ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রিয়ালে রোমাঞ্চিত ‘সুখী’ জিদান

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ৩০ মে ২০১৭

রিয়ালে রোমাঞ্চিত ‘সুখী’ জিদান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কথায় আছে খেলোয়াড় হিসেবে সফল হলেও কোচ হিসেবেও যে সাফল্যের দেখা পাবেন তার কোন নিয়ম নেই। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম জিনেদিন জিদান। ফুটবল মাঠে খেলোয়াড় হিসেবে আলো ছড়িয়েছেন আরও আগেই। এখন রিয়ালের কোচ হিসেবেও অসাধারণ সব সাফল্য উপহার দিয়েছেন তিনি। গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ উপহার দেয়ার পর এবার স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা জেতাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন জিদান। তার সামনে এবার নতুন ইতিহাসের হাতছানি। প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা ধরে রাখার দারুণ সুযোগ। তবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সিলোনার রাজত্ব চুরমার করে রিয়াল মাদ্রিদকে লীগ চ্যাম্পিয়ন করাতে পেরে জিদান খুবই সন্তুষ্ট। এই দিনটিকে তার পেশাদার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সেরা দিন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ বিষয়ে আগামী মাসেই ৪৫ বছরে পা রাখতে যাওয়া জিনেদিন জিদান বলেন, ‘পেশাদার ক্যারিয়ারে এটাই (লা লিগা) আমার সবচেয়ে সেরা দিন।’ আগামী ৩ জুন, কার্ডিফের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে ইতালিয়ান জায়ান্ট ক্লাব জুভেন্টাসের মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ। হাইভোল্টেজ সেই ম্যাচের আগে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ জিদান জুভেন্টাসের অধিনায়ক জিয়ানলুইজি বুফন ও অভিজ্ঞ কোচ ম্যাসিমিলিয়ানো এ্যালেগ্রির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। পেশাদারিত্বের পোশাকে ইউরোপ সেরার টুর্নামেন্টে জুভেন্টাসের প্রতিপক্ষ হলেও এক সময় এই ক্লাবটি ছিল জিদানের আপনঘর। ইতালিয়ান ক্লাবটির ছবি তার হৃদয়ে আঁকা। হোক না প্রতিপক্ষ, জিদান কি সেই জুভেন্টাসকে বাঁকা কথা বলতে পারেন। কথার তীরে বিদ্ধ করতে পারেন সেই জুভেন্টাসের কোচ কিংবা খেলোয়াড়দের। যে কারণেই পেশাদারিত্বের পোশাক খুলে সাময়িক সময়ের জন্য বুফন-এ্যালেগ্রির ভক্ত বনে গেলেন জিদান। প্রতিপক্ষ জুভেন্টাসকে নিয়ে প্রশ্ন করতেই জিদান মেতে উঠলেন বুফনের উচ্ছ্বসিত প্রশংসায়। তিনি বলেন, বুফন একজন জন্মগত নেতা। সর্বকালের সেরা গোলরক্ষকদের একজন সে। ২০০১ সালে স্পেনের জায়ান্ট ক্লাব জুভেন্টাস ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন জিদান। ঠিক সেই বছরেই পার্মা ছেড়ে জুভেন্টাসে যোগ দেন বুফন। সেই থেকে গত ১৬ বছর ধরে আপন দক্ষতায় জুভেন্টাসের গোলবার আগলে যাচ্ছেন বুফন। দীর্ঘদিন ধরে ইতালিয়ান ক্লাবটির অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্বও পালন করছেন বুফন। পাশাপাশি ইতালি জাতীয় দলেরও অধিনায়ক বুফন। আর খেলোয়াড় এবং অধিনায়ক হিসেবে তার অর্জনও অনেক। সেই অর্জনের দিকে তাকিয়েই জিদান জুভেন্টাস অধিনায়কের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, ‘আমি মনে করি, সে যা অর্জন করেছে তা অবিশ্বাস্য। সে জন্মগত নেতা। ক্যারিয়ারজুড়েই অবিশ্বাস্য পারফর্মেন্স করে আসছে। সে শুধু অসাধারণ একজন অধিনায়কই নয়, মাঠেরও নেতা সে।’ বুফনের পাশাপাশি জুভেন্টাস কোচ এ্যালেগ্রির প্রতিও জিদানের শ্রদ্ধার কমতি নেই। ২০১৪ সালে এ্যান্তোনিও কন্তে চলে যাওয়ার পর কোচের দায়িত্ব নেয়ার পর গত তিন মৌসুমে জুভেন্টাসকে সব মিলে ৭ শিরোপা উপহার দিয়েছেন এ্যালেগ্রি। এর মধ্যে তিন মৌসুমেই ক্লাবকে জিতিয়েছেন লীগ আর কোপা ইতালিয়ানা শিরোপা। একবার জিতেছেন সুপার কোপা ইতালিয়ানার শিরোপাও। যা দেখে জিদান এ্যালেগ্রিকে দিলেন বিশ্বের সেরা কোচের মর্যাদা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তার অর্জনই তার হয়ে কথা বলছে। তিনি এরই মধ্যে নিজেকে বিশ্বের শীর্ষ কোচদের একজন হিসেবে প্রমাণ করেছেন।’ ৪৮ বছর বয়সী এ্যালেগ্রি জুভেন্টাসকে দল হিসেবেও সুসংগঠিত করেছেন বলে দাবি জিদানের। তার মতে, ‘তিনি দলটিকে পুনর্গঠিত করেছেন। তার অধীনে দল হিসেবে এই জুভেন্টাস দলটি অনেক উন্নতি করেছে।’ শুধু তাই নয়, ক্লাব জুভেন্টাসেরও প্রশংসা করেছেন জিদান। বলেছেন যোগ্য দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে জুভেন্টাস। শিরোপা জয়ের সামর্থ্য আছে তাদেরও।
×