ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাইবার অপরাধীদের কাছে বিটকয়েন কেন গ্রহণযোগ্য

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ১৯ মে ২০১৭

সাইবার অপরাধীদের কাছে বিটকয়েন কেন গ্রহণযোগ্য

সাইবার অপরাধীদের র‌্যানসামওয়্যার হামলায় নাস্তানাবুদ গোটা দুনিয়ার কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা। গত শুক্রবার থেকে এ হামলায় এশিয়া-ইউরোপের শ’খানেক দেশের তিন লাখেরও বেশি কম্পিউটার আক্রান্ত হয়েছে। বহু নথি জিম্মি করেছে হ্যাকাররা। ভাইরাস ছড়িয়ে কম্পিউটার থেকে নথিপত্র হাতিয়ে অর্থের বিনিময়ে তা ফেরত দেয়া হয়। আর এ ভাইরাসকেই বলা হয় র‌্যানসামওয়্যার। এবারে সে ভাইরাস ভেদ করার কোড জানানোর জন্য মাথাপিছু ৩০০ ডলার বিটকয়েন চেয়েছে অপরাধীরা। বিটকয়েন কী ॥ বিটকয়েন হলো এক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা বা সাঙ্কেতিক মুদ্রা (ক্রিপ্টো কারেন্সি)। ডলার কিংবা ইউরোর বিনিময়ে বিটকয়েন বেচাকেনা যায়। ঠিক অন্যান্য দেশের মুদ্রার মতোই এ বেচাকেনা। এটি অনলাইন ওয়ালেটে জমিয়ে রাখা যায়। এছাড়াও ভার্চুয়াল জগতের বাইরেও বিভিন্ন সেবা অনলাইনে বিটকয়েন খরচ করে পাওয়া যায়। বিটকয়েনে আলাদা কী আছে ॥ বিটকয়েন লেনদেনে অর্থনৈতিক বা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের দরকার পড়ে না। গতিবিধিও অনুসরণ করা সম্ভব নয়, তাই বিটকয়েন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। হ্যাকররা সে সুবিধা নিতে বিটকয়েনের বিনিময়ে তথ্য ফেরত দিচ্ছে। কিভাবে কাজ করে ॥ গ্রাহক থেকে গ্রাহকের কম্পিউটারে বিটকয়েনের লেনদেন চলে। ব্যাংক কিংবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো লেনদেনের সুযোগ নেই বিটকয়েনে, যে কারণে এতে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নজর দেয়ার সুযোগ নেই। বিটকয়েনের লেনদেন ঘটে অনলাইনের একটি উন্মুক্ত সোর্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে। বিটকয়েন মাইনারের মাধ্যমে যে কেউ বিটকয়েন তৈরি করতে পারেন। এটি তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া সব সময় সীমিত ও অনুমানযোগ্য। বিটকয়েন তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি গ্রাহকের ডিজিটাল ওয়ালেটে জমা হতে থাকে। এ সংরক্ষিত বিটকয়েন যদি অন্য কারও এ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়, তাহলে এ লেনদেনের জন্য একটি স্বতন্ত্র সই তৈরি হয়ে যায়, যা নেটওয়ার্কের মধ্যে গোপন অথচ সুরক্ষিত থাকে। একই সঙ্গে গ্রাহকের ওই সময়ের অনলাইনের হিসাব সংক্রান্ত তথ্যাবলী হালনাগাদ হতে থাকে। বিটকয়েন দিয়ে পণ্য কেনা হলে তা বিক্রেতার এ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। বিক্রেতা ওই বিটকয়েন দিয়ে ফের পণ্য কিনতে পারেন। অন্যদিকে সমপরিমাণ বিটকয়েন ক্রেতার লেজার থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। প্রতি চার বছর পর বিটকয়েনের মোট সংখ্যা পুনঃনির্ধারণ করা হয়, যাতে বাস্তব মুদ্রার সঙ্গে মিলা রাখা যায়। বিটকয়েনের কারণেই সাইবার অপরাধ বেড়েছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার। কিন্তু এ থেকে নিস্তার কিভাবে আসবে তা বাতলানো সম্ভব হয়নি। তবে বলা হচ্ছে, বিটকয়েনে লেনদেনকারীর পরিচয় জানা গেলেও গ্রাহকের এ্যাকাউন্টের হিসাব দিয়ে তদন্ত চালিয়ে বিটকয়েনের গতিবিধি জানা যাবে। এভাবে অপরাধীর গতিবিধিও জানা যেতে পারে। -নিউইয়র্ক টাইমস অনলাইন
×