ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

কার্ডিফে আজ আশরাফুল হতে পারবেন কি কেউ?

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৯ জুন ২০১৭

কার্ডিফে আজ আশরাফুল হতে পারবেন কি কেউ?

স্পোর্টস রিপোর্টার কার্ডিফ থেকে ॥ একযুগ আগে ২০০৫ সালে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে খেলে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই ম্যাচটিতে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জিতে। সেটি সম্ভব হয় কার নৈপুণ্যে? সবারই জানা মোহাম্মদ আশরাফুলের নৈপুণ্যে। আশরাফুলের ১০০ রানের ইনিংসে অসিরা হেরে যায়। বিশ্বকে কাঁপিয়ে দেয় বাংলাদেশ। জানান দেয়, ‘আমরা আসছি।’ একযুগ পর আজ সেই কার্ডিফে খেলবে বাংলাদেশ। এবার প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়ারই প্রতিবেশী দেশ নিউজিল্যান্ড। কিউইদের হারাতে হলে আশরাফুলময় ইনিংস কারও খেলা লাগবে। তাই প্রশ্নও উঠছে, এবার আশরাফুল হবেন কে? সেই সুখস্মৃতি জুড়িয়ে থাকা ম্যাচটিতে আগে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া ২৪৯ রান করেছিল। তখন ২৫০ রান করাও বাংলাদেশের জন্য কষ্টকর ছিল। তাও আবার অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে। তখন বল হাতে বিশ্ব শাসন করছেন গ্রেন ম্যাকগ্রা, জেসন গিলেস্পির মতো পেসাররা। এমন বোলিংয়ের সামনে ঠিকই আশরাফুল প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে যান। বাংলাদেশও ৪৯.২ ওভারে গিয়ে আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে ২৫০ রান করে জিতে। এখন সেই স্মৃতি সবারই মনে পড়ছে। কার্ডিফ আর আশরাফুল যে একসূত্রে গাঁথা। কার্ডিফে বাংলাদেশ একবারই খেলেছে। এরপর আজ দ্বিতীয়বার খেলবে। যতবারই এ স্টেডিয়ামে খেলবে বাংলাদেশ, ততবারই আশরাফুলের নামটি উচ্চারণ হবেই। যদি বাংলাদেশ আজ নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় কারও নৈপুণ্যে হারাতে পারে, তাহলে হয়ত আশরাফুলের নামের সঙ্গে আরও নাম যোগ হবে। কিন্তু সবার একটিই প্রশ্ন, আশরাফুল হতে পারবেন কে? সবার সামনে কয়েকটি নাম আসছে। প্রথম নামটি আসছে তামিম ইকবালের। দুর্দান্ত ফর্মে আছেন তামিম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯৫ রানের ইনিংস খেলেছেন। ব্যাট হাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্য আছে তামিমের। ব্যাটিং গড়ও খুবই ভাল। ২৯.৪৪ গড়ে ৫৩০ রান করেছেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান তামিমেরই। তামিমের পরেই মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের নামও সামনে আসছে। মুশফিক (৫০২) নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সবসময়ই ভাল খেলেন। তবে সাকিব যদিও এখন ফর্মে নেই। তবে শেষ মুহূর্তে ঝলক দেখিয়েও দিতে পারেন। আর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তো ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে যে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন, সেই সেঞ্চুরি মাহমুদুল্লাহর পক্ষে কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছে। এ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যে কোন একজন এখন বড় ইনিংস খেলে দিলেই হয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ জিতেও যেতে পারে। তখন আশরাফুলের অভাব অনুভূত হওয়া দূরও হয়ে যেতে পারে। অবশ্য ২০০৫ সালের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ পুরোই ভিন্ন দল। তখন বাংলাদেশ খেলত হার ঠেকানোর জন্য। পাশাপাশি বড়, শক্তিশালী দলকে হারিয়ে দেয়ার চেষ্টা করত। জিতলেই সেটি অঘটন হিসেবে ধরা হত। কিন্তু এখন বাংলাদেশ দল খেলে জয়ের জন্যই। সামনে যে দলই থাকুক, জেতার জন্যই খেলে বাংলাদেশ। ব্যাটিং-বোলিং সবদিকেই এখন শক্তিশালী বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে একাধিক ব্যাটসম্যান রয়েছেন। যারা যে কোন দিন প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। বল হাতেও বাংলাদেশের কাছে যথেষ্ট পুঁজি রয়েছে। যদিও এখনও সেইরকম কিছু বোলিংয়ে মিলছে না। তবে বল হাতে মুস্তাফিজুর রহমান তো যে কোন সময় প্রতিপক্ষের জন্য বিপজ্জনক নাম হয়ে উঠতে পারেন। এর পাশাপাশি আছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। পেস বোলারদের সঙ্গে স্পিন বোলাররাও বেশি উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারেন। সাকিব তো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সবসময়ই ভাল বোলিং করেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৫ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট সাকিবেরই। এরপর রুবেলও (২০ উইকেট) ভাল খেলেন। মাশরাফিও (১৭ উইকেট) কম যান না। এখন বাংলাদেশ ব্যাটসম্যান ও বোলাররা মিলে দলকে জেতাতে পারলেই হলো। তবে ইংল্যান্ডের উইকেটগুলোর আচরণ দেখে বোঝাই যাচ্ছে এখানে ব্যাটিংটাই আসল। তাই ব্যাট হাতে আশরাফুল এরআগে যা করেছেন, তা কে করতে পারবে; সেই প্রশ্নই উঠছে। প্রশ্ন উঠছে আজ আশরাফুল হতে পারবেন কে?
×