ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভোট পুনর্গণনা নিয়ে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী শামিল হওয়ায় নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের দুঃখ প্রকাশ

ভেস্তে গেল ট্রাম্প-হিলারি সমঝোতা

প্রকাশিত: ০৩:২২, ২৯ নভেম্বর ২০১৬

ভেস্তে গেল ট্রাম্প-হিলারি সমঝোতা

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও হিলারি ক্লিনটনের কলহের অবসান ঘটিয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা গত সপ্তাহান্তে ভেঙ্গে পড়েছে বলে মনে হয়। সদ্য সমাপ্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট পুনর্গণনার প্রয়াসে হিলারি যোগ দিলে মিলনের উদ্যোগ ভেস্তে যায়। রবিবার কয়েক দফা টুইটে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হিলারির সমালোচনা করেন। তাদের তিক্ত নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর বোঝাপড়ায় পৌঁছানোর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। খবর বিবিসি, ফক্সনিউজ ও ইয়াহু নিউজের। তিন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে ৮ নবেম্বরের নির্বাচনে দেয়া ভোট পুনর্গণনা করতে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করার চেষ্টায় হিলারি যোগ দেয়ায় ট্রাম্প দুঃখ প্রকাশ করেন। ট্রাম্প এ কথাও দাবি করেন যে, চলতি মাসের নির্বাচনে লাখ লাখ লোক অবৈধভাবে ভোট দিয়েছিল এবং এ ভোট বাদ দেয়া হলে তিনিই জনগণের ভোট জয় করতেন। সংবাদপত্র বিষয়টি নিয়ে পক্ষাপাতিত্বের সঙ্গে সংবাদ পরিবেশন করছে বলেও তিনি দাবি করেন। ট্রাম্প নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী হিলারি দেয়া ভাষণের অংশ বিশেষ টুইটে প্রচার করেন। এ ভাষণে হিলারি তার সমর্থকদের বলেছিলেন যে, ট্রাম্প যে আমাদের প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন, সেটিই অবশ্যই তাদের মেনে নিতে হবে। ট্রাম্প হিলারির প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের কিছু কিছু অংশও তুলে ধরেন। এতে হিলারি রিপাবলিকান প্রার্থী নির্বাচন দিবসের রায় মেনে নেবেন কিনা তা আগাম জানাতে অস্বীকার করায় তার সমালোচনা করেছিলেন। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, যে যদি জনভোটের নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারিত হতো, তবে তার পক্ষে জয়ী হওয়া আরও অনেক সহজ হতো, কারণ তিনি ইলেক্টোরেট ভোটের দিকে না তাকিয়ে সামগ্রিক ভোটের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রচার কৌশল বদলে নিতেন। নির্বাচনে এত ব্যাপক ভোট কারচুপি, অবৈধ ভোটদান বা হ্যাকিংয়ের আভাস পাওয়া যায় না, যাতে নির্বাচন ফলাফল কোন না কোনভাবে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটতে পারে। কারচুপির প্রমাণের অভাব থেকে মনে হয়, ভোট পুনর্গণনার পরও ট্রাম্পের বিজয়ী হিসেবে টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্পের টুইট প্রচারের এক দিন আগে হিলারি ফর আমেরিকা গ্রুপের এক আইনজীবী জানান, হিলারি গ্রীন পার্টির প্রার্থী জির স্টেইনের ভোট পুনর্গণনা করানোর চেষ্টায় যোগ দেবেন। এ্যাটর্নি মার্ক ইলিয়াস বলেন, ভোট পুনর্গণনা প্রক্রিয়ায় যাতে সব পক্ষের প্রতি ন্যায় বিচার করা হয় হিলারি তা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছেন। স্টেইন মিশিগান, পেনসিল ভেনিয়া ও উইসকনসিনে ভোট পুনঃগণনা প্রয়াসে অন্তত ৫৪ লাখ ডলার সংগ্রহ করেছেন। এসব অঙ্গরাজ্যেই ছিল ট্রাম্পের জয়ের চাবিকাঠি। স্টেইন উইসকনসিনে ভোট পুনর্গণনার জন্য শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়ে প্রক্রিয়ার সূচনা করেন। স্টেইনের উদ্যোগের ফলে টাম্পের ২৭০ এরও বেশি ইলেক্টোরাল ভোট পাওয়ার ফলাফলও পাল্টে যেতে পারে। স্টেইন জাতীয় ভোটের শতকরা মাত্র ১ ভাগ পান। এ কারণেই ট্রাম্প স্টেইনের প্রয়াসকে তহবিল সংগ্রহের কূটকৌশল বলে অভিহিত করেন। ট্রাম্পের অন্তর্বর্তী টিমের সিনিয়র উপদেষ্টা কেলিয়ান কনওয়ে সিএনএনকে বলেন, হিলারি নির্বাচনের দিন শেষে রাতে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানান এবং তার কাছে পরাজয় স্বীকার করেন। যেখানে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিলারি ক্লিনটন এবং বারাক ও মিশেল ওবামার প্রতি অবিশ্বাস্য সহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন, সেখানে এখন এটিকে দীর্ঘয়িত করার ধারণা বিশ্বাসের অতীত। এদিকে, কনওয়ে ২০০৯-১৩ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারির এক প্রাইভেট ই-মেইল সার্ভার ব্যবহার নিয়ে আরও তদন্ত করার সম্ভাবনা নাকচ করে দিতে অস্বীকার করেন। কনওয়ে স্পষ্ট করেছেন যে, ট্রাম্প কেবল এ কথাই বলেছিলেন যে, তিনি ই-মেইল নিয়ে আরেকবার তদন্তের সম্ভাবনা নাকচ করছেন না। কারণ নতুন সাক্ষ্য প্রমাণের খোঁজ পাওয়া যেতে পাড়ে এবং তিনি ফেডারেল ও কংগ্রেসনাল তদন্তকারীদের কর্র্তৃত্ব ক্ষুণœ করতে চান না। এফবিআই চলতি গ্রীষ্মকালে হিলারির প্রাইভেট সার্ভার ব্যবহার নিয়ে এক বছরের তদন্ত শেষ করে। গেয়েন্দা সংস্থাটি বলেছে, হিলারি এতে ‘অত্যন্ত তাচ্ছিল্যের’ পরিচয় দেন এবং কোন কোন ই-মেইলে গোপনীয় তথ্য ছিল।
×