ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষা সুযোগ বঞ্চিত ভাসমান বেদে শিশুরা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

শিক্ষা সুযোগ বঞ্চিত ভাসমান বেদে শিশুরা

আজিজুর রহমান ডল, জামালপুর থেকে ॥ ওরা ভাসমান শিশু। ভেসে বেড়ায় নদীবন্দরে গ্রামগঞ্জ শহর নগরে। বেদে বহরের চারপাশে দুরন্তপনা। সাপখেলা, বানর খেলা, কানামাছি, বউচি, বন্দিভাষা, কুতকুত ও এক্কাদোক্কায় মেতে থাকে সারাবেলা। বাবা মার সঙ্গে বেরিয়ে পড়ে গাঁ ঘুরতে। হাটে বাজারে সাপ বাদর খেলায় বাবা মাকে করে সহযোগিতা। মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে সাপ বাদর খেলার মতো ভয়ংকর পেশায় জড়িয়ে পড়ছে এসব শিশু। বেড়ে উঠছে অশিক্ষা কুশিক্ষায়। শিক্ষা বলতে জানে সাপ ও বাদর খেলা শেখা। বেদে বহরে আজো পৌঁছেনি শিক্ষার আলো। পরিচয় হয়নি অক্ষর জ্ঞানের সঙ্গেও। ফলে এরা নিরক্ষরই থেকে যায় বংশ পরম্পরায়। যাযাবর জীবনে একেক স্থানে একেক সময় অবস্থান করায় সুযোগ নেই শিক্ষা গ্রহণের। অ আ ও ক খ এবং স্কুল দেখতে কেমন সেখানে কি হয় তাও জানে না এসব শিশুরা। লেখাপড়ার বদলে সাপের খেলা শেখায় এদের বাবা মা। শিক্ষা গ্রহণের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত ওরা। জামালপুর শহরের ফেরিঘাট এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বেদে বহর এসেছে সপ্তাহ খানেক আগে। বহরে ৪২ নারী পুরুষ রয়েছে। তাদের সঙ্গে ২২ শিশু। এই শিশুরা এ প্রতিবেদকের কাছে তাদের দুর্বিষহ জীবন কাহিনী তুলে ধরে। বেদে বহরের মন্টু সর্দার জানান, আমরা পেটের তাগিদে জায়গায় জায়গায় ঘুরে বেড়াই। সাপ বানর খেলা, শিঙ্গা লাগিয়ে, তাবিজ-কবচ বেচে যা পাই তা দিয়ে কোনমতে সংসার চলে। আধুনিক যুগের এই সময়ে মানুষ আর আমাদের খেলা, শিঙ্গা লাগানো, তাবিজ-কবচ নিতে চায় না। বাপ-দাদার পেশা আঁকড়ে ধরে আছি। বাড়িতে রেখে বাচ্চাদের লেখাপড়া শিখাব তাদের দেখাশোনা করবে কে আর লেখাপড়ার খরচ যোগানোর মতো অবস্থা নেই। সবচেয়ে বড় সমস্যা আমরা ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করি। সরকার যদি বিশেষ ব্যবস্থা নেয় তাহলে শিক্ষা আমাদের কপালে জুটবে। তীর্থযাত্রীর সমাগমে মুখর শিব চতুর্দশী মেলা নিজস্ব সংবাদদাতা, সীতাকু-, চট্টগ্রাম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ॥ সীতাকু-ে চলছে কলি যুগের মহাতীর্থ হিসেবে খ্যাত হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মীয় উৎসব শিব চতুর্দশী মেলা। মেলায় পুণ্যার্থীদের মূল কাজ হলো তিথি চলাকালে ব্যাসকু-ে স্রান, তর্পণ শেষ করে প্রায় ১৩০০ ফুট উচ্চতায় চন্দ্রনাথ মন্দিরে পূজা শেষে মনোবাসনা পূর্ণ করা। শনিবার তিথি শেষের মধ্যে দিয়ে পুণ্যার্থীদের মূল মেলা শেষ হলেও সীতাকু-ের এ মেলা আরও এক মাস চলবে। তখন হিন্দু ভক্তবৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা এ মেলায় আসবে। দেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত থাকায় এবারের শিব চতুর্দশী মেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ধর্মানুরাগী ভক্তের পাশাপাশি ভারত, নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটান, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কাসহ আরও অনেক দেশের পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছে। এছাড়াও ঐতিহাসিক এ শিব চতুর্দশী মেলাকে কেন্দ্র করে ভিড় জমিয়েছে দূর-দূরান্তের দার্শনিক, সাহিত্যক, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। মেলায় শিবমন্দির থেকে নামতে গিয়ে ১০ জন পুণার্থী আহত হয়েছে। আহতাবস্থায় তাদের সীতাকু- স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন বলে মেলায় দায়িত্বরত মেডিক্যাল টিম স্বীকার করেন। এছাড়া সকাল থেকে ৫ শতাধিক পুণার্থীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে বলেও তারা জানান।
×