপোল স্থলবন্দর। এ বন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রফতানি হয়ে থাকে। প্রতিবছর ১৩ লাখ পাসপোর্টধারী যাত্রী এ পথেই দুই দেশের মধ্যে চলাচল করেন। বন্দর থেকে বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব জমা হচ্ছে সরকারী কোষাগারে। অথচ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা এ বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নে নেই উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ। উন্নয়নের অভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে উপযোগিতা হারাচ্ছে বেনাপোল স্থলবন্দর। বন্দর ব্যবহারকারীদের অভিযোগ, বেনাপোল স্থলবন্দরের ধারণক্ষমতা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এখানে রয়েছে অসহনীয় পণ্যজট। বন্দরের ট্রাকজটও ব্যবসায়ীদের জন্য পীড়াদায়ক। আমদানি-রফতানিকারকরা জানান, বন্দরে পণ্যবোঝাই ও খালাসের জন্য পর্যাপ্ত ক্রেন নেই। যে পরিমাণ পণ্য আসে সেগুলো রাখার জন্য জায়গাও নেই বন্দরটিতে। এছাড়া অসহনীয় যানজটের কারণে আমদানিকারকরা সঠিক সময়ে পণ্য বুঝে পাচ্ছেন না। বেনাপোল সিএ্যান্ডএফ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ মফিজুর রহমান সজন বলেন, স্থলপথে বাণিজ্যের জন্য বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থলবন্দর বেনাপোল। অথচ এটি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। বন্দরটি ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। বন্দরটিকে আরও গতিশীল করার জন্য প্রথমেই জায়গার সঙ্কট দূর করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দরের উপযোগিতা বাড়াতে হলে এর ধারণক্ষমতা বাড়াতে হবে। নির্মাণ করতে হবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। বাড়াতে হবে আধুনিক যন্ত্রপাতির সংখ্যা। সরকার এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে বন্দরটি কর্মচাঞ্চল্য হারাতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এ বন্দরের ধারণক্ষমতা মাত্র ৩৬ হাজার টন। এখানে রয়েছে ৪০টি শেড। বিপরীতে বন্দরটিতে বর্তমানে হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে এক থেকে দেড় লাখ টন পণ্য। স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় অনেক পণ্য শেডে রাখা যাচ্ছে না। বাইরে রাখার কারণে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, পণ্যবাহী ট্রাককে পেট্রাপোলে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বিধায় সঠিক সময় পণ্য খালাস করা যাচ্ছে না। ওপারে দাঁড়িয়ে থাকার কারণে প্রতিদিন ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হয়। কোন কোন ট্রাক ১০ দিনও পেট্রাপোলে দাঁড়িয়ে থাকছে। এতে ব্যবসায়ীদের ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে, ব্যবসায় লোকসান হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে আমদানিকৃত পণ্য ও মূল্যবান সময়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের (বেনাপোল) পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, বন্দরের জায়গা সঙ্কট ও যন্ত্রাংশ স্বল্পতার বিষয়ে ব্যবসায়ীরা আমাদের জানিয়েছেন। সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে আমরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এরই মধ্যে বড় দুটি শেড নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এগুলো নির্মাণ হলে সঙ্কট অনেকটাই কেটে যাবে।
×