ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

এবার নতুন জাত ব্যানানা আম

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ১১ জুন ২০১৭

এবার নতুন জাত ব্যানানা আম

ডি. এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ নতুন জাত, এবার নাম তার ব্যানানা আম। থাইল্যান্ড থেকে আসা আমটি খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে আমসাম্রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে। আর এই কাজটি করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টার। এখন হিমশিম খাচ্ছে চারা বিতরণ করতে গিয়ে। বাজারে ব্যাপক চাহিদা ও লাভজনক হবার কারণে, পাশাপাশি রফতানিতেও অগ্রগণ্য হতে পারে এই ভেবে বাণিজ্যিকভাবে সম্প্রসারণ হওয়া শুরু করেছে। জেলার একাধিক আমচাষী এই জাতের আমের বিশেষায়িত বাগান করার ইচ্ছা নিয়ে একেবারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। শুরু হয়েছে এই আমের জাত নিয়ে বাগান করার। একেবারে আঁশবিহীন পাতলা আটি, দেখতে সাগর কলার মতো লম্বা, ওজনে তিন থেকে সাড়ে চারশ’ গ্রাম। একটি ১২ ফুট লম্বা গাছে অনায়াসে মৌসুম সময়ে ১০/১২ মণ বা ৪৮০ কেজি আম পাওয়া সম্ভব বলে জানান উপ-পরিচালক চাঁপাই হর্টিকালচারিস্ট কৃষিবিদ ড. সাইফুর রহমান। অনন্য স্বাদ ও গন্ধের এই আমের চাষ পদ্ধতিও অনেকটা সহজ হওয়ার কারণে ‘ব্যানানা আমের’ কলম গাছের চাহিদা অনেকটা বেড়ে গেছে। আকর্ষণীয় স্বাদ ও গন্ধের আমটি আবার নাবি জাতের। স্থানীয়ভাবে আবার বাণিজ্যিকভাবেও সারাদেশে নাবি জাতের আমের চাহিদা রয়েছে। আম সাম্রাজ্য চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনেক বুনিয়াদি জাত থাকলেও নাবি জাতের আম হাতেগোনা। তাই থাইল্যান্ড থেকে আসা ব্যানানা জাতের এই আমটির চাহিদা ও গ্রহণযোগ্যতা ইতোমধ্যেই বেড়ে চলে গেছে একেবারে শীর্ষে। কল্যাণপুর হর্টিকালচার সেন্টারে ‘ব্যানানা জাতের আম’ ধরা শুরু হয়েছে। পাশাপাশি এর শায়ন থেকে তৈরি করা চারাও রয়েছে পর্যাপ্ত। একদিকে জলবায়ুর খামখেয়ালিকে জয় করে চাষ পদ্ধতি নাগালের মধ্যে হবার কারণে, আবার আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা বার বার উঁকি দেয়ার ফলে, চাষীদের আগ্রহের কেন্দ্র বিন্দুতে চলে এসেছে আমটি। ৩শ থেকে সাড়ে চারশ’ গ্রামের এই আমটি একেবারে ব্যতিক্রম ধর্মী বৈশিষ্ট্যের কারণেই চাষীরা খুবই ভরসা নিয়ে বাগান করা শুরু করেছেন। যার কারণে হোদা মিঞা ৫ বিঘা, আনোয়ার ৩ বিঘা, পারুন সাড়ে সাত বিঘা বাগান করেছে। এরা হয়ত বা আগামী বছর ফলন পেতে পারে। এছাড়াও আরও ১১ চাষী বাগান করা শুরু করেছে। আগ্রহী হয়ে উঠেছে আরও ৫৩ চাষী। এ অঞ্চলে ফজলি শেষে কোন ভালজাতের আম থাকে না। যদিও কয়েক বছর ধরে গৌড় মতি বাজারে আসলেও কানসাট ও শিবগঞ্জে সীমাবদ্ধ। কৃষিবিদ ও গবেষক ড. সাইফুর রহমান জানান এসব কারণেই ব্যানানা জাত নিয়ে এত আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। ২০১০ সালে থাইল্যান্ড থেকে ডগা এনে হর্টিকালচার সেন্টারে গবেষণা শুরু করে। আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে গিয়ে ৩৬ মাস সময় নিয়ে ফেলে জাতটি। তারপর আসে গবেষণায় সাফল্য। ২০১৫ সালে সীমিত আকারে সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়। চলতি বছরে চারা বিতরণ করা হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। যার কারণে জমির পরিমাণ বেড়ে ৫০ বিঘাতে গিয়ে ঠেকেছে। ড. সাইফুরের আশাবাদ তারা এই সেন্টারের মাধ্যমে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে জাতটিকে সমগ্র দেশে ছড়িয়ে দিতে পারবেন। চাঁপাই হর্টিকালচারের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষি বিজ্ঞানী জহুরুল হক আশাবাদ ব্যাক্ত করে বলেন শুধু চারা বিতরণ নয়, কৃষকদের হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে ‘ব্যানানা : আমের চাষ উপযোগী প্রযুক্তি’।
×