ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর অভিমত

শির সঙ্গে ট্রামের সখ্যে অনিবার্য ধ্বংসের বীজ!

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৬ মে ২০১৭

শির সঙ্গে ট্রামের সখ্যে  অনিবার্য ধ্বংসের বীজ!

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ব্যক্তিগত স্টাইলে বিশাল ভিন্নতা থাকলেও মিলও রয়েছে বেশি কিছু বিষয়ে। তারা দু’জনই জন্মেছেন সমৃদ্ধির মধ্যে। দু’জনই অসীম আত্মবিশ্বাসের অধিকারী। প্রত্যেকেই তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের কাছ থেকে পরামর্শ চান এবং তাদের সরকারের বড় আমলাদের তুচ্ছজ্ঞান করেন। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। ট্রাম্প বিশ্বনেতাদের সম্পর্কে আবেগপ্রবণ প্রশংসা করেন না, এটাই জানা কথা। কিন্তু তিনি গত সপ্তান্তে সিবিএসের ‘ফেস দ্য ন্যাশন’ অনুষ্ঠানে এক সাক্ষাতকারে বলেছেন যে, চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুবই বিশেষ ধরনের ও খুবই ভিন্ন রকমের যেমনটা আগে ছিল না এবং এ সম্পর্ক প্রশংসিত হয়েছে এর মধ্যে। তিনি জিনপিংকে এই বলে আখ্যায়িত করেছেন যে, ‘তিনি আমার কাছে এমন একজন মানুষ যাকে পছন্দ ও শ্রদ্ধা করা যায়। কিন্তু চীনের বিশ্লেষকরা বলেছেন। এ আন্তরিক ও মাধুর্যম-িত আচরণের আড়ালে কৌশলগত স্বার্থে যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে তা যে কোন ব্যক্তিগত সম্পর্ককে নস্যাত করে দিতে পারে। ট্রাম্প বলেছেন, তিনি চীনা নেতার বিষয়ে দ্রুতগতিতে সামনে বেড়ে গেছেন। তারা বলেন, এ রোমাঞ্চ এক অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত ও সুবিধার মিলন হতে পারে। চীনে ট্রাম্পের প্রকাশ্য ভাবপ্রবণতা নামমাত্র পারস্পরিক। রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম বলেছে ট্রাম্পকে চমৎকার কভারেজ দেয়ার বিষয়টি আভাস দিচ্ছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখার জন্য মার্কিন সরকার সাময়িকের জন্য চীনের মানুষকে পছন্দের দৃষ্টিতে দেখবে। বৈদেশিক নীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, জিনপিংয়ের প্রতি ট্রাম্পের তোষণ ও চীনা নেতার ওপরে তার নির্ভরশীলতা উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচীর বিরুদ্ধে হুমকিস্বরূপ। ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার প্রধান বাণিজ্য অংশীদার ও একমাত্র বড় সহযোগী চীন তার অবাধ্য প্রতিবেশীর ওপর অভিযান চালালে তিনি বাণিজ্য চুক্তিতে আরও সুবিধা দেবেন। তিনি গত সপ্তাহান্তে বলেন, আমার সোজাসুজিভাবেই মনে হয় যে, উত্তর কোরিয়া বাণিজ্য সুবিধা থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ত বা! সার কথা হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের ওপর সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। যাতে করে তিনি তার পরমাণু কর্মসূচী ত্যাগ করেন অথবা অন্তত ওয়াশিংটনের শর্তে আলোচনায় সম্মত হন। বিশ্লেষকরা বলেছেন, শি জিনপিং উত্তর কোরিয়ায় কয়েকটি চীনা কোম্পানির কর্মকা-, সকল কোম্পানির নয়, ছেঁটে ফেলার পদক্ষেপ নিতে পারেন। এ কোম্পানিগুলো পিয়ংইয়ংকে এর অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা করছে। তারা বলেন, তিনি কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনকি চীন থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেবেন যা দেশটির অর্থনীতি বাঁচিয়ে রেখেছেন। কিন্তু তা হলেও তা হবে কেবল এক সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এক মন্তব্যে বুধবার বলেছে যে, দেশটি এর পরমাণু কর্মসূচী অব্যাহত রাখবে এমনকি চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি আসলেও। উত্তর কোরিয়ার কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি বলেছে, পিয়ংইয়ং-এর পরমাণু কর্মসূচীকে ঝুঁকিতে ফেলে চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে চাইবে না কখনও। এ কর্মসূচী দেশের জন্য মূল্যবান। বন্ধুত্ব যতই মূল্যবান হোক না কেন তাতে কিছু যায় আসে না।
×