ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্মঘট অযৌক্তিক, প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের

প্রকাশিত: ০২:৫৮, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ধর্মঘট অযৌক্তিক, প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আদালতের রায়ে চালককে কারাদন্ড দেয়ার প্রতিবাদে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আদালতের রায় নিয়ে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলানোর অধিকার পরিবহন শ্রমিকদের নেই। মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, আদালতের কোন মামলার রায়ের সঙ্গে সাধারণ জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাই আদালতের কোন রায় নিয়ে জনগণ কেন ভোগান্তিতে ফেলা হবে? আপনারা আপনাদের অযৌক্তিক ধর্মঘট প্রত্যাহার করুন। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বামদলগুলোর ডাকা হরতাল প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ (মঙ্গলবার) কিছু রাজনৈতিক দল একটা ইস্যুতে হরতাল ডেকেছিল। বিএনপির মতো বড় দল সমর্থন দিয়েছিল। তবে ঢাকায় হরতালের কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। কোনো যানবাহন ও দোকানপাট বন্ধ ছিল না। হরতাল এখন আর দাবি আদায়ের কার্যকর হাতিয়ার নয় মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় হরতালের কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি। কোনো যানবাহন ও দোকানপাটও বন্ধ ছিল না, সবই ছিল স্বাভাবিক। হরতাল ডেকে নেতাকর্মীরা পিকেটিংয়ে নামেননি। নেতারা এসি রুমে বসে ঘুমিয়েছেন আর বসে বসে হিন্দি সিরিয়াল দেখেছেন। হরতাল এখন আর দাবি আদায়ের কোনো হাতিয়ার নয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারাদেশে ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি দরকার। ছাত্রলীগ যদি সারা বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেয় এবং পড়াশোনায় মনোযোগি হয় তাহলে ছাত্রলীগের নামে যে সকল অপকর্ম হয়, তার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আকর্ষণীয় করতে হলেও এ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বেশি পড়াশোনার তাগিদ দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনীতি করতে হলে পড়াশোনার কোন বিকল্প নেই। পড়াশোনা না করে নেতার পিছনে ঘুর ঘুর করলে, ওই নেতা যা বলবে তোমরা তাই করবে। নেতা খারাপ কাজ করতে বললে তোমরা তাই করবে। কিন্তু যখন তুমি পড়াশোনা করে নিজেকে সমৃদ্ধ করো তখন যে কোন নেতার খারাপ কাজের নির্দেশনাও তুমি মানবে না। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে ছাত্রলীগের সাবেক এ সভাপতি বলেন, ছাত্র সংসদের নির্বাচন হলে শিক্ষার্থীরা কলহ-কোন্দলে জড়াবে না। তারা খারাপ কাজ থেকে দুরে থাকবে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য। এ জন্য ব্যবস্থা নিতে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমি পুনরায় আহ্বান করছি। তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতিকে আকর্ষণীয় করতে হলেও ছাত্র সংসদের নির্বাচন প্রয়োজন। নিজেকে এখনও আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সম্বোধন করার সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, চার মাস হয়ে গেল এখনও আমাকে বলছে নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। চার মাস মানে ১২০ দিন চলে গেছে, তাই এখন আমি নবনির্বাচিত কোথায়? সোনাবানুর পুঁথি গাইতেই হবে? তিনি বলেন, মনে হচ্ছে যে, আমার প্রাণ শেষ হয়ে গেলেও বলতে থাকবে নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক। বিবেক খরচ করে সবাইকে কথা বলতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতির গডফাদারদের পরণতি করুন। তাদেও পরিনতি অস্বাভাবিক হয়। আমাদের দলে গণধিক্কৃত কোন গডফাদার চাই না। দলে জনপ্রিয়, যোগ্যতা সম্পন্ন নেতাদের চাই। গডফাদারদের বিরুদ্ধে আমরা আপোষহীন লড়াই শুরু করছি। কেউ যদি নিজেকে গডফাদারের রূপে তৈরি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমাদের দলের অবস্থান কঠোর। সংগঠনের সভাপতি বায়েজিদ আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, নগর নেতা মিরাজ হোসেন, মামুনুর রশীদ শুভ্র, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।
×