ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টেলিগ্রাফের সঙ্গে সাক্ষাতকারে প্রিন্স হ্যারি

মায়ের স্মৃতি ভুলতে শৈশব থেকেই নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলছি

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ১৮ এপ্রিল ২০১৭

মায়ের স্মৃতি ভুলতে শৈশব থেকেই নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে চলছি

ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লস ও ডায়ানার কনিষ্ঠ পুত্র প্রিন্স হ্যারি তার মায়ের দুঃখজনক মৃত্যুর পর মানসিকভাবে দারুণ ভেঙ্গে পড়েন এবং বিগত বছরগুলোতে অসহ্য মনোকষ্টে ভোগেন। এ নিয়ে সোমবার দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে প্রিন্স হ্যারি তার দুঃখী জীবনের নানা অধ্যায়ের কথা বর্ণনা করেছেন। জাঁকজমকপূর্ণ রাজকীয় সুখ-সুবিধার মধ্যে থেকেও একটি মানুষ কতটা দুঃখী হতে পারে এই সাক্ষাতকার প্রকাশিত না হলে হয়তো কেউ কোনদিন জানতে পারত না। পাপারাৎসীদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট প্রিন্সেস ডায়না তার বয়ফ্রেন্ড দোদি ফায়েদসহ প্যারিসের সুড়ঙ্গপথে মর্মান্তিক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। তার মৃত্যুতে ব্রিটেনসহ সারাবিশ্বের মানুষ শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময় তার কফিনবাহী শকটের পিছু পিছু হ্যারি ও তার বড় ভাই উইলিয়ামের ধীরে ধীরে হেঁটে যাওয়ার দৃশ্য সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে দেখা গেছে। হ্যারির মনে তার মায়ের মৃত্যু এমন গভীর দাগ কেটেছে, তার জীবনে যখনই কোন ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বা যোগাযোগের বিষয় আসে তখনই তার মধ্যে তীব্র পলায়নি মনোবৃত্তি জন্ম নেয়, তার মনে তখন একটি প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দেয় ‘যুদ্ধ না পলায়ন’? হ্যারি বলেন, মায়ের স্মৃতি কখনও মনে আনবো না, তাতে কী লাভ, মা তো আর ফিরে আসবে না, শুধু শুধু দুঃখ বাড়িয়ে কী লাভ? এই ভেবে আমি কতদিন যে সাগর সৈকতে বালিতে মাথা ঠেকিয়ে পড়ে থাকতাম, তা কেউ জানত না। বর্তমানে প্রিন্স হ্যারির বয়স ৩২ বছর। তার বয়স যখন ১২ তখন প্রিন্সেস ডায়ানার মৃত্যু হয়। তখন সেই শৈশব থেকেই তিনি তার মায়ের স্মৃতি ভোলার জন্য নিজের সঙ্গে নিজে যুদ্ধ করে চলেছেন। বিষণœ কণ্ঠে প্রিন্স হ্যারি বলেন, আমি মাঝে মধ্যে ভাবি আমরা (রাজ পরিবারের সদস্যরা) কীভাবে প্রকৃতিস্থ আছি? আমাদের কোন গোপনীয়তা নেই, নেই কোন ব্যক্তিগত জীবন! আমি অনেক সময় সম্পূর্ণ মানসিক ভারসাম্য হারাবার মতো অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছিলাম। এ সময় বড় ভাই প্রিন্স উইলিয়াম আমার পাশে দাঁড়ায়। সে এবং অন্য শুভাকাক্সক্ষীদের পরামর্শে চার বছর আগে আমি মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হই। ‘এ সময় কেউ কেউ আমার ভেতরের আবেগ প্রশমিত করার জন্য বক্সিংয়ে মনোনিবেশ করতে বলেন। অবশেষে আমি বক্সিং রিংয়ে আমার প্রাণ ফিরে পাই। বক্সিং আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে বলা যায়’। অন্তরঙ্গ সংলাপে এসব কথা বলেন হ্যারি। প্রিন্স হ্যারিকে অন্তর্মুখী চরিত্রের মানুষ বলা যায়। এক দশক ধরে তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তিনি আফগানিস্তানে দুঃসাহসিক অভিযানেও অংশ নেন। কিন্তু তার নিরাপত্তার কথা ভেবে তা গোপন রাখা হয় বহুদিন। -এএফপি
×