ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বয়সের কারণে পরিহাসের শিকার ফ্রান্সের ফার্স্টলেডি ব্রিজিত

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১৫ মে ২০১৭

বয়সের কারণে পরিহাসের শিকার  ফ্রান্সের ফার্স্টলেডি ব্রিজিত

ফ্রান্সের নতুন ফার্স্টলেডি সাময়িকীগুলোতে বিদ্রƒপের শিকার হচ্ছেন প্রচ-ভাবে। মূল কারণ তিনি তার স্বামীর চেয়ে বয়সে ২৫ বছরের বড়। ব্যাঙ্গ সাময়িকী ‘শার্লি হেবদো’ মঙ্গলবার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রীকে পরিহাস করে একটি প্রচ্ছদ ছেপেছে। সামাজিক মিডিয়ায় অনেকেই প্রচ্ছদটিকে স্রেফ যৌনতা ও বয়সের দিক থেকে বৈষম্যমূলক বলে তীব্র সমালোচনা করেছেন। মাত্র এক সপ্তাহ হয়েছে রাজনীতিতে নবাগত ৩৯ বছর বয়স্ক ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জয়ী হয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। কিন্তু তার ৬৪ বছর বয়স্ক স্ত্রী ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ অব্যাহতভাবে সম্মুখীন হচ্ছেন এক দীর্ঘ, বিরক্তিকর নারীবিদ্বেষী মন্তব্যের। মন্তব্যগুলোর অধিকাংশই এ দম্পতির মধ্যে ২৫ বছর বয়সের ব্যবধান-সম্পৃক্তি। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের মন্তব্য এসেছে নির্বাচনী প্রচারাভিযানের পুরোটা সময়জুড়েই। এ দম্পতিকে উপহাস করে শার্লি হেবদোতে প্রকাশিত প্রচ্ছদের ক্যাপশন লেখা হয়েছে, তিনি (প্রেসিডেন্ট) অলৌকিক কিছু করতে যাচ্ছেন। মূল অংশটি এক বিভেদ সৃষ্টিকর নির্বাচনে ম্যাক্রোঁর আশাবাদী প্রচারাভিযান বার্তা সম্পৃক্ত। কিন্তু চিত্রে দেখা যায়, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট তার একটি হাত রেখেছেন তার অন্তঃসত্ত্বা’ স্ত্রীর পেটের ওপর। এটা দেশের ফার্স্ট কাপলের বয়সগত ব্যবধানের প্রতি এক স্পষ্ট শ্লেষ। ম্যাক্রোঁর স্ত্রী নিজে প্রচ্ছদের জবাবে টুইটে বলেছেন, কৌশল বা প্রযুক্তিগতভাবে সম্ভব সবকিছুই ইপ্সিত বা কাম্য নয়। এ সংযত সাড়ার জন্য প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। এক টুইটার ব্যবহারকারী বলেছেন, আপনার এ বসবোধের জন্য শাবাশ। ম্যাক্রোঁ ও তার স্ত্রী কীভাবে পরস্পরের সান্নিধ্যে এসেছিলেন সে ঘটনা এখন ফ্রান্স ও অন্যত্র সুবিদিত। তাদের মধ্যে যখন প্রথম সাক্ষাত ঘটে তখন ম্যাক্রোঁর বয়স মাত্র ১৫ বছর। তার স্ত্রী ছিলেন হাইস্কুলে তার নাটকের শিক্ষিকা। তিনি ছিলেন তখন তিন সন্তানসহ এক বিবাহিত নারী। দুই বছর পর, ম্যাক্রোঁ তার প্রেমে পড়েছেন বলে জানান। বয়সের ব্যবধান ও সামাজিক রীতিনীতি সত্ত্বেও তিনি শেষ পর্যন্ত স্বামীকে ত্যাগ করে ম্যাক্রোঁকে পাওয়ার জন্য। তিনি বলেছেন, প্রেম সবসময় এর নিজস্ব পথ ধরেই চলে এবং আমি বিচ্ছেদ নিতে বাধ্য হলাম। নিউইয়র্ক টাইমস বলেছে, ম্যাক্রোঁ গত বছর সাময়িকী প্যারিস ম্যাচকে বলেছেন, আমার সামনে কোন বাধাই অপ্রতিরোধ্য ছিল না। এ নারী ২০০৬ সালে তার স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটনা এবং ২০০৭ সালে ম্যাক্রোঁকে বিয়ে করেন। তাদের রোমান্সের ওপর নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় প্রধান শিরোনামে অসংখ্য সংবাদ পরিবেশন করেছে টেবলয়েড পত্রিকাগুলো। কিন্তু তা সত্ত্বেও গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সুদূর ডানপন্থী ম্যারিন লি পেনকে পরাজিত করে বিজয় অর্জনে কোন বাধার সম্মুখীন হননি ইমানুয়েল ম্য্যাক্রোঁ। ওয়াশিংটন পোস্টের ম্যারি জর্ডন বলেছেন, নির্বাচনে বয়সের ব্যবধান কোন ইস্যু ছিল না বিশেষ করে ফরাসী নারীদের কাছে। নির্বাচনের আগে, প্যারিসে এক দোকানি বলেন, দাম্পত্য জীবনে কম বয়সী নারীদের সঙ্গে বেশি বয়সী পুরুষদের স্বাভাবিক দৃষ্টিতেই দেখে মানুষ। ম্যাক্রোঁ জয়ী হওয়ার পরও সামাজিক মিডিয়াগুলোতে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে সমালোচনা থামেনি। তারপরও মাদাম ম্যাক্রোঁ ও তার প্রথম স্বামীর ঔরসজাত ৩২ বছর বয়স্ক কন্যা তিফাইন অজিয়ারের প্রতি সমর্থন রয়েছে অনেকেরই। আজিয়াবে বলেছেন, এর কারণ ঈর্ষা। এ ঈর্ষার কারণেই তার মার বিরুদ্ধে ঘৃণা উস্কে দিচ্ছে। এটা তো সাধারণ ঘটনা, দাম্পত্য জীবনে এক নারী পুরুষটির চেয়ে বেশি বয়স্ক। ম্যাক্রোঁ ও তার স্ত্রীর মধ্যে বয়সের ব্যবধান ২৪ বছর। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার স্ত্রী মেলানিয়ার মধ্যে যে বয়স-ব্যবধান রয়েছে তা তো পৃথক কোন ঘটনা নয়। Ñনিউইয়ক টাইমস/এনডিটিভি।
×