ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কোমিকে সরিয়ে ভারমুক্ত ট্রাম্প!

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ২১ মে ২০১৭

কোমিকে সরিয়ে ভারমুক্ত ট্রাম্প!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি মাসের ১০ তারিখে রুশ কূটনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠককালে এর আগের দিন বরখাস্তকৃত এফবিআই প্রধানের ‘রুচিহীন’ সমালোচনা করেছেন। ওই বৈঠকের লিখিত স্ক্রিপ্টে উল্লেখ আছে যে, সাবেক এফবিআই প্রধান কোমিকে ট্রাম্প ক্ষ্যাপাটে বা উন্মাদ ব্যক্তি বলে অভিহিত করেন। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “তাকে সরিয়ে দেয়ায় আমার ওপর থেকে ‘মারাত্মক চাপ’ কমে গেছে।” খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে বা নির্বাচন চলাকালে রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার দলের কোন গোপন যোগাযোগ হয়েছিল কিনাÑ এ ব্যাপারে কোমি যখন তদন্তকাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাকে আকস্মিকভাবে এফবিআই পরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে দেন ট্রাম্প। সে সময় ট্রাম্প তাকে বরখাস্ত করার যুক্তি দেখিয়েছেন যে, কোমি নির্বাচনের আগে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল সংক্রান্ত ঘাপলা নিয়ে সঠিকভাবে তদন্ত করেননি এবং আরও কিছু খোঁড়া যুক্তিÑ যা কেউ বিশ্বাস করেনি। এতদিন ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচনের সময় রাশিয়ার সঙ্গে কোন ধরনের যোগাযোগের কথা অস্বীকার করে এসেছেন। কোমিকে বরখাস্ত করার পরের দিন হোয়াইট হাউসে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে ট্রাম্প এক বৈঠকে মিলিত হন। তাদের সঙ্গে আলোচনাকালে ট্রাম্প বলেন, “আমি এফবিআই প্রধানকে এজন্য বরখাস্ত করেছি যে, সে সত্যিকারার্থেই এক ‘উন্মাদ’ ব্যক্তি।” তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়াকে নিয়েÑ বিশেষ করে সে দেশের সঙ্গে ইউক্রেন, সিরিয়া ও ইসলামিক স্টেটসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমি মারাত্মক চাপের মধ্যে ছিলাম। সে চাপ এখন সরে গেছে।’ ট্রাম্প এ সময় তার স্বদেশী কোন গণমাধ্যমকে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে দেননি। কিন্তু রুশ বার্তা সংস্থা তাসে বৈঠকের সচিত্র খবর ছাপা হয়েছে। ‘কোমি’-কে উন্মাদ ব্যক্তি বলে ট্রাম্প কি কোমিকে ছোট করলেন, না নিজেকে ছোট করলেন? একজন দেশের প্রেসিডেন্ট তার বরখাস্তকৃত অধস্তন ব্যক্তির দোষের ফিরিস্তি দিচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বী আরেকটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতের কাছে। আবার সেই রাষ্ট্রদূত কিসলিয়াক যে কি-না ভোটের আগে-পরে সব সময় বিতর্কিত ও রহস্যময় কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ আছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এ আচরণে জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকের মতে এ বৈঠকের মাধ্যমে একটি দেশের প্রেসিডেন্ট অন্য দেশের কূটনীতিকদের কাছে তার দায়বদ্ধতার ফিরিস্তি নমনীয়ভাবে উপস্থাপন করছেন। এ বৈঠকেই তিনি ইসলামিক টেস্ট সম্পর্কে ইসরাইলের দেয়া গোপন তথ্য রাশিয়ার হাতে তুলে দেন। এসব ব্যাপারে তথ্য জানার অধিকার যুক্তরাষ্ট্রবাসীর আছে বলে ডেমোক্র্যাট দলীয় সদস্য এলিজা ই, কামিংস হোয়াইট হাউসের এ বৈঠক সংক্রান্ত সব তথ্য সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন। এদিকে সমগ্র ট্রাম্প প্রশাসন ‘বাঙ্কারে আশ্রয়গ্রহণ’ নীতিগ্রহণ করেছে। কেননা ট্রাম্প প্রশাসন বা রিপাবলিকান কর্তাব্যক্তিদের কোন গণমাধ্যম বা অন্য কোন ফোরামে আলোচনা বা কথা বলার জন্য ডাকলে সবাই পলাতক নীতি গ্রহণ করে এড়িয়ে যাচ্ছেন।
×