ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কাজ করবে ট্রাম্প প্রশাসন

শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ১৯ এপ্রিল ২০১৭

শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। এ উদ্দেশ্যে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কাজ করতে চায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। জাপান সফররত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স মঙ্গলবার এ কথা বলেছেন। তবে তিনি এটি জানিয়েছেন, পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের সামনে সবগুলো বিকল্পই খোলা রয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসি নিউজের। টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে বৈঠকে পেন্স বলেন, ‘জাপান সাগরে উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে জাপানের জনসাধারণ এখন যে উদ্বেগের মধ্যে সময় পার করছে, সে বিষয়টি আমরা উপলব্ধি করি। আমার শতভাগ জাপানের সঙ্গে আছি।’ জবাবে আবে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির পটভূমিতে যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান নিয়েছে তার প্রশংসা করেন। বিশেষ করে উত্তর কোরিয়াকে মোকাবেলায় সবগুলো বিকল্প খোলার নীতিতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি উত্তেজনা নিরসনে কূটনৈতিক তৎপরতা গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন। আবে বলেন, তিনি পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সংলাপ চান। তবে সংলাপের জন্য সংলাপ চালিয়ে অপ্রয়োজনীয় সময় নষ্ট করার বিষয়ে তিনি সতর্ক করে দেন। দুই নেতার মধ্যে বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ছাড়াও দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং ওই এলাকায় মার্কিন রণতরী মোতায়েনের বিষয়টি স্থান পায়। জাপানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্কই যে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার মূল ভিত্তি, পেন্স আবের কাছে সে কথা পুনরায় উল্লেখ করেন। হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে আবের যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ট্রাম্প ও আবে যে নতুন জাপান-মার্কিন অর্থনৈতিক সংলাপ ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে আলোচনা শুরু করেন তাতে গতি সঞ্চারিত করা পেন্সের এ সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল। পেন্সের এ সফরের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল জাপানী বাজারে যুক্তরাষ্ট্রের আরও বেশি করে ঢোকার সুযোগ নিশ্চিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রেও জাপানের বিনিয়োগ বাড়ানো। পেন্স এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১০ দিনের সফরে রয়েছেন। সফরে শেষপর্যায়ে তিনি ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া যাবেন। দক্ষিণ কোরিয়া সফরের পুরো সময়টা উত্তর কোরিয়া ইস্যুটি প্রাধান্য বিস্তার করে রাখে। সিউলে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতি অনুসারে যুুক্তরাষ্ট্রের নয়া প্রশাসন এখন বিদ্যমান সব বাণিজ্য চুক্তি পর্যালোচনা করে দেখছে। তিনি বলেন, ‘চুক্তিগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি এটি দেখার জন্য যে, চুক্তিগুলো আমাদের বা আমাদের বাণিজ্যিক অংশীদারদের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করে কি-না।’ জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে উত্তর কোরিয়া একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে যাচ্ছে। এছাড়া দেশটি পরমাণু পরীক্ষাও চালিয়েছে। দেশটির সবশেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাটি অবশ্য ব্যর্থ হয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়তে থাকার মধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে উত্তর কোরিয়া। সোমবার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী হান সংরিয়ল বিবিসিকে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সাপ্তাহিক, মাসিক ও বাৎসরিক ভিত্তিতে আমরা আরও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করব। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কোন সমারিক পদক্ষেপ নিলে তা সর্বাত্মক যুদ্ধের রূপ নেবে।’ তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হুমকির প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়ার নিজের পরমাণু অস্ত্র রক্ষা করার অধিকার রয়েছে। সোমবার জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি কিম ইন রিয়ং সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানান। সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত একটি শহরে কথিত রাসায়নিক হামলার জেরে সিরিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলাটি চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিঘিœত করছে।’
×