ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খুলছেন না তারা, নতুন তদন্তের ভার এফবিআই’র সাবেক পরিচালকের ওপর

কুলুপ এঁটেছেন রিপাবলিকানরা

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ১৯ মে ২০১৭

কুলুপ এঁটেছেন রিপাবলিকানরা

ওয়াশিংটনের নীতি নির্ধারক মহলে অনেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ঘটনাকে প্রবাহকে ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির সঙ্গে মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু হোয়াইট হাউস কর্মকর্তরা মনে করেন, তারা এ যাত্রায় বেঁচে গেছেন। কংগ্রেসে সিদ্ধান্ত নেয়ার মতো ভাল অবস্থানে পৌঁছে গেছেন রিপাবলিকানরা। তবে এটাও বলা যাবে না যে তারা বিদ্রোহ করে বসে আছেন। বরং গণমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়া থেকে রহস্যজনকভাবে দূরে আছেন। পরিবেশটা এমন হয়ে আছে, তারা যেন দেশপ্রেমের গান গেয়ে এ সঙ্কট থেকে রেহাই পাওয়ার চেষ্টা করছেন। খবর সিডনি হেরাল্ড মর্নিংয়ের। এদিকে রুশ-ট্রাম্প যোগসাজশের তদন্ত পরিচালায় বিশেষ পরামর্শক হিসেবে এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক রবার্ট মুলারকে নিয়োগ দিলে ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক পরিবেশ কিছুটা পরিবর্তন ঘটে। রবার্ট মুলার একজন আইনজীবী। এক যুগ আগে তিনি এফবিআইয়ের পরিচালক ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জনগণের স্বার্থেই প্রশাসনের বাইরে থেকে মুলারকে তদন্তভার দেয়া হয়েছে। ওয়াশিংটনের রাজনীতির প্রাণশক্তি যদি হয় গণমাধ্যমের সম্প্রচার, তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফক্সনিউজের উল্লেখ করার মতো একটি ঘটনা আছে। ক্যামেরার সামনে সঞ্চালক ব্রেট রেইয়ার দর্শকদের বলেন, আজ রাতে রিপাবলিকানদের সবার সামনে আনতে ও তাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে কথা বলার চেষ্টা চালিয়েছি, কিন্তু তাদের কেউই রাজি হননি। বুধবার সকালে সিবিএস নিউজ একই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে। সিবিএসের ‘দিস মর্নিং’ অনুষ্ঠানের সঞ্চালক চার্লি রোজ বলেন, তারা প্রায় দুই ডজন রিপাবলিকান নেতাকে তাদের প্রোগ্রামে আসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু সবাই এককথায় নাকচ করে দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়, আরও বিস্ময়কর ঘটনা হলো, ট্রাম্প তার পছন্দের ‘ফক্স এ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ অনুষ্ঠানে আসার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন। হোয়াইট হাউস কর্মকর্তাদের সন্দেহ, এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্তের পরবর্তী ঘটনা নিয়ে ভাষ্য ও বিশ্লেষণ প্রচারে সকল অনুষ্ঠান সঞ্চালক একই নায়ের মাঝি। রাশিয়ার সঙ্গে যোগসাজশের তদন্ত বাদ দিতে এফবিআই পরিচালককে চাপ দিয়েছিলেন বলে কোমির ফাঁস হওয়া মেমো থেকে জানা গেছে। এছাড়া রাশিয়ার কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য পাচারের খবর প্রচার হওয়ায় ট্রাম্প বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে গেছেন। কিন্তু ট্রাম্প এত ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন যে তিনি চেষ্টা করলেও আড়ালে যেতে পারছেন না। যেমন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মস্কো কি তাকে সাহায্য করেছিল, তিনি কিংবা তার কোন সহযোগী কি তাতে সহায়তা করেছিল, প্রেসিডেন্ট কি এফবিআইয়ের তদন্ত বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছিলেন, ট্রাম্পের সম্পদই সবার আগে, তিনি কি কোমির আনুগত্য দাবি করেছিলেন, যে কারণে তাকে বরখাস্ত করতে হয়েছিল। এমন নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছেন ও দিচ্ছেন এই এক ট্রাম্প। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন পোস্ট ক্যাপিটল হিলের একটি কথোপকথনের টেপ হাতে পেয়েছে। যাতে গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে প্রতিনিধি পরিষদে রিপাবলিকান নেতা কেভিন ম্যাকার্থি দাবি করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের কাছ থেকে ট্রাম্প অর্থ পেয়ে থাকতে পারেন। ম্যাকার্থি বিস্তারিত বলার আগেই তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে রিপাবলিকান হাউস স্পিকার পল রায়ান উপস্থিত সবার কাছ থেকে বিষয়টি গোপন রাখার প্রতিশ্রুতি নেন। তিনি বলেন, এ তথ্য আমার কিভাবে জেনেছি, তা কোনভাবেই ফাঁস করা যাবে না। আমরা এখানের সবাই একই পরিবারের। যদিও পল রায়ানের কার্যালয় থেকে প্রাথমিকভাবে এ আলোচনার কথা অস্বীকার করা হয়েছে। পল রায়ানের এক মুখপাত্র এটাকে লোক হাসানোর ব্যর্থ চেষ্টা বলে আখ্যায়িত করেন।
×