ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

৮ হাজার একর জমি পানির নিচে

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

৮ হাজার একর জমি পানির নিচে

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কের পাশে মির্জাপুর উপজেলার কদিমধল্যা-বানিয়ারা এলাকায় প্রতিষ্ঠিত সাদিয়া টেক্সটাইল মিলস্ নামক প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো বৃদ্ধি করতে পাশের সরকারী খাল ভরাট ও জবরদখল করা হয়েছে। ফলে আশপাশের ৪ গ্রামের কৃষকদের প্রায় ৮ হাজার একর ফসলি জমি পানির নিচে পড়ে আছে। জমিতে ফসল ফলাতে না পাড়ায় স্থানীয় কয়েক হাজার পরিবার কষ্টে রয়েছেন। জানা গেছে, উপজেলার কদিমধল্যা-বানিয়ারা এলাকায় প্রায় তিন বছর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও সিরাজগঞ্জ জেলার বাসিন্দা ওয়াদুদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি সাদিয়া টেক্সটাইল মিলস্ নামে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো বৃদ্ধি করা হয়। এক পর্যায়ে পাশের খাল ভরাট করে দখলে নিয়ে প্রতিষ্ঠানের জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হয়। ফলে খালের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গোড়ান, বানিয়ারা, সাটিয়াচড়া ও কাটরা গ্রামের প্রায় ৮ হাজার একর দু-তিন ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সরেজমিনে জানা গেছে, গোড়ান, বানিয়ারা, সাটিয়াচড়া ও কাটরা গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের মূল পেশা কৃষি। কৃষি কাজের মাধ্যমেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এসব ফসলি জমিতে প্রতি বছরই দু-তিন ধরনের ফসল ফলায় গ্রামবাসী। ওইসব ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ ছিল ওই খালটি। খাল ভরাট ও দখল করে তাদের জীবন-জীবিকার পথে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সাদিয়া টেক্সটাইল মিলস্। মহাসড়ক সংলগ্ন ওই ফসলি জমিগুলো দেখে মনে হয় এখনো বর্ষা মৌসুম। পানি শুকানোর কোন লক্ষণই নেই। সাদিয়া টেক্সটাইল মিলসের মালিক ওয়াদুদ চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ প্রতিষ্ঠানের মালিক না। এর মালিক সঞ্জিতা চৌধুরী। তিনি এখন দেশের বাইরে আছেন। আপনি কি বিষয়ে বলবেন আমাকে বলতে পারেন। তিনি বলেন, আমরা কোন জায়গা দখল করিনি, সরকারী খাল দখল করার প্রশ্নই আসে না। মহাসড়ক চারলেন হচ্ছে, তার কারণে পানি বের হতে পারছে না। এতে আমাদের কোন হাত নেই। মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুমানা ইয়াসমিন বলেন, সাদিয়া টেক্সটাইল মিলস্ যদি সরকারী খাল দখল করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। কাউকে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। কোন সরকারী জমি দখল করতে দেব না। আর যে সকল ভুক্তভোগী কৃষক রয়েছে তারা যেন ঠিকভাবে চাষাবাদ করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে। এ ব্যাপারে কোম্পানির লোকদের সাথে কথা বলতে গেলে কোম্পানির প্রধান ফটক বন্ধ করে রাখা হয়। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ওখানে কর্মরত কেউ নিজ পরিচয়ে দায়িত্ব নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে যারা কর্মরত তাদের একজনের সাথে কথা বলার সুযোগ হলেও সাংবাদিক পরিচয় জানতে পেরে সটকে পড়েন।
×