ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডো ঝলকে রেকর্ড টানা সাতবার সেমিতে রিয়াল

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২০ এপ্রিল ২০১৭

রোনাল্ডো ঝলকে রেকর্ড টানা সাতবার সেমিতে রিয়াল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরও একবার জ্বলে উঠলেন সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তাতেই শঙ্কা কাটিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের সেমিফাইনালে উঠে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার রাতে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে জার্মান জায়ান্ট বেয়ার্ন মিউনিখের মুখোমুখি হয়েছিল স্বাগতিক রিয়াল। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় রিয়ালকে ২-১ গোলে হারায় বেয়ার্ন। এরপরও সেমিতে যেতে পারেনি বাভারিয়ানরা। কেননা ১২ এপ্রিল মিউনিখে শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচে একই ব্যবধানে জিতেছিল রিয়াল। যে কারণে দুই লেগ মিলিয়ে ম্যাচে সমতা (৩-৩) বিরাজ করে। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানে আরও তিন গোল করে শঙ্কা কাটিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল। অর্থাৎ ১২০ মিনিটের ম্যাচে রিয়ালের জয় ৪-২ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে জয়ের ব্যবধান ৬-৩ গোলে। এই নিয়ে রেকর্ড টানা সপ্তমবারের মতো ইউরোপ সেরার আসরে সেমিফাইনালে নাম লেখালো রিয়াল। অন্যদিকে আরেকবার স্প্যানিশ ক্লাবের কাছে হেরে বিদায় নিতে হলো বেয়ার্নকে। ২০১৩ সালের পর প্রতিবারই রিয়াল, বার্সিলোনা কিংবা এ্যাটলেটিকোর কাছে হেরে থামতে হয়েছে বাভারিয়ানদের। একই রাতে সেমিফাইনালে উঠেছে স্পেনের আরেক ক্লাব এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। শেষ আটের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন লিচেস্টার সিটির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে দিয়াগো সিমিওনের দল। প্রথম লেগে লা লিগার দলটি জিতেছিল ১-০ গোলে। দুই লেগ মিলিয়ে এ্যাটলেটিকোর জয় তাই ২-১ গোলে। এর ফলে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলতে আসা লিচেস্টারের রূপকথার ইতি ঘটলো। প্রথম লেগে ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকায় রিয়ালের ঘরের মাটিতে বাঁচামরার ম্যাচে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে বেয়ার্ন। তবে আক্রমণের শুরুটা করে রিয়ালই। খেলার পঞ্চম মিনিটে বেয়ার্নের ডি বক্সে ঢুকে পড়েন বেলের অনুপস্থিতিতে মাঠে নামা ইস্কো। এ সময় বেয়ার্নের চিলিয়ান ফরোয়ার্ড আর্টুরো ভিদাল তাকে বাজেভাবে ট্যাকল করলে হলুদ কার্ড দেখেন। ম্যাচের নবম মিনিটে রিয়ালকে বাঁচিয়ে দেন মার্সেলো। থিয়াগোর শট রিয়ালের গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে ফাঁকি দিলেও ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার বিপদমুক্ত করেন। ম্যাচের ২৭ মিনিটে একইভাবে রিয়ালের দারুণ আক্রমণ রুখে দেন অতিথি ডিফেন্ডার জেরোমে বোয়েটাং। এর চার মিনিট পর গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নিউয়েরের ভুলে গোল পেতে পারত রিয়াল। তবে করিম বেনজামার গায়ে লাগা বলটা গোলপোস্টের বেশ খানিকটা পাশ দিয়ে চলে যায়। এরপর ৩৭ মিনিটে রোনাল্ডোর শট সহজে রুখে দেন বেয়ার্ন গোররক্ষক। প্রধমার্ধটা শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। বিরতির পর খেলা আরও জমে ওঠে। ৫৩ মিনিটে পুরো মাদ্রিদ সমর্থকদের থমকে দিয়ে বেয়ার্নকে এগিয়ে নেন রবার্ট লেভানডোস্কি। রিয়ালের ডি বক্সে কাসেমিরোর ফাউলের শিকার হন আরিয়েন রোবেন। পেনাল্টি থেকে গোল করে বেয়ার্নকে এগিয়ে নেন পোলিশ স্ট্রাইকার লেভখা। গোল হজম করে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে রিয়াল। তবে জুতসই আক্রমণ না হওয়ায় গোল পাচ্ছিল না স্পেনের দলটি। ৭৬ মিনিটে দারুণ হেডে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান রোনাল্ডো। তবে রিয়ালের আনন্দটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। দুই মিনিট পরই অধিনায়ক সার্জিও রামোসের আত্মঘাতী গোলে আবারও পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। এ সময় দুই লেগ মিলিয়ে গোল ব্যবধান হয় ৩-৩। নির্ধারিত সময়ে গোলের সুযোগ পেলেও গোল করতে পারল না কোন দলই। ফলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। এর আগে ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ভিদাল দ্বিতীয় হলুদ দেখলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বেয়ার্ন। তাই বাড়তি ৩০ মিনিটে আর রিয়ালের সঙ্গে পেরে ওঠেনি জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। ১০৫ মিনিটে রামোসের দেয়া বল বুক দিয়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গোল করেন রোনাল্ডো। পাঁচ মিনিট পর ফের গোলের আনন্দে মাতেন সি আর সেভেন। ডি বক্সের ভেতরে মার্সেলোর দারুণ পাসে গোল করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন এই তারকা ফুটবলার। এটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগে রোনাল্ডোর শততম গোল। এই গোলটি মার্সেলো নিজেই করতে পারতেন। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মাঝমাঠ থেকে একাই বল নিয়ে চারপাঁচজন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বিপদসীমানায় ঢুকে পড়েন। সামনে শুধু গোলরক্ষক থাকলেও নিজে গোল না করে রোনাল্ডোকে দিয়ে করান মার্সেলো। ১১২ মিনিটে তরুণ স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মার্কো আসেনসিও মাঝমাঠ থেকে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে গোল করে বেয়ার্নের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন। এর আগের চারটি স্পেন সফরে একটি গোলও না করে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা এবার দুই গোল করলেও বিদায় রুখতে পারেনি।
×