ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ কামাল ফুটবলে বিদেশী পাঁচ ক্লাবের আদ্যোপান্ত

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

শেখ কামাল ফুটবলে বিদেশী পাঁচ ক্লাবের আদ্যোপান্ত

রুমেল খান ॥ ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ’ ফুটবল আসর মাঠে গড়াচ্ছে আর মাত্র দুদিন পর। ছয় জাতির এই আসরে অংশ নেবে মোট আটটি ক্লাব, যাদের মধ্যে পাঁচটি বিদেশী এবং তিনটি বাংলাদেশী ক্লাব। ‘এ’ গ্রুপে আছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড, মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ক্লাব, দক্ষিণ কোরিয়ার ফুটবল ক্লাব পোচেয়ন এবং কিরগিজস্তানের ফুটবল ক্লাব আলগা। ‘বি’ গ্রুপে আছে স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড, আফগানিস্তানের শাহিন আসমায়ি, ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড এবং নেপালের মানাং মারসিয়াংদি। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি বন্দরনগরী চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাচ্ছে এই ফুটবল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসর। এবার প্রাইজমানির পরিমাণও বেড়েছে। চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৩০ হাজার ডলার (গতবার ছিল ২৫ হাজার)। রানার্সআপ দল পাবে ১৫ হাজার ডলার (আগে ছিল ১০ হাজার ডলার)। উল্লেখ্য, এই টুর্নামেন্টে প্রতিটি দলই পাঁচ বিদেশী খেলোয়াড় দলে রেখে মাঠে সর্বোচ্চ চারজনকে খেলাতে পারবে। প্রতিটি দলই হবে ৩০ জনের, যার মধ্যে খেলোয়াড় সংখ্যা ২৩। শেখ কামাল ফুটবলের প্রথম আসরের ফাইনালে ভারতের ইস্ট বেঙ্গল ফুটবল ক্লাবকে ৩-১ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। ইতোমধ্যেই প্রথম বিদেশী দল হিসেবে বুধবার চট্টগ্রামে পা রাখে নেপালের মানাং মারসিয়াংদি ক্লাব। এরপর বৃহস্পতি বাকি চার ক্লাব সেখানে পৌঁছায়। কৌতূহলী পাঠকদের জন্য আজ দেয়া হলো এই আসরে অংশ নেয়া এই পাঁচ বিদেশী ক্লাবের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও তথ্য। * ফুটবল ক্লাব পোচেয়ন (দ. কোরিয়া) ॥ দক্ষিণ কোরিয়ার একটি শহরের নাম পোচেয়ন। সেখানেই অবস্থিত এই ক্লাবের জন্ম ২০০৭ সালে। শহরের মেয়র সিও জাং-ওয়ন ক্লাবের মালিক। কিম ইয়ং-জু হচ্ছেন চেয়ারম্যান। ম্যানেজার লি সু-সিক। ক্লাবটি কে-৩ এ্যামেচার লীগে খেলে থাকে। ২০১৬ সালের কে-৩ লীগের সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন তারা। এই লীগে তারা রেকর্ড ৫ বারের শিরোপাধারী। বাকি চারবার চ্যাম্পিয়ন হয় ২০০৯, ১২, ১৩ ও ১৫ সালে। শেখ কামাল ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হবার ব্যাপারে অনেকের দৃষ্টিতেই তারা নাম্বার ওয়ান ফেবারিট। * ফুটবল ক্লাব আলগা বিশকেক (কিরজিগস্তান) ॥ কিরগিজস্তানের বিশকেকে অবস্থিত এই ক্লাবের জন্ম ১৯৪৭ সালে। নিজস্ব মাঠ ডায়নামো স্টেডিয়ন। দলের কোচ আলেকনান্দর বেলদিনোভ। দেশটির শীর্ষ পর্যায়ের কিরগিস্তান লীগে খেলে থাকে ঐতিহ্যবাহী দলটি। লীগে সর্বশেষ তারা ২০১৬ সালে তৃতীয় হয়। মজার ব্যাপারÑ ৭০ বছরের ইতিহাসে ক্লাবটি নয়বার নাম পাল্টেছে। প্রথমে নাম ছিল এফসি যেনিত ফ্রুনজে। এরপর পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত নামগুলো হলো : এফসি ত্রুদুভয়ে রেজেরভাই