জাপানে ভয়াবহ সুনামির ছয় বছরেও প্রায় সোয়া এক লাখ মানুষ ঘরে ফিরতে পারেননি। অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে তাদের জীবন কাটাতে হচ্ছে। শুক্রবার জাপানে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির জাতীয় পুলিশ সংস্থা (এনপিএ) জানিয়েছে, সুনামিতে সরকারী হিসাব মতে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার ৮৯৩ মারা গেছেন। ছয় প্রদেশ জুড়ে নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২ হাজার ৫৫৩ জন। আগামী এপ্রিল পর্যন্ত বেশকিছু এলাকায় জরুরী অবস্থা বলবৎ রয়েছে। খবর ইয়াহু নিউজের।
সংস্থাটি জানায়, জাপান পুলিশের এক হিসাব মতে সবচেয়ে বেশি মানুষ হারানো গিয়েছে মিয়াগি প্রদেশ থেকে, যার সংখ্যা এক হাজার ২৩৬ জন। এরপরই রয়েছে ফুকুশিমা। এই অঞ্চলে এক হাজার ১২৪ জনকে এখনও পাওয়া যায়নি। এছাড়া চিবা প্রদেশের ২ জন নিখোঁজের তালিকায় রয়েছেন। তবে জাপানের পুনর্বাসন সংস্থা বলেছে, তাদের মতে দশটি প্রদেশ জুড়ে ৩ হাজার ৫২৩ জন মারা গেছেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসেব মতে ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষ এখনও অস্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয়ে আছেন। ২৩ হাজার ৩৯৩ জনের নতুন করে বাড়ি করার কোন ক্ষমতাই নেই, এদের অনেকেই বৃদ্ধ। সরকার তাদের বাড়ি তুলে দেয়ার চেষ্টা করছে। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা ইয়ামাদা শহরের ৮৩ বছর বয়সী মহিলা মিয়াগি ইয়ানু বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে আমরা অধিকাংশই বৃদ্ধ।
আত্মীয়-স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় অনেকটা কষ্টে সময় পার করতে হয়। রাতের বেলায় অসুস্থ হলেও সেবা করার কেউ থাকে না। এটা সত্যিই কষ্টের। ৬৭ বছর বয়সী সিগে ইয়ামাতো বলেন, ভয়াবহ দিনটির কথা মনে হলে এখনও গা শিউরে উঠে। আমি জানি না কখন আবার সুনামি আঘাত করে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে থাকতে অস্বস্তি লাগে। গিনিজ বুকের রেকর্ড অনুযায়ী বিশ্বের চতুর্থ ভয়ঙ্কর এই সুনামির পাঁচ বছর পূর্তি হয়েছে। ২০১১ সালের ১১ মার্চ স্থানীয় সময় দুপুরে রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প পরবর্তী সুনামিতে ল-ভ- হওয়া জাপানীদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যুদ্ধ গত কয়েক বছর ধরেই চলছে।
