স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলার সাক্ষীকে ভয়ভীতি ও খুন-জখমের হুমকিদাতা সেই দুই সাংবাদিককে নিয়ে রবিবার রাতে মতবিনিময় সভা করেছেন প্রশাসন। এ ঘটনার প্রতিবাদে প্রথম শ্রেণীর গণমাধ্যমের প্রগতিশীল সাংবাদিকরা সভা বর্জন করেছে। শুধু তাই নয়; বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার দিনভর শহরের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনাটি বৃহত্তর বরিশালের পটুয়াখালী জেলার।
তবে একটি সূত্র দাবি করেছে, দুই সাংবাদিককে বাঁচাতে ডিসি ও এসপিসহ আওয়ামী লীগের দুই নেতা এবং কতিপয় সাংবাদিক ঐক্যের নামে এই বিবেক বর্জিত তৎপরতা শুরু করেছে। সূত্রমতে, চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারধীন পটুয়াখালীর ইটবাড়িয়ার মামলার অন্যতম সাক্ষী বীরাঙ্গনা মনোয়ারা বেগমের ইটবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিক জাফর খান ও জাকির হোসেন বিচারধীন মামলার পাঁচ রাজাকারের পক্ষে সাক্ষী দিতে দুই লাখ টাকা ও বাড়ি করে দেয়ার প্রলোভন দেখায়। এতে বীরাঙ্গনা মনোয়ারা সম্মত না হলে প্রকাশ্যে তাকে খুন, জখম ও গুমের হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনার সদর থানায় ২১ অক্টোবর সাধারণ ডায়েরি করেন মনোয়ারা বেগম। যা বর্তমানে অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্তাধীন রয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় শহরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে গা-ঢাকা দেয় দুই সাংবাদিক। এরপর দুই সাংবাদিককে বাঁচাতে তৎপর হয়ে ওঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আলমগীর ও পৌর মেয়র ডাঃ শফিকুল ইসলাম। এ কাজের প্রক্রিয়া সহজ করতে জেলা প্রশাসক একেএম শামিমুল হক সিদ্দিকী ও পুলিশ সুপার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদকে নিয়ে গোপন বৈঠক করে সাংবাদিক ঐক্যের ডাক দেয়া হয়। তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার রাতে মতবিনিময়ের নামে অভিযুক্ত দুই সাংবাদিকের নিয়ে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে রাতে বৈঠক করেন ডিসি ও এসপি। অবশ্য এ সভায় এসপির পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। এতে প্রগতিশীল ধারার ক্ষুব্ধ সাংবাদিকদের অংশ ক্ষিপ্ত হয়ে ওই অনুষ্ঠান বর্জন করে।
শরণখোলায় সড়কে ভয়াবহ ফাটল ॥ আতঙ্ক
বাবুল সরদার, বাগেরহাট ॥ শরণখোলা-সাইনবোর্ড আঞ্চলিক মহাসড়কের আধা কিলোমিটার সড়কের মাঝ বরাবর ফাটল ধরে দেবে গেছে। শরণখোলা উপজেলার লাকুড়তলা বাজার সংলগ্ন খাল থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সোমবার শেষরাতের দিকে শরণখোলা অংশের লাকুড়তলা এলাকায় আকস্মিকভাবে ভয়াবহ এ ফাটলের সৃষ্টি হয়। এতে রায়েন্দা-খুড়িয়াখালী সড়কে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যে কোন মুহূর্তে ব্যাপক এলাকা জুড়ে ধসে যাওয়ার আশঙ্কায় সড়কের দু’পাশের লাকুড়তলা ও উত্তর কদমতলা গ্রামের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানায়, স্থানীয় ঠিকাদার গোলাম মোস্তফা মধু রাজেশ্বর গ্রামে বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের সড়কে বালু দেয়ার জন্য সড়কের পাশের সরু খালে ১০-১২ দিন আগে ড্রেজার স্থাপন করে অনবরত বালু উত্তোলন করেন। তার সড়কে বালু দেয়া শেষ হলে স্থানীয় বাসিন্দা ইলিয়াস খান, হেলাল খান ও মিজান ফরাজী তাদের বাড়ির কাজের জন্য ওই একই এলাকা থেকে আবারও বালু উত্তোলন শুরু করেন।