ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অভিমত শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গার

২০২৩ সালের বিশ্বকাপ জিততে পারে বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ০৬:৩১, ৭ এপ্রিল ২০১৭

২০২৩ সালের বিশ্বকাপ জিততে পারে বাংলাদেশ!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একসময় বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট মাতিয়েছেন। শ্রীলঙ্কাকে ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। তিনি অর্জুনা রানাতুঙ্গা। এখন শ্রীলঙ্কার বন্দর ও নৌমন্ত্রী তিনি। কলম্বোতে নিজের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতা করেন রানাতুঙ্গা। সেই আলাপেই ২০২৩ সালে বাংলাদেশের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনার কথা জানান তিনি। ২০২৩ সালে বিশ্বকাপ হবে ভারতে। আর তাই বাংলাদেশের অনেক জোরালো সম্ভাবনাই দেখছেন রানাতুঙ্গা। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এ শুভাকাক্সক্ষী মনে করেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নতি করছে। যথেষ্ট প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে বাংলাদেশের। আমি বিশ্বাস করি ২০২৩ সালে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিততে পারে।’ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট জয়েও অবাক হননি রানাতুঙ্গা, ‘শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের যে অবস্থা, তারা যে একদিন বাংলাদেশের কাছে হারবে, একথা আমি আগেই বলেছিলাম। বাংলাদেশ দুর্দান্ত খেলেই ম্যাচটা জিতেছে। বিশেষ করে গল টেস্টে বাজেভাবে হারার পর বাংলাদেশ কলম্বোয় যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটা দারুণ। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের টেকনিক খুব ভাল। তাদের সমস্যাটা মানসিক। আশাকরি সেটা তারা কাটিয়ে উঠবে।’ বাংলাদেশ ওয়ানডেতে অনেক উন্নতি করেছে। সেই উন্নতির ছোঁয়া টেস্ট ক্রিকেটেও লাগছে। আর তাই রানাতুঙ্গা মনে করেন, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও বাংলাদেশই ফেভারিট। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে এসে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলার কথা রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। যদি অস্ট্রেলিয়া খেলে এবং বল মাঠে গড়ায়, তাহলে সিরিজেও বাংলাদেশের জেতার সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলে জানান রানাতুঙ্গা, ‘তোমাদের ভাল সম্ভাবনা আছে। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সবসময় ভাল দল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে স্পিন উইকেটে খেললে বাংলাদেশের ভাল সম্ভাবনা থাকবে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ স্পিন উইকেটে ভাল করেছে। আমার মনে হয় এবারও তাই হবে। সবকিছু মিলিয়ে আমি বলব বাংলাদেশই ফেভারিট। ১৯৮৮ সালে ঢাকা মোহামেডানের হয়ে খেলেছেন রানাতুঙ্গা। ঢাকা লীগে অনেক শ্রীলঙ্কার তারকা ক্রিকেটার খেলেছেন। আর তাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটারদের অবদানও দেখেন রানাতুঙ্গা। বলেছেন, ‘আশির দশকের শেষদিকে অনেক শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটার ঢাকার ক্লাবগুলোতে খেলত। বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নতিতে অবশ্যই লঙ্কান ক্রিকেটের অবদান আছে। মনে আছে আমরা যখন ঢাকায় খেলেছি, আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে প্রচুর দর্শক হত। ৩০-৩৫ হাজার দর্শকে ঠাসা থাকত স্টেডিয়াম। ঢাকায় আমরা খুব সম্মানের সঙ্গে খেলেছি। সবার ভালবাসা পেয়েছি।’ ক্রিকেট থেকে দূরে আছেন রানাতুঙ্গা। তারপরও দেশের ক্রিকেটের সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেটেরও ভালই খোঁজ-খবর রাখেন। গত বছর শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের নির্বাচনে সহসভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু হেরে যান। না হারলে ক্রিকেটের সঙ্গেই সম্পৃক্ত থাকতেন। এরপরও রানাতুঙ্গা বলেন, ‘আমি যে কোনভাবেই দেশের সেবা করতে চাই। ক্রিকেট দিয়ে পারলাম না। মন্ত্রী হিসেবে করছি। ভাল লাগছে। আমি খুশি যে শ্রীলঙ্কান সরকার আমাকে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছে।’ শ্রীলঙ্কা একবারই বিশ্বকাপ জেতে। ১৯৯৬ সালে। রানাতুঙ্গার নেতৃত্বেই সেই জয়টি আসে। বিশ্বকাপ জেতাটাই রানাতুঙ্গার কাছে স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে আছে। জানালেন, ‘আমি খেলোয়াড়দের সুরক্ষা দিতে চেয়েছি সবসময়। অর্থের পেছনে ছুটিনি কখনই।’ তবে এখনকার টি২০ ক্রিকেটটা খুবই অপছন্দ রানাতুঙ্গার, ‘টি২০ ক্রিকেট কোন খেলাই নয়। এতে টেকনিকের কিছুই নেই। এটা ইনস্ট্যান্ট নুডলসের মতো। প্যাকেট খুলে রান্না করে খেয়ে ফেলার মতোই। টেস্ট ক্রিকেট হচ্ছে মায়ের হাতের রান্না। এটাই আসল ক্রিকেট।’
×