ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

রেফারিকে গালিগালাজের কথা অস্বীকার মেসির

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৩১ মার্চ ২০১৭

রেফারিকে গালিগালাজের কথা অস্বীকার মেসির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফুটবলবিশ্বে চলছে তোলপাড়। লিওনেল মেসিকে যে প্রক্রিয়ায় চার ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে তাতে বিস্মিত অনেকে। দলের সেরা তারকা নিষিদ্ধ হওয়ায় আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে ধোঁয়াশা আরও ঘনীভূত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক দাবি করেছেন, তিনি রেফারিকে গালিগালাজ করেননি। ফিফা যা করেছে তা রীতিমতো অন্যায়। মেসির শাস্তির বিরুদ্ধে সরব এখন ফুটবলবিশ্ব। তবে নিজের শাস্তি প্রসঙ্গে এ ক’দিন নীরব ছিলেন বার্সিলোনা সুপারস্টার। অবশেষে মুখ খুলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, যে অপরাধে তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে, আদতে এমন কোন কাজই নাকি তিনি করেননি। সহকারী রেফারিকে নাকি গালি দেননি মেসি, শুধু তার নিজের হতাশা প্রকাশ করেছেন। রাগের মুহূর্তটা নিজে নিজে কথা আওড়িয়েছেন। এক সাক্ষাতকারে মেসি বলেন, আমার কথাগুলো কখনই সহকারী রেফারির উদ্দেশে ছিল না। আমি তো কেবল নিজের সঙ্গে কথা বলছিলাম। অথচ রেফারিকে অশালীন গালি দেয়ার অপরাধে মেসিকে চার ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অবশ্য মেসির বিরুদ্ধে নেয়া সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানাচ্ছে আর্জেন্টিনা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন। মেসির শাস্তি কমাতে সম্ভব সব চেষ্টাই করবে দেশটির ফুটবল সংস্থাটি। প্রয়োজনে আইনী লড়াইয়েও নামবে তারা। এএফএ’র জাতীয় দল কমিটির প্রধান মার্সেলো টিনেল্লি বলেন, মেসির সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করব। আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছি। এত বড় শাস্তি পাওয়াটা অযৌক্তিক। চিলির বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ১-০ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে সহকারী রেফারির সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার দায়ে নিষিদ্ধ হয়েছেন মেসি। ওই ম্যাচের শেষদিকে মেসির বিরুদ্ধে ফাউলের নির্দেশ দেন রেফারি। এরপর লাইন্সম্যানকে লক্ষ্য করে বার্সিলোনার তারকা ফরোয়ার্ডকে হাত নেড়ে ক্ষোভ প্রকাশ ও চিৎকার করতে দেখা যায়। ম্যাচ শেষে ওই অফিসিয়ালের সঙ্গে হাত মেলাতেও অস্বীকৃতি জানান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। মেসিকে দেয়া শাস্তির প্রক্রিয়া নিয়ে তোলপাড় হলেও আর্জেন্টিনার সাবেক খেলোয়াড় জর্জ ভালদানো মনে করেন, একটু বুদ্ধি খাটালে আর কৌশল অবলম্বন করলেই শাস্তি এড়াতে পারতেন মেসি। ভালদানোর মতে, সহকারী রেফারির সঙ্গে কথা বলার সময় হাত দিয়ে মুখটা আড়াল করলে ভিডিওতে বোঝা যেত না। তবে মেসির এমন আচরণেও অবাক হয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলেন, যে বিষয়টি আমাকে খুব বিস্মিত করেছে, সেটা হচ্ছে মেসি কখনই নিয়ন্ত্রণ হারায় না। ফুটবলাররা সাধারণত রেফারির সঙ্গে কথা বলার সময় ক্যামেরার দৃষ্টি এড়াতে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখেন। মেসি এতটুকু করলে পার পেয়ে যেত। মেসির শাস্তির বিতর্ক কাটতে না কাটতেই নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার নেইমার। প্যারাগুয়ের বিরুদ্ধে ৩-০ ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে গোল করেছেন বার্সা তারকাও। এরপরই নেইমার এমন এক কাজ করে বসেন, যাতে করে তার ওপর শাস্তির খড়গ নেমে আসতে পারে। প্যারাগুয়ে ম্যাচে গোল করার পর কর্নার ফ্ল্যাগ তুলে নিয়ে বন্দুক চালানোর ভঙ্গিতে উদযাপন করেন তিনি। এই উদযাপন নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী উত্তেজনা বা বিতর্ক হতে পারে এমন উদযাপন নিষিদ্ধ। ধারণা করা হচ্ছে, এ ঘটনায় শাস্তি পাবেন নেইমার। তবে আশার কথা হচ্ছে, যে গোলের পর নেইমার কর্নার ফ্ল্যাগ নিয়ে উদযাপন করেন, সেই গোলটি বাতিল করা হয়। বিতর্কিত গোল উৎসবের জেরে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে অনেককেই। ১৯৯৯ সালে লিভাপুলের বরি ফ্লাওয়ার এভারটনের বিরুদ্ধে গোল করার কর কোকেন গ্রহণের মতো উদযাপন করেন। এ ঘটনায় দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হন তিনি। ফ্রান্সের তারকা ফুটবলার নিকোলাস এ্যানেলকা বিতর্কিত স্যালুট করে ওয়েস্টব্রুমউইচ থেকে ছাঁটাই হয়েছিলেন। নাৎসি স্টাইলে স্যালুট করে আজীবন নিষিদ্ধ হন গ্রীসের এক উদীয়মান ফুটবলার। এখন নেইমারের কোন শাস্তি হয় কিনা সেদিকে কৌতূহলী দৃষ্টি অনেকের।
×