ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্ঘটনার আশঙ্কা

বরিশালে ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চে ঈদযাত্রা

প্রকাশিত: ০৪:২০, ১৬ জুন ২০১৭

বরিশালে ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চে ঈদযাত্রা

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বাড়ি ফেরার অন্যতম মাধ্যম নৌপথ। এ অঞ্চলের লাখো মানুষ লঞ্চেই যাতায়াত করে থাকেন। ঈদের সময় ঘরে ফেরা মানুষের ভিড় থাকায় লঞ্চের চাহিদাও থাকে অনেক বেশি। এ সুযোগে এক শ্রেণীর লোভী লঞ্চ মালিকরা ঈদ মৌসুমে ঝুঁকিপূর্ণ লক্কড়ঝক্কড় লঞ্চে রং লাগিয়ে নৌপথে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ যাত্রীরাও নাড়ির টানে ঈদের সময় বাড়ি ফিরতে চিন্তা না করেই এসব লঞ্চে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে ১০ থেকে ১২টি লঞ্চে স্পেশাল সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ও বেসরকারী লঞ্চ মালিকরা। কিন্তু এসব লঞ্চগুলো প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম। এছাড়া ঈদের সময় যাত্রীদের ভিড় বেশি থাকায় লঞ্চের ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বেশি যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করে। জানা গেছে, প্রতিবছরই ঈদকে কেন্দ্র করে লঞ্চ মালিকদের একটি অংশ বেশি লাভের আশায় পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চ পরিচালনা করেন। ডকইয়ার্ডগুলোতে ঈদের ২-৩ মাস আগ থেকেই লঞ্চের রং-কালি ও রি-পিয়ারিংয়ের কাজ শুরু করেন। ফলে ইতোমধ্যে লক্কড়ঝক্কড় মার্কা লঞ্চ হয়ে উঠেছে চকচকা। দেখে বোঝার উপায় থাকে না এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ। যাত্রীরাও না বুঝে রংমাখা লঞ্চগুলোতে চলাচল করে থাকেন। ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে ঈদ মৌসুমে পাল্লা দিয়ে অনভিজ্ঞ চালক দিয়ে স্পেশাল সার্ভিসের লঞ্চগুলো চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটে নৌ-দুর্ঘটনা। নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলনের এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, শুধু বুড়িগঙ্গার সাড়ে চার হাজার বিভিন্ন ধরনের লঞ্চের মধ্যে ফিটনেস পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র ৭৮২টির। এসব লঞ্চের ৫০ শতাংশের কোন রেজিস্ট্রেশন নেই। এসব কারণে গত ৩০ বছরে নৌ-দুর্ঘটনায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তবে বিআইডব্লিউটিএর নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৬৬ বছরে দেশে দুই হাজার ১২২টি নৌ-দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ছয় হাজারের মতো যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসির যুগ্ম পরিচালক জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, পূর্বের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এ বছর আর কোন লক্কড়ঝক্কড় মার্কা লঞ্চ নদীতে নামতে দেয়া হবে না। এ জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রীর নির্দেশে ঈদের পাঁচদিন আগেই বেশ কয়েকটি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে। যাত্রীবাহী স্টিমার বিকল ॥ ঢাকা-মোরেলগঞ্জ রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী স্টিমার পিএস মাসুদ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ঝালকাঠিতে এসে বিকল হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্টিমারটি ঢাকা থেকে মোরেলঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করে বুধবার বরিশাল ঘাট অতিক্রম করার পর নলছিটির সুগন্ধা নদীতে এসে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরবর্তীতে চালক কোন মতে স্টিমারটি ঝালকাঠি ঘাটে এসে নোঙ্গর করে।
×