ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা

দুই মিত্রকে মার্কিন আশ্বাস

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

দুই মিত্রকে মার্কিন আশ্বাস

উত্তর কোরিয়া এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের প্রতিরক্ষা প্রধানরা গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ব্যবস্থা জোরদার করার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। এদিকে চীন উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য ওয়াশিংটন ও সিউলকে দোষারোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের দ্বন্দ্ব-বিরোধই ঐ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মূল কারণ বলে চীন মন্তব্য করেছে। উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচী পরিত্যাগে দেশটির ওপর যথেষ্ট চাপ না দেয়ার দায়ে চীন সমালোচনার সুখে পড়েছে। খবর বিবিসি ও ইয়াহু নিউজের। এক কনফারেন্স কলে যুক্তরাষ্ট্রে এর দু’মিত্র দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে একথা বলা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপও জানায়, মার্কিন এফ-২২ স্টেলথ জঙ্গী বিমান এবং পরমাণু শক্তিচালিত এক সাবমেরিন আগামী মাসে সামরিক মহড়ায় যোগ দেবে। জাতিসংঘ ও ঐ পরীক্ষার নিন্দা জানিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদ একে জাতিসংঘ প্রস্তাবের গুরুতর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে। পরিষদ উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করার চেষ্টা দ্বিগুণ করতে সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়। উত্তর কোরিয়ার সেপ্টেম্বর পরমাণু পরীক্ষার পর নিরাপত্তা পরিষদ এক নিষেধাজ্ঞামূলক প্রস্তাব গ্রহণ করে। এটি কঠোরভাবে বলবৎ করা হলে দেশটি থেকে কয়লা ও ধাতব পদার্থ রফতানি দ্রুত সংকুচিত হয়ে পড়বে। উত্তর কোরিয়া রবিবার এর নেতা কিম জংউনের তত্ত্বাবধানে এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায় বলে জানায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর এটিই ছিল এরূপ প্রথম পরীক্ষা। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ একে এক ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য মাঝারি থেকে দূর পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বলে বর্ণনা করে। এটি জাপান সাগরে ছোড়া হয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে খুবই বড় এক সমস্যা বলে বর্ণনা করেন। তিনি শক্ত হাতে এর মোকাবিলা করবেন বলে জানান, তবে তিনি বিস্তারিত প্রকাশ করেননি। পেন্টাগন জানায়, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের নিরাপত্তার প্রতি এর ইস্পাতদৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। জাপান মঙ্গলবার পিয়ংইয়ংয়ের ওপর বিদ্যমান ঐসব নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে। দেশের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত কারও বেসহো বলেন, স্পষ্টতই আমাদের এরই মধ্যে গৃহীত খুবই শক্তিশালী প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হবে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেংশুয়াং বলেন, তার দেশ ঐ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিরোধী। এতে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার অবসান ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের গৃহীত প্রস্তাব লঙ্ঘিত হয়েছে। চীন উত্তর কোরিয়ার বাণিজ্য ও সাহায্যের সব চেয়ে বড় উৎস। উত্তর কোরিয়ার ওপর চাপ দিতে চীন যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে না বলে ট্রাম্প প্রশাসন অভিযোগ করে থাকে। বেজিং জবাব দেয় যে, উত্তর কোরিয়ার ওপর চীনের প্রভাব বাড়িয়ে দেখানো হয়। চীন মত-ব্যক্ত করে যে, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্বীকৃতি কোন সমাধান খুঁজে পাওয়ার পথে বাধার সৃষ্টি করছে। সেং বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার মতপার্থক্যই এর পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুর মূল। তিনি বেজিংয়ে রিপোর্টারদের নিয়মিত ব্রিফিং করছিলেন। তিনি বলেন, বেজিং মধ্যস্থতায় সক্রিয়ভাবে জড়িত হয়ে এবং শান্তি আলোচনার প্রসার ঘটিয়ে কোরীয় উপদ্বীপ ইস্যুর এক মীমাংসার লক্ষ্যে চেষ্টা চালাচ্ছে। সেং সব পক্ষের প্রতি উস্কানিমূলক তৎপরতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চীন নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় গঠনমূলক ও দায়িত্বশীল উপায়ে অংশগ্রহণ করে যাবে। তিনি আরও বলেন যে, চীন উত্তর কোরিার সঙ্গে সংলাপে বসতে সিউল ও ওয়াশিংটনকে উৎসাহিত করে এসেছে।
×