ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম সপ্তাহ

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৮ জানুয়ারি ২০১৭

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে  ট্রাম্পের প্রথম সপ্তাহ

যুক্তরাষ্ট্রে যে কোন প্রেসিডেন্ট তার রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শনে একতরফা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আইন তৈরিতে অনেক সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রেসিডেন্টের এক কলমের খোঁচায় সরকারের নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তনের সূচনা ঘটাতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের এই ক্ষমতা প্রয়োগে এক মুহূর্তের জন্যও সময় নষ্ট করেননি। নির্বাচনী প্রচারের সময় দেয়া বড় প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একের পর এক নির্দেশনা জারি করেন তিনি। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল ॥ ২০১৫ সালের জুন মাসে প্রেসিডেন্ট হিসাবে প্রার্থিতা ঘোষণার দিনই ট্রাম্প বলেছিলেন, তার অন্যতম লক্ষ্য হবে মেক্সিকো থেকে অবৈধ অভিবাসন ঠেকানো। একের পর এক নির্বাচনী প্রচারাভিযানে তিনি বলেছেন, দক্ষিণের সীমান্তে ‘শক্ত, উঁচু ও সুন্দর’ দেয়াল গড়বেন। ক্ষমতা নিয়েই তিনি সে বিষয়ে এক নির্দেশনায় সই করেছেন। এতে দুই হাজার মাইল দেয়াল নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। অতিরিক্ত ১০ হাজার অভিবাসন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। এছাড়া লস এঞ্জেলেস বা নিউইয়র্কের মতো যে সব কসমোপলিটান নগরীতে অবৈধ অভিবাসীরা আশ্রয় পাচ্ছে সেসব নগরীর জন্য ফেডারেল সহায়তা কমিয়ে দেয়া হবে। ট্রাম্প এখনও দাবি করছেন দেয়াল তোলার খরচ তিনি মেক্সিকোর কাছ থেকে আদায় করবেন। পাইপলাইন নির্মাণ আদেশ ॥ ক্ষমতা গ্রহণের দ্বিতীয় দিনে ট্রাম্প দুটো নির্দেশে সই করেন। নির্দেশগুলো ছিল দুটো বহু বিতর্কিত জ্বালানি পাইপলাইন তৈরির কাজ এগিয়ে নেয়া। এর মধ্যে একটি হলো কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি শোধনাগারে জ্বালানি তেল আনার জন্য ১ হাজার ১৭৯ মাইল একটি পাইপলাইন নির্মাণ। পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগের কারণে ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট ওবামা সেটি স্থগিত করেছিলেন। নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের আদিবাসীরা আন্দোলন করায় অন্য পাইপলাইনটির কাজও গত বছর বন্ধ ছিল। তাদের কথা ছিল এই পাইপলাইন নির্মাণে তাদের জীবন জীবিকা ঐতিহ্য নষ্ট হবে। কিন্তু ট্রাম্প পরিবেশ বা ঐতিহ্য কোনোটাই আমলে নেননি। ওবামাকেয়ারে হস্তক্ষেপ ॥ বহুল আলোচিত ওবামাকেয়ারের কার্যকারিতা স্থগিত করতে স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতি দীর্ঘ নির্দেশনা জারি করেছেন ট্রাম্প। দরিদ্র মানুষের জন্য সহজ শর্তে যে স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা করেছিলেন বারাক ওবামা সেগুলোতে সরকারী ভর্তুকি দেয়ার বিষয়ে এতে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। ভর্তুকি ছাড় করার বেলায় ‘দেরি, সাবধান হওয়া বা বাতিল’ করার সুযোগ খুঁজতে বলা হয়েছে। গর্ভপাতে সাহায্য নিষিদ্ধ ॥ সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান ১৯৮৪ সালে প্রথমবার এক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন যে বিশ্বের যে কোন জায়গায় গর্ভপাতে সহায়তা করার কর্মসূচীতে সাহায্য দেয়া যাবে না। এই নির্দেশনা যুক্তরাষ্ট্রে সবসময় একটি বিতর্কিত ইস্যু। ফেডারেল সরকারের নিয়োগ বন্ধ ॥ নতুন করে কেন্দ্রীয় সরকারের সব নিয়োগ নিষিদ্ধ করেছেন ট্রাম্প। তবে ব্যতিক্রম থাকবে সেনাবাহিনী। তিনি সরকারের ঋণ এবং আয়তনের পরিসর কমিয়ে আনতে চাইছেন। নির্বাচনী প্রচারকালে তিনি বার বার আমলাতন্ত্রকে আক্রমণ করেছেন। ট্রান্স প্যাসিফিক পার্টনারশিপ বা টিপিপি চুক্তি থেকে প্রত্যাহার ॥ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় কয়েকটি দেশের সঙ্গে এই বাণিজ্য চুক্তিকে খুবই গুরুত্ব দিয়েছিল ওবামার সরকার। কংগ্রেস অবশ্য একে এখনও চুক্তিটি অনুমোদন করেনি। কিন্তু ট্রাম্প এখন এই চুক্তিকে ছুঁড়ে ফেললেন।
×