ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নেত্রকোনার আরও ৩ হাওড়ের বোরো নিমজ্জিত

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ৫ এপ্রিল ২০১৭

নেত্রকোনার আরও ৩ হাওড়ের বোরো নিমজ্জিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা, ৪ এপ্রিল ॥ জেলার ‘শস্যভা-ার’ খ্যাত খালিয়াজুরি উপজেলার ‘কীর্তনখোলা’ বাঁধ ভেঙ্গে আরও তিনটি বড় হাওর তলিয়ে গেছে। হাওর তিনটি হচ্ছে- ‘কীর্তনখোলা’, ‘পাঙাসিয়া’ ও ‘রোয়াইল’। টানা অতিবৃষ্টি ও ধনু নদী দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের চাপে সোমবার রাত আটটার দিকে বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। খালিয়াজুরি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছানোয়ারুজ্জামান জোশেফ জানান, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় এলাকার কয়েক হাজার কৃষক গত কয়েকদিন ধরে স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটে বাঁধটি রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। কিন্তু পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সোমবার রাত আটটার দিকে বাঁধটির ‘হাঁসের কোনা’ অংশটি আকস্মিক ভেঙ্গে যায়। এ কারণে রাতের মধ্যেই কীর্তনখোলা, পাঙ্গাসিয়া ও রোয়াইল হাওর তলিয়ে যায়। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম মঙ্গলবার জানান, ওই তিনটি হাওরসহ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর বোরো জমি এখন পানির নিচে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে উপজেলার ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ফসল তলিয়ে যেতে পারে। এদিকে একমাত্র ফসল হারানোর কারণে এসব এলাকার কৃষক পরিবারগুলোতে আহাজারি চলছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, বাঁধ ভাঙ্গা পানি এখন দ্রুতগতিতে ভাটির দিকে যাচ্ছে। ফলে আশপাশের আরও চার-পাঁচটি ছোটবড় হাওর মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। দু’-একদিনের মধ্যে ওই হাওরগুলোও তলিয়ে যাবার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে বারহাট্টা উপজেলাতেও গুমাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গুঙ্গিয়াজুড়ি, সিংগুইয়া বিল ও সিংড়া বিলের বিস্তীর্ণ ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। জেলা কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী জেলার আট উপজেলায় মঙ্গলবার পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে ১৫ হাজার ৭শ’ হেক্টর বোরো জমি। সিলেটে অকালবন্যা স্টাফ রিপোর্টার সিলেট অফিস থেকে জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও সেই সাথে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে সিলেটে অকালবন্যা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে এই বিভাগের ৪টি জেলার অধিকাংশ বোরো ফসলের পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফসলহানির এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হাহাকার। টানা বর্ষণে নগরজীবনেও নেমে এসেছে বিড়ম্বনা। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, আগামী ৬ এপ্রিল পর্যন্ত বিরূপ আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দিনভর বৃষ্টিপাতের কারণে নগরীর রাস্তায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে পৌনে ১১টা পর্যন্ত ভারি বর্ষণ হয়েছে। একটু বিরতি দিয়ে দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে আবার শুরু হয় বৃষ্টিপাত। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, সদর বিশ্বনাথ, বালাগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ বোরো ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এ সময় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য ও সিলেট মহানগরের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী, সিলেটের এডিশনাল পিপি শামসুল ইসলাম।
×