ফ্রুনজে, এফসি ইসকারা ফ্রুনজে, এফসি স্পার্তাক ফ্রুনজে, এফসি আলগা-আরএইচএফ বিশকেক, এফসি আলগা-পিভিও বিশকেক, এফসি এসকেএ- পিভিও বিশকেক, এফসি এসকেএ-শোরো বিশকেক, এফসি এভিয়েটর এএএল বিশকেক এবং এফসি আলগা বিশকেক। কোন ক্লাবের নাম পাল্টানোর ক্ষেত্রে যদি কোন পুরস্কার থাকতো, তাহলে সেটা যে এই ক্লাবটিই জিতবে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। এ পর্যন্ত ক্লাবটি মোট ৫ বার লীগ জিতেছে (হ্যাটট্রিক শিরোপা ২০০০-০২ পর্যন্ত) এবং কিরগিস্তান কাপ জিতেছে রেকর্ড ৯ বার (টানা সাত বার, ১৯৯৭-২০০৩ পর্যন্ত)। * টিসি স্পোর্টস ক্লাব (মালদ্বীপ) ॥ ট্রাস্ট এ্যান্ড কেয়ার ফুটবল ক্লাব। সংক্ষেপে টিসি স্পোর্টস ক্লাব। মালদ্বীপের এই ক্লাবটির জন্ম ২০০৪ সালে। ক্লাবের সভাপতি আহমেদ নাশিদ। কোচ মোহাম্মদ নিজাম। দেশটির ধিভেহি প্রিমিয়ার লীগে খেলে থাকে দলটি। ২০১৪ সালে দ্বিতীয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম বিভাগে উন্নীত হয় তারা। * মানাং মারসিয়াংদি ক্লাব (নেপাল) ॥ নেপালের পেশাদার লীগের সবচেয়ে সফল দলগুলোর একটি মানাং মারসিয়াংদী ক্লাব। কাঠমান্ডুর এই ক্লাবের জন্ম ১৯৮২ সালে। তাদের নিজস্ব মাঠের নাম দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়াম। দলের কোচ চিরিং লোপসাং গুরুং। সহকারী কোচ নাবিন নিউপানে। ২০১৫ লীগে তারা তৃতীয় হলেও মোট সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এছাড়া ১ বার বুদ্ধা সুব্বা গোল্ডকাপে, ১ বার খুকুরি গোল্ডকাপে, ১ বার সান মিগুয়েল ইতাহারি গোল্ডকাপে, ৫ বার আহা! গোল্ডকাপে, ১ বার আদর্শ কাপে, ১ বার সিমারা গোল্ডকাপে, ১ বার এনসেল কাপে, ১ বার পোখারা কাপে, ১ বার ঝাপা গোল্ডকাপে, ১ বার ভুটানের কিংস কাপে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। সবমিলিয়ে ২১ ট্রফি। শেখ কামাল ফুটবলে স্বভাবতই তারা অন্যতম শিরোপা জয়ের দাবিদার। * শাহিন আসমায়ি এফসি (আফগানিস্তান) ॥ শেখ কামাল ফুটবলে গত আসরেই খেলার কথা ছিল আফগানিস্তানের এই ক্লাবটির। কিন্তু সিডিউল সমস্যার কারণে সেবার আসতে না পারলেও এবার ঠিকই এসেছে। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্লাবটির নিজস্ব মাঠ গাজী স্টেডিয়াম। দলের কোচ বেগেমবারডফ বায়ের। লীগে ২০১৬ সালের চ্যাম্পিয়ন তারা। এর আগে ২০১৩ ও ১৪ সালে টানা দু’বার একই সাফল্য পেয়েছিল তারা। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রথম আসরে বেশ জাঁকজমকের সঙ্গেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সে আসরটি ব্যাপক জনপ্রিয় হলেও আয়োজকদের অনেক ধকলও পোহাতে হয়েছিল। সেটা বিদেশী বা অতিথি দলগুলোর নাম চূড়ান্ত করতে গিয়ে। সেবার অংশ নিয়েছিল দেশ-বিদেশের ছয়টি ক্লাব দল। তবে দ্বিতীয় আসরে দলের সংখ্যা দুটি বেড়েছে। কদিন আগে সাত দলের নামও প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু টুর্নামেন্টের সময় যতই এগিয়ে আসে, ততই যেন অষ্টম দলটির নাম ঘোষণা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। কারণ শ্রীলঙ্কার লীগ চ্যাম্পিয়নরা খেলতে রাজি হয়নি। বাফুফে অষ্টম ক্লাব হিসেবে ফিলিপাইনের ক্লাব দল স্ট্রালিওন এফসির নাম ঘোষণা করলেও পরে আবার পাল্টে যায় দৃশ্যপট। ফিলিপাইনের এ ক্লাবের বিকল্প পেতে বেশি দেরি হয়নি আয়োজকদের। তাদের স্থলাভিষিক্ত হয় এফসি আলগা।
×