ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সুপ্রীমকোর্ট রুলিংয়ের প্রতিক্রিয়া ॥ ইইউ থেকে পূর্ণ বিচ্ছেদে বাধা দেবেন করবিন ও স্টারজন

ব্রেক্সিট এগিয়ে আনছেন মে

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ২৬ জানুয়ারি ২০১৭

ব্রেক্সিট এগিয়ে আনছেন মে

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে তার ব্রেক্সিট সময়সূচী এগিয়ে এনে সুপ্রীমকোর্টের রুলিংয়ের প্রতি জবাব দেবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত পার্লামেন্ট সদস্যগণ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে বলে কোর্ট রায় দেয়। জনগণের ইচ্ছাকে ‘নস্যাত’ করতে দেয়া হবে না বলে মন্ত্রীরা সঙ্কল্প ব্যক্ত করার মধ্যে ঐ সমসয়সূচী বদলের তথ্য প্রকাশ পায়। খবর টেলিগ্রাফ ও গার্ডিয়ান অনলাইনের। বিভিন্ন সূত্রে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী তার ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন উইথ ড্রয়াল বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করে সুপ্রীমকোর্টে সরকারী পক্ষের পরাজিত হওয়ার জবাব দেবেন। সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীমকোর্টের বিচারকরা ১১-৩ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় রায় দেন যে, যুক্তরাজ্যকে লিসবন চুক্তির ৫০ অনুচ্ছেদের আওতায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ত্যাগের জন্য আলোচনার নোটিস দেয়ার সিদ্ধান্তে পার্লামেন্ট সদস্যদের অবশ্যই অনুমোদন থাকতে হবে। এরপর ব্রেক্সিট সেক্রেটারি ডেভিড ডেভিস জানান যে, ৫০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কিত খসড়া আইন শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। তবে আদালত আরও বলেন, ৫০ অনুচ্ছেদ মোতাবেক ইইউ ত্যাগের প্রক্রিয়া শুরু করতে পার্লামেন্টে কোন আকারে বিল আনতে হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে দেয়া বিচারকদের কাজ নয়। রায় ঘোষণা করে সুপ্রীম কোর্টের প্রেসিডেন্ট লর্ড নিউবার্গার বলেন, ৫০(২) অনুচ্ছেদের আওতায় কোন নোটিস নিঃসন্দেহে বাস্তবে খুবই সংক্ষিপ্ত হতে পারে, কিন্তু তা এর বিশাল তাৎপর্যকে ক্ষুণœœ করবে না। সুপ্রীমকোর্ট আরও রুলিং দেয় যে, স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড ও ওয়েলসের ক্ষমতাপ্রাপ্ত এসেম্বলিগুলোর সম্মতির জন্য অপেক্ষা করার কোন প্রয়োজনই সরকারের নেই। মে এখন প্রত্যাশিত সময়ের কয়েক সপ্তাহ আগে মার্চের মাঝামাঝি ৫০ অনুচ্ছেদের আওতায় নোটিস দিতে চান। পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ ব্রাসেলসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করতে ভোট দেবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। মঙ্গলবার সুপ্রীমকোর্টের রুলিং দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ডেভিড ডেভিস কমন্স সভায় ভাষণ দিয়ে ‘ফিরে যাওয়ার কোন উপায় নেই’ বলে সতর্ক করে দেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, বিচারকদের রুলিং দু’বছরের আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে মের সময়সূচীকে পথভ্রষ্ট করবে না। তিনি বলেন, ব্রেক্সিটকে ‘ব্যর্থ বা বিলম্ব’ করতে ৫০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আলোচনা শুরু করার আইনকে ব্যবহার করা রাজনীতিকদের অবশ্যই উচিত নয়। লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন এবং স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজন টেরেসা মের ইইউ থেকে ব্রিটেনের সম্পূর্ণভাবে সরে আসার পরিকল্পনা দুর্বল করার লক্ষ্যে কাজ করছেন। করবিন ব্রেক্সিটের পর ইউরোপীয় একক বাজারে যুক্তরাজ্যের পূর্ণ প্রবেশাধিকার বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছেন। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) জানায়, দলটি ব্রেক্সিট সম্পূর্ণভাবে রোধ করার এক প্রস্তাবসহ ৫০টি সংশোধনী উপস্থাপন করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। আর লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা দ্বিতীয় বারের মতো গণভোট চাইবেন এবং ইইউ ত্যাগ করার আলোচনা শুরু করার বিরোধিতা করবেন। ইউরোপপন্থী প্রায় ডজনখানেক কনজারভেটিভ এমপি সরকারকে এর আলোচনার কৌশল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশে বাধ্য করার চেষ্টায় লেবার ও এসএনপির সঙ্গে যোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ডেভিস এমপিদে বলেন, গত বছর ২৩ জুনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেছে। তিনি বলেন, মার্চের শেষ নাগাদ ৫০ অনুচ্ছেদ মোতাবেক পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আমাদের সময়সূচী এখনও বহাল রয়েছে। ঐ সময়সূচী যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ জুড়ে নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের মূল্যবান নিশ্চয়তা দিয়েছে। আমাদের ইউরোপীয় অংশীদাররা এটি বুঝতে পারেন এবং এটি আগামীতে আলোচনার পরিকল্পনা করার এক কাঠামো প্রদান করবে। সরকার এমপিদে পর্যাপ্ত সময় দিতে বিতর্কের জন্য আগামী সপ্তাহে সমস্ত দিন এবং পরবর্তী সপ্তাহে ২১ ঘণ্টা বরাদ্দ করে রেখেছে। এমপিরা এরপর আগামী সপ্তাহের সোম থেকে বুধবার পর্যন্ত সমগ্র কক্ষ কমিটিতে বিলটি ও এর সব সংশোধনী নিয়ে বিতর্ক করবেন। প্রতিদিন সাত ঘণ্টা বিতর্ক চলবে।
×