ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চুক্তি অনুস্বাক্ষর

রূপপুর বিদ্যুত কেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল ফেরত নেবে রাশিয়া

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১৯ মার্চ ২০১৭

রূপপুর বিদ্যুত কেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল ফেরত নেবে রাশিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের স্পেন্ট ফুয়েল বা ব্যবহৃত জ্বালানি ফেরত নেয়ার বিষয়ে চুক্তি অনুস্বাক্ষর হয়েছে। শনিবার রুশ রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থার পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জনসংযোগ কার্যালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানায়। সন্ধ্যায় বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বিষয়টি জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, স্পেন্ট ফুয়েল তারা ফেরত নিয়ে যাবে। ব্যবস্থাপনার দায়িত্বও তাদের এ বিষয়ে আমাদের কোন চিন্তা নেই। কি প্রক্রিয়ায় ফেরত নেবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সারা দুনিয়াতে যেভাবে হয় আমাদের এখানেও তার ব্যতিক্রম হবে না। মন্ত্রী জানান, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের একটি বাণিজ্যিক চুক্তি হবে। এই চুক্তির আওতায় তারা ব্যবহৃত জ্বালানি ফেরত নেবে। আমরা এটা বিক্রি করে পয়সা পাব। এটা ব্যবস্থাপনার জন্যও তাদের অর্থ দিতে হবে। রূপপুরের ব্যবহৃত জ্বালানি ফেরত নেয়ার বিষয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই বলা হচ্ছিল, ব্যবহৃত জ্বালানি ফেরত নেবে রাশিয়া। তবে মূল চুক্তিতে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত না থাকাতে সমালোচনা শুরু হয়। ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। এ ধরনের জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের কোন অভিজ্ঞতাও নেই। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ এবং রাশিয়া ১৫ মার্চ ঢাকায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের স্পেন্ট ফুয়েল (ব্যবহৃত জ্বালানি) ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত চুক্তির খসড়া অনুমোদন ও অনুস্বাক্ষর করেছে। উভয়পক্ষ শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক সই এর জন্য সম্মত হয়েছে। সম্প্রতি একটি রুশ প্রতিনিধিদলের ঢাকা সফরকালে এটা অনুস্বাক্ষর হয়। প্রতিনিধিদলে রুশ রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থার উপপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিকোলাই স্পাস্কি এবং পরিবেশ, শিল্প ও পারমাণবিক তদারকি (সুপারভিশন) সেবা সংক্রান্ত রুশ ফেডারেল সংস্থার (রসটেকনাদজর) উপপ্রধান আলেক্সি ফেরাপনটভ ঢাকায় আসেন। বাংলাদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দর ইগনাতভও দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। দ্বিপক্ষীয় আলোচনার কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের ব্যবহৃত জ্বালানি ব্যবস্থাপনা। বিস্তারিত আলোচনার পর উভয়পক্ষ একটি ঐকমত্যে পৌঁছতে সক্ষম হয়। অন্য যে সব বিষয় আলোচনা হয় তার মধ্যে প্রস্তুতি পর্বের বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন বিষয়ক সিডিউল এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের মূল পর্বের কাজের শুরু। উভয়পক্ষের মতে আগামী দিনগুলোতে সর্বাধিক প্রণিধানযোগ্য কাজ হলো নির্ধারিত সময় অনুযায়ী প্রকল্পের প্রথম পাওয়ার ইউনিটের নির্মাণ শেষ করা। দুদেশের পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বিএইসি) এবং প্রকল্পের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এএসই গ্রুপ অব কোম্পানিজের মধ্যে সহযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি বিশেষ ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। সফরের অংশ হিসেবে রুশ প্রতিনিধিদল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন এবং একটি ওয়ার্কিং মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষর চেয়ারম্যান নাঈয়ুম চৌধুরী এবং পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ মনজুরুল হক এবং এএসই গ্রুপ প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত শিডিউল কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন আগামী জুন-জুলাই মস্কোতে অনুষ্ঠিতব্য যৌথ সমন্বয় পরিষদের সভায় উপস্থাপন করা হবে।
×