ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়াকে বিপর্যস্ত ভাবছেন না হেসন

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২ ডিসেম্বর ২০১৬

অস্ট্রেলিয়াকে বিপর্যস্ত ভাবছেন না হেসন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কঠিন সময় পার করছেন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। এমন বিধ্বস্ত অবস্থায় শেষ কবে ছিল দলটি, কিংবা আদৌ ছিল কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কি বিশৃঙ্খল হয়ে গেছে মহাপরাক্রমশালী ক্রিকেট শক্তিরা? সম্প্রতিই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়ানডে সিরিজে লজ্জাজনক হার দেখে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হওয়া এবং ঘরের মাটিতে আবার তাদেরই বিরুদ্ধে ২-১ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হার এমন প্রশ্নের সম্মুখীন করে দিয়েছে তাদের। এবার ঘরের মাটিতেই নিজেদের ফিরে পাওয়ার চ্যালেঞ্জ স্টিভেন স্মিথের দলটির। তবে প্রতিপক্ষ এবার আরও কঠিন শত্রু। ট্রান্স-তাসমান চরম প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু রবিবার। কিউই কোচ মাইক হেসন অবশ্য কোনভাবেই মানতে নারাজ যে বিপর্যস্ত আর ক্ষণভঙ্গুর দলে পরিণত হয়েছে অসিরা। এ কারণে তিনি মনে করছেন তার দলের জন্যই উল্টো অগ্নিপরীক্ষা অপেক্ষা করছে। সাম্প্রতিক ব্যর্থতায় অসিরা একেবারে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াতেও (সিএ) বড় পরিবর্তন এসেছে। এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তৃতীয় ও শেষ টেস্টে একসঙ্গে ৫টি পরিবর্তন এসেছে অসি দলে। এর পেছনে যথেষ্ট কারণ আছে। আগস্টে শ্রীলঙ্কা সফরে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফেরা দলটি প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে শোচনীয়ভাবে ৫ ওয়ানডে ম্যাচেই হেরে ঘরে ফেরে। এরপর তাদের ঘরের মাটিতেও টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে শেষ টেস্টে জিতে কোনক্রমে সেই লজ্জা ঠেকান অস্ট্রেলিয়া সিরিজ হারে ২-১ ব্যবধানে। সবাই ভাবছেন রবিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজেও বিপর্যস্ত থাকবে অসিরাই। কারণ সবেমাত্র সফরকারী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে কিউইরা। কিন্তু এরপরও ঘরের মাটিতে অসিদের ওয়ানডে দল হিসেবে এখন পর্যন্ত বিশ্বসেরা ভাবছেন নিউজিল্যান্ড কোচ হেসন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি তাদের ওয়ানডে দলটা টেস্ট স্কোয়াডের চেয়ে অনেক বেশি থিতু ও যথেষ্ট পরিণত। ওয়ানডে দল নৈপুণ্যে অনেকখানিই ধারাবাহিক। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজটা বাদ দিয়ে বিবেচনা করলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। একটি সিরিজ কোন দলের বাজে কাটতেই পারে। ভুলে গেলে চলবে না ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলার জন্যই তারা বেশ কয়েক বছর ধরে ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল। এখন পর্যন্ত সেটা ধরে রেখেছে গত ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতা অসিরা। সুতরাং আমি কখনও মনে করি না যে টেস্টে বিপর্যস্ত দলটির পরিস্থিতি সমান থাকবে ওয়ানডেতেও।’ অবশ্য এই সিরিজ জিততে পারলে নিউজিল্যান্ডের মোক্ষম সুযোগ ওয়ানডের এক নম্বর দলে পরিণত হওয়ার। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে ১১৮ রেটিং নিয়ে শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া, ১১৬ নিয়ে দুই নম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা আর ১১২ রেটিং নিয়ে তিনে নিউজিল্যান্ড। অসিদের নিচে নামাতে হলে তিন ম্যাচের সিরিজের সবগুলো জিততে হবে নিউজিল্যান্ডকে। তবে হেসন বলেন, ‘আমরা সর্বশেষ কয়েকবার চ্যাপেল-হ্যাডলি শিরোপা জিতেছি। শুধু সেটা নিজেদের দখলে থাকাটাই বেশি জরুরী। অস্ট্রেলিয়া আমাদের বড় ভাই এবং তাদের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয় মহাগুরুত্বপূর্ণ অর্জন। আর সেটার কারণে যদি র‌্যাঙ্কিংও কিছুটা বাড়ে তা হবে দারুণ ব্যাপার।’ অসিদের মোকাবেলায় দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এনেছে নিউজিল্যান্ড। দুটি একেবারে আনকোরা মুখের মধ্যে আছেন পেসার লোকি ফার্গুসন। দীর্ঘদিন পর ফিরেছেন স্পিনার টড এ্যাস্টল। তবে ফার্গুসনকে নিয়েই অসিদের চ্যালেঞ্জে ফেলতে চায় কিউইরা। কারণ দারুণ গতিধর এ ২৫ বছর বয়সী পেসার নিয়মিতভাবেই ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল ছোড়েন। তার সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৫০ কিলোমিটারেরও ওপরে। তাকে নিয়ে দারুণ কিছুর স্বপ্ন দেখছেন তিনি। ইনজুরির কারণে এ সফরে নেই পেসার এডাম মিলনে, মিচেল ম্যাক্লেনাঘানম জর্জ ওয়ার্কার ও অলরাউন্ডার কোরি এ্যান্ডারসন। রবিবার সিডনিতে প্রথম ওয়ানডে, ৬ ডিসেম্বর ক্যানবেরায় দ্বিতীয়টি এবং ৯ ডিসেম্বর মেলবোর্নে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে।
